সুরা আল-যুমার(৩৯) আয়াত ১৮ যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে , অতঃপর যা উত্তম , তার অনুসরন করে। তাদেরকেই আল্লাহ পথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।
Sunday, May 16, 2021
কোরআনই একমাত্র সত্য , যাতে কোন সন্দেহ নেই।
" আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। ৬:১১৬"
ইসলাম ও মানবতা
* তোমার পিতা মাতাকে সম্মান করবে , যতদিন তারা বেচে থাকবে। তাদের সাথে রূঢ় ব্যবহার করবে না বা অযত্ন করবে না।
* তোমরা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করবে ও কোন মিথ্যা বলবে না।
* তোমরা আত্মীয় , এতিম ও গরিবদের সাহায্য করবে।
* নিজ সন্তানকে দারিদ্রতার কারনে হত্যা করবে না।
*তোমরা ব্যভিচার করবে না , কারন এটা পাপ।
*তোমরা কাউকে হত্যা করবেনা ।
* তোমরা এতিমদের সম্পদ আত্মসাত বা তস্রুপ করবে না।
*ব্যবসায়ের সময় পরিমান ও ওজনে সঠিক থাকবে।
*ঘুষ দেয়া নেয়া করবে না।
* সাক্ষ্য দেয়ার সময় সম্পুর্নরূপে সৎ থাকবে , এমনকি নিজের , বাপ মা আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে গেলে ও।
*যা কিছু করার প্রতিজ্ঞা করবে বা দায়বদ্ধ থাকবে , তা পুরপুরিভাবে পালন করবে এবং বিনম্র হবে।
*উদ্ধত হবে না বা গর্বের সাথে হাটবে না। আল্লাহ দম্ভকারীদের পছন্দ করেন না।
* রাগ করবে না বা উচ্চ কর্কশ স্বরে কথা বলবেনা। নিকৃষ্টতম স্বর হলো , গাধার আওয়াজ।
এরুপ আরো অনেক বিধি নিষেধের কথা বলা আছে কোরানে। দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা মুসলমান রা আল্লাহর এই সকল নির্দেশ পালনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সত্যিকারের ইসলাম প্রতষ্ঠার জন্য মানুষকে উড্বুদ্ধ না করে , বেশি বেশি নামাজ পড়ার জন্য বলে মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করছি।
মানববাদীদের কাছে আবেদন , কোরান পড়ে এর থেকেও মানববাদী কোন ধারা জানলে আমাদেরকে জানান।
Thursday, May 13, 2021
নামাজ
একজন লিখেছেন- পবিত্র কুরআন এ নামাজ ও এর সময় সম্পর্কে যতটুকু জানা যায়,তাতে প্রচলিত রাকাআত কিংবা কিভাবে এটা শুরু থেকে শেষ হবে তা উল্লেখ করে বিস্তারিত লেখা নাই।শুক্রবার এ সমাবেত নামাজ এর কথা নারী পুরুষের উপর বর্তানো দেখি,একসাথে নামাজ পড়া / আর নামাজ কায়েম করা যাই বলি না কেন আসলে এটার পবিত্র কোরআনের আলোকে সমাধানের উপায় জানা থাকলে আমাকে সাহায্য করুন।প্লিজ
আমার উত্তর-
আমি রাসুল নই বা আমার কাছে আল্লাহর ওহি আসেনা। কোরানের আলোকে আমি যা বুঝি সেটাই আপনাকে জানাচ্ছি।
সর্ব প্রথমে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি কোরান আল্লাহর প্রেরিত গ্রন্থ , যা স্বয়ংসম্পুর্ন এবং আল্লাহভীরুদের (মুত্তাকি) জন্য বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ পরকালে মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশ কোরানে দেয়া আছে। যা কোরানে নেই তা মুসলমানের জন্য ধর্মীয় নির্দেশ নয়।
প্রচলিত আনুষ্ঠানিক নামাজ (সালাত) , রাকায়াত, রুকু , সিজদাহ এবং এগুলোর বিবরন কোরানে নেই। এর অর্থ দাড়ায় , এগুলো মানুষের বানানো। এগুলো ধর্মের সরাসরি অংশ নয়। এগুলোর কোন গুরুত্ব কি আছে? আমার মনে হয় এগুলোর পরোক্ষ গুরুত্ব আছে। যদি আমরা এই নামাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাকে স্মরন করার জন্য ও তার কাছে সাহায্যের প্রার্থনার জন্য , মন্দ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার জন্য , আল্লাহর গুনগান করার জন্য পড়ে থাকি।
