Sunday, May 16, 2021



প্রিয়ইব্রাহিম(https://faruk55kw.blogspot.com/2017/07/blog-post_15.htmভাই ও বোনেরাআপনারা যারা নিজ আত্মাকে রোগমু্ক্ত করার প্রচন্ড তৃষ্ণা অনুভব করেনতাদের স্বাদ আস্বাদনের জন্য  নিম্নের এই আয়াত দিয়ে শুরু করছি-
১০:৫৭ 
يَاأَيُّهَاالنَّاسُ قَدْ جَاءتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَاء لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
হে মানবকুলতোমাদের কাছে উপদেশবানী (ওয়াজএসেছে তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে এবং অন্তরের রোগের নিরাময় (شِفَاও হেদায়েত ও রহমত মুমিনদের জন্য।

সম্ভবত আপনাদেরকে বলা হয়েছে ইসলাম মানে আত্মসমর্পন।সাথে সাথে এটাও বাখ্যা করা হয়েছে যেইসলাম মানে শান্তি।ইসলামকে কি সুন্দর মোড়কে আবৃত করা হয়েছেতাইনাএখন  আমরা ইসলাম শব্দের শব্দগত মানে পুনরায় আবিষ্কার করব। 

سلممقاييساللغة
السينواللاموالميممعظمبابهمنالصحةوالعافيةويكونفيهمايشذوالشاذعنهقليلفالسلامةانيسلمالإنسانمنالعاهةوالأذى

আত্মসমর্পন নয়শান্তিও নয়। ইসলামের মূলে যে শব্দ আছে  سلم অর্থাৎ সুস্থ (রোগমুক্ত)। শারীরিক ও মানসিক রোগের অনুপুস্থীতিই হলো সুস্থতা। ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে ইসলাম মানে মানসিক বা অন্তরের রোগমুক্তি।ভুল বিশ্বাস ও সকল প্রকার মূর্খতা জড়তাই হলো অন্তরের রোগ।শারীরিক রোগ থেকে মুক্তির নিরাময় বা শেফা (شِفَاءআধুনিক  চিকিৎসা ব্যাবস্থা।আর অন্তরের রোগের নিরাময় বা শেফা(شِفَاءপরোয়ারদেগারের  উপদেশবাণী অর্থাৎ এই কোরান। 


মুসলিম (مفعلসেই যে নিজের অন্তরকে সুস্থ করার আশায় এই  চিকিৎসা বিদ্যা বা ইসলাম (إفعالবাস্তবায়ন করে।
মিথ্যা ও ছাইপাঁশে ভরপুর এপৃথিবীতে সম্ভবত এ এক অলীক,  অবাস্তব আশা। 

কোরআনই একমাত্র সত্য , যাতে কোন সন্দেহ নেই।

কোরআনই একমাত্র সত্য , যাতে কোন সন্দেহ নেই। বাকি সবকিছু অনুমান , যা অনুসরন করা উচিৎ নয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ কোরআনের শুরুতেই বলেছেন , 
"এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী মুত্তাকিদের জন্য ২:২"।