ভিক্ষুকরা যার যার মতো করে ভিক্ষা চায়। ভিক্ষার যেমন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই তেমনি প্রার্থনার ও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। প্রতিটি ধর্মের মানুষের প্রার্থনার নিয়ম ভিন্ন। এগুলোকে নুসুখ বলে। মুসলমানরা নামাজ পড়ে , হিন্দুরা পুজা করে , খৃষ্টানরা চার্চে ও ইহুদিরা সিনাগগে যেয়ে প্রার্থনা করে। আমি নামাজ পড়াকে নুসুখ হিসাবে দেখি। যে ভাবে যার ভাল লাগবে , সেভাবেই সে নুসুখ পালন করবে। এর কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই।
[5:48 আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে এক উম্মত করে দিতেন, কিন্তু এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে ধর্ম দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। অতএব, দৌড়ে কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন কর। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অতঃপর তিনি অবহিত করবেন সে বিষয়, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে।]
কোরানে যেসকল আয়াতে বলা হয়েছে পরকালে যাদের কোন ভয় নেই এবং দু:খ করা লাগবেনা , সেই সকল আয়াতের একটিতেও নামাজ পড়ার কথা বলা নেই।
যাকাতের পরিমান
মুত্তাকি কারা? তারাই যারা তাদের রিজিক থেকে ব্যায় করে। (وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ)
কতটুকু ব্যায় করবে?
2:219 وَيَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلِ الْعَفْوَ ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ
আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও, নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা বাঁচে তাই খরচ করবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্দেশ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পার।
এর থেকে সুস্পষ্ট বর্ণনা আর কি হতে পারে? আমরা যারা শুধু কোরান মেনে চলি বলে দাবী করি , তারা এখনও হাদিসের ভূত মাথা থেকে ঝাড়তে পারিনি। যেকারনে নামাজ রোজা হজ্জ যাকাত এর নিয়ম কোরান থেকে যার যার মতো খুজে বের করার চেষ্টা করি এবং যার যার মতো খুজেও বের করি। অনেকটা নিজের মাপে জামা না বানিয়ে যতটুকু কাপড় আছে তা দিয়েই জামা বানানোর মতো, তা সে জামা গায়ে লাগুক বা না লাগুক।
আগের পোস্টে যাকাত নিয়ে অনেক আলোচনা ও বিশ্লেষন পড়লাম। কোরান তো সহজ , আল্লাহ তো পরিস্কার বলে দিতেই পারতেন যাকাত 20% বা 2.5%। উনি বলেন নি , কারন উনি পরিস্কার বলেই দিয়েছেন নিজেদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যায় কর। এখন কেউ আমরা গনীমতের হুকুমকে যাকাতের হুকুম বানাচ্ছি, কেউ আনফাল , কেঊ সাদাকা..... কারন হাদিসের ভূত আমাদের মাথায় আছে। ইহুদিদের গরু কুরবানির কথা মনে আছে? যেখানে তারা যেকোন গরু কুরবানি করলেই পারত , তা না গরুর রঙ কি হবে , বয়স কত, চাষের যোগ্য কিনা ইত্যাদি প্রশ্ন করে বিষয়টাকে কিভাবে জটিল করে তুলেছিল।
যাকাতের বিধান
একজন প্রশ্ন করেছেন - যাকাতের বিধান কী?