বিশ্বাসীদের জন্য কোরআনে বর্ণীত সকল নির্দেশ ও ঘটনা পরম সত্য , কারন তারা বিশ্বাস করে কোরআনের রচয়িতা সবজান্তা আল্লাহ। কিন্তু কোন মানুষের লেখা বই পরম সত্য হতে পারে না , কারন কোন মানুষই সবজান্তা নয়।  মানুষ যা বলে বা লেখে তা সত্য হতেও পারে , আবার নাও হতে পারে। এ কারনেই মানুষের কথা বা লেখাকে অনুমান বা ধারনা প্রসূত হিসাবে শ্রেণীভূক্ত করা হয় , পরম সত্য হিসাবে নয়। সত্য দ্বীন পরম সত্যের উপরে ভিত্তী করেই প্রতিষ্ঠীত করার জন্যই কোরআন নাযিল হয়েছে , যাতে পরকালে বিচার দিবসে মানুষের কোন ওজর আপত্তি ধোঁপে না টেকে।
সর্বশক্তিমান কোরআন নাযিল করেই ক্ষ্যান্ত হননি , এ বই কে সংরক্ষনের ব্যাবস্থা ও করেছেন , যাতে সত্য ধর্মে মানুষের তৈরি কোন বিধি নিষেধ ঢুকতে না পারে।
"আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। ১৫:৯"
আল্লাহ তার এই জ্ঞ্যানের বই সম্পর্কে আরো বলেছেন , " নিশ্চয় যারা কোরআন আসার পর তা অস্বীকার করে, তাদের মধ্যে চিন্তা- ভাবনার অভাব রয়েছে। এটা অবশ্যই এক সম্মানিত গ্রন্থ। এতে মিথ্যার প্রভাব নেই, সামনের দিক থেকেও নেই এবং পেছন দিক থেকেও নেই। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। ৪১:৪১-৪২"
যে দ্বীন মানুষের মতামত ও ধারনার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত , তা নিকৃষ্ট হতে বাধ্য। কারন কোন মানুষের মতামত বা ধারনা পরম সত্য তো নয়ই , সন্দেহ মুক্ত ও নয়। এ কারনেই পরম করুনাময় আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন সে সত্যকে অনুসরন করতে , যাতে কোন সন্দেহ নেই এবং অনুমান ও ধারনা থেকে দুরে থাকতে বলেছেন। অনুমান থেকে উদ্ভুত ধারনা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, 
" শুনছ, আসমানসমূহে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে সবই আল্লাহর। আর এরা যারা অনুসরন করছে আল্লাহকে বাদ দিয়ে শরীকদের , তা আসলে কিছুই নয়। এরা নিজেরই কল্পনার পেছনে পড়ে রয়েছে এবং এরা অনুমান করছে। ১০:৬৬" 
এই মুশরেকদের সম্পর্কে আল্লাহ আরো বলেছেন, " এখন মুশরেকরা বলবেঃ যদি আল্লাহ ইচ্ছা করতেন, তবে না আমরা শিরক করতাম, না আমাদের বাপ দাদারা এবং না আমরা কোন বস্তুকে হারাম করতাম। এমনিভাবে তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যারোপ করেছে, এমন কি তারা আমার শাস্তি আস্বাদন করেছে। আপনি বলুনঃ তোমাদের কাছে কি কোন প্রমাণ আছে যা আমাদেরকে দেখাতে পার। তোমরা শুধুমাত্র আন্দাজের অনুসরণ কর এবং তোমরা শুধু অনুমান করে কথা বল। ৬:১৪৮"
সত্যকে অনুমানের সাথে তুলনা করে আল্লাহ বলেছেন,
 " বস্তুতঃ তাদের অধিকাংশই শুধু আন্দাজ-অনুমানের উপর চলে, অথচ আন্দাজ-অনুমান সত্যের বেলায় কোন কাজেই আসে না। আল্লাহ ভাল করেই জানেন, তারা যা কিছু করে। ১০:৩৬" 
এই একই কথা তিনি সূরা নাজমেও বলেছেন ,
 " এগুলো কতগুলো নাম বৈ নয়, যা তোমরা এবং তোমাদের পূর্ব-পুরুষরা রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল নাযিল করেননি। তারা অনুমান এবং প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে। অথচ তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে। ৫৩:২৩"
 " অথচ এ বিষয়ে তাদের কোন জ্ঞান নেই। তারা কেবল অনুমানের উপর চলে। অথচ সত্যের  ব্যাপারে  অনুমান মোটেই ফলপ্রসূ নয়। ৫৩:২৮"
মহান আল্লাহ সত্য বলেন , অনুমান সত্যের বদলি হতে পারেনা!!
সমস্যা হলো অধিকাংশ মানুষ সত্যকে উপেক্ষা করে অনুমানেরই অনুসরন করে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ সম্মানিত নবীকে সাবধান করে বলেছেন ,
" আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে। ৬:১১৬" 
আমাদের মুসলমানদের সমস্যা হলো , আমরা বিশ্বাস করি হাদীস বিশারদদের , যখন তারা নিশ্চয়তা দেয় শতাব্দী পর শতাব্দী  পরে সংগৃহিত বংশ পরম্পরায় প্রচলিত লোক মুখে শোনা নবীর নামে বলা কথা নির্ভুল সত্য। যদিও তাদের অনেকেই জানে , এগুলো অনুমান। যে কারনে তারা নিজেরাই এ হাদীসগুলোকে আবার জয়ীফ (দুর্বল) , সহীহ (সত্য) ও বাতিল হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করেছে। এই বিশারদরা আমাদেরকে এই এই অনুমান নির্ভর হাদীস অনুসরন করতে বলে , যা সত্যের - কোরআনের বিকল্প হতে পারেনা।

ইসলাম ও মানবতা

 