উত্তর - আমরা যাকাত বা যাকাতের বিধান বলতে যা বুঝি , তা মানুষের বানানো। এর কিছুই কোরানে নেই। 'আতু যাকাত' অর্থ যাকাত দেয়া নয়। প্রকৃত অর্থ - নিজেকে পরিশুদ্ধ করা। কতটুকু দান করবেন বা অন্যকে দেবেন? নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। এই পরিমান ঠিক করবেন আপনি নিজে, কারন আপ্নার কতটুকু প্রয়োজন তা আপনার চেয়ে ভাল আর কেউ জানেনা। এক্টা জিনিষ মাথায় রাখবেন , এই দানের পুরস্কার আল্লাহর কাছে জমা থাকবে , যা তিনি পরকালে দেবেন। আরো একটি জিনিষ স্মরন করিয়ে দেই - পরকালের আশায় সব কিছু দান করে নি:স্ব হয়ে অপরের কাছে হাত পাততে আল্লাহ নিরুৎসাহিত করেছেন।
রসূল
যে বা যারা আল্লাহর বাণী প্রচার করে , সে বা তারা রসূল। সেই অর্থে আমি বা আমরা যারাই কোরানের বাণী প্রচার করি , আমরা সকলেই রসূল। এখন আমি যদি আপনাকে কোরানের আয়াত উদ্ধৃতি দিয়ে বলি মিথ্যা সাক্ষী দেবেননা ,ওজনে বা মাপে কম দেবেননা এবং আমার এই নির্দেশ যদি আপনি না মানেন বা মানতে অস্বীকার করেন , তাহলে আপনি কাফের। আর যদি বলি আমাকে 1000 টাকা দেন আমার দরকার। আপনি যদি টাকা দিতে অস্বীকার করেন , তাহলেও আপনি কাফের নন আমার নির্দেশে টাকা না দেওয়ার জন্য। বুঝা গেল কিছু?
অপরাধের শাস্তি
কোরানে কি পৃথিবীতে যত রকম অপরাধ সংঘটিত হয় , সবের শাস্তির কথা উল্লেখ আছে? নেই। যেগুলোর উল্লেখ নেই সেগুলোর শাস্তি সমাজ /দেশ নির্ধারন করবে , এর সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক নেই। ধর্মের সাথে সম্পর্ক যেগুলো কোরানে আছে। রসূলের নামে প্রচলিত মিথ্যা হাদিসের মাধ্যমে পাওয়া শাস্তি মানুন আপত্তি নেই , আপত্তি তখনই যখন এগুলোকে ধর্মের অংশ বানিয়ে ফেলা হয়। রসূলের ধর্মীয় বিধান দেয়ার ক্ষমতা নেই। পিরিয়ড। হাদিস গ্রন্থগুলিতেও সব অপরাধের শাস্তির বর্ণনা পাবেন না। শেষ মেষ সমাজ/ দেশকেই শাস্তি নির্ধারন করতে হবে। যেমন ধরুন red light violation বা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো বা মানুষ চাপা দিয়ে মেরে ফেলার শাস্তি কী? হাদিসগ্রন্থ থেকে এর উত্তর দেখান।
প্রশ্নোত্তর
একজন প্রশ্ন করেছেন -
ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
৪:৬৫ আয়াতে বিদ্যমান শাজারা ( شَجَرَ ) শব্দটির অনুবাদ করা হয়েছে বিবাদ/বিতর্ক/মতভেদ ইত্যাদি। কিন্তু কিতাবাল্লাহর অন্য সকল আয়াতে বিদ্যমান "শাজারা" শব্দটির অর্থ গাছ/বৃক্ষ।
৪:৬৫ আয়াতের "শাজারা" কীভাবে ভিন্নরূপ অর্থ ধারণ করতে পারে- এ বিষয়ে আপনার উপলব্ধি জানালে কৃতার্থ হবো।
আলহামদুলিল্লাহ্!
আমার উত্তর-
কোরানের এই আয়াতটি ছাড়া আর যত আয়াতে শাজারা আছে , সব জায়গায় এটি বিশেষ্য /noun , যার অর্থ গাছ। শুধু এই আয়াতে ক্রিয়া/ verb , যার অর্থ উঠা/বিকশিত হওয়া ( গাছের মতো ডাল পালা ছড়িয়ে বেড়ে উঠা বা বিকশিত হওয়া)। এখন আয়াতটি পড়ুন। মানুষের মাঝে কি গাছের মতো ডাল পালা ছড়িয়ে বেড়ে উঠে , যার বিচারের ভার রসুলের উপরে ন্যস্ত করা যায়? সেটা বিবাদ/বিতর্ক/ মতভেদ বা এমন সব কিছুই হতে পারে। এগুলো একবার শুরু হলে গাছের ডাল পালার মতো বহুজনের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে , সহজে থামানো যায় না।