ইসলাম একটি পরিপূর্ন জীবন ব্যবস্থা। কিন্ত আমরা কয়জন জানি সেই জীবন ব্যবস্থাটা কি? দ্বীন ইসলাম বলতে কোরানে আল্লাহ যেভাবে জীবন যাপন করতে বলেছেন , তাকেই বোঝায়। এটাই মূখ্য। আল্লাহর নির্দেশনা মোতাবেক জীবন যাপন করেই আমরা আল্লাহকে তুষ্ট করতে পারি , নামাজ রোজার মাধ্যমে নয়। 

* তোমার পিতা মাতাকে সম্মান করবে , যতদিন তারা বেচে থাকবে। তাদের সাথে রূঢ় ব্যবহার করবে না বা অযত্ন করবে না।

* তোমরা মানুষের সাথে সদ্ব্যবহার করবে ও কোন মিথ্যা বলবে না।

* তোমরা আত্মীয় , এতিম ও গরিবদের সাহায্য করবে।

* নিজ সন্তানকে দারিদ্রতার কারনে হত্যা করবে না।

*তোমরা ব্যভিচার করবে না , কারন এটা পাপ।

*তোমরা কাউকে হত্যা করবেনা ।

* তোমরা এতিমদের সম্পদ আত্মসাত বা তস্রুপ করবে না।

*ব্যবসায়ের সময় পরিমান ও ওজনে সঠিক থাকবে।

*ঘুষ দেয়া নেয়া করবে না।

* সাক্ষ্য দেয়ার সময় সম্পুর্নরূপে সৎ থাকবে , এমনকি নিজের , বাপ মা আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে গেলে ও।

*যা কিছু করার প্রতিজ্ঞা করবে বা দায়বদ্ধ থাকবে , তা পুরপুরিভাবে পালন করবে এবং বিনম্র হবে।

*উদ্ধত হবে না বা গর্বের সাথে হাটবে না। আল্লাহ দম্ভকারীদের পছন্দ করেন না।

* রাগ করবে না বা উচ্চ কর্কশ স্বরে কথা বলবেনা। নিকৃষ্টতম স্বর হলো , গাধার আওয়াজ। 

এরুপ আরো অনেক বিধি নিষেধের কথা বলা আছে কোরানে। দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা মুসলমান রা আল্লাহর এই সকল নির্দেশ পালনের মাধ্যমে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সত্যিকারের ইসলাম প্রতষ্ঠার জন্য মানুষকে উড্বুদ্ধ না করে , বেশি বেশি নামাজ পড়ার জন্য বলে মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করছি।

মানববাদীদের কাছে আবেদন , কোরান পড়ে এর থেকেও মানববাদী কোন ধারা জানলে আমাদেরকে জানান।

Thursday, May 13, 2021

নামাজ

 একজন লিখেছেন- পবিত্র কুরআন এ নামাজ ও এর সময় সম্পর্কে যতটুকু জানা যায়,তাতে প্রচলিত রাকাআত কিংবা   কিভাবে এটা শুরু থেকে শেষ হবে তা উল্লেখ করে বিস্তারিত লেখা নাই।শুক্রবার এ সমাবেত নামাজ এর কথা নারী পুরুষের উপর বর্তানো দেখি,একসাথে নামাজ পড়া / আর নামাজ কায়েম করা যাই বলি না কেন আসলে এটার পবিত্র কোরআনের আলোকে সমাধানের উপায় জানা থাকলে আমাকে সাহায্য করুন।প্লিজ


আমার উত্তর- 

আমি রাসুল নই বা আমার কাছে আল্লাহর ওহি আসেনা। কোরানের আলোকে আমি যা বুঝি সেটাই আপনাকে জানাচ্ছি। 


সর্ব প্রথমে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি কোরান আল্লাহর প্রেরিত গ্রন্থ , যা স্বয়ংসম্পুর্ন এবং আল্লাহভীরুদের (মুত্তাকি) জন্য বিস্তারিত ব্যাখ্যা সহ পরকালে মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশ কোরানে দেয়া আছে। যা কোরানে নেই তা মুসলমানের  জন্য ধর্মীয় নির্দেশ নয়। 


প্রচলিত আনুষ্ঠানিক নামাজ (সালাত) , রাকায়াত, রুকু , সিজদাহ  এবং এগুলোর বিবরন কোরানে নেই। এর অর্থ দাড়ায় , এগুলো মানুষের বানানো। এগুলো ধর্মের সরাসরি অংশ নয়। এগুলোর কোন গুরুত্ব কি আছে?  আমার মনে হয় এগুলোর পরোক্ষ গুরুত্ব আছে। যদি আমরা এই নামাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে তাকে স্মরন করার জন্য ও তার কাছে সাহায্যের প্রার্থনার জন্য , মন্দ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখার  জন্য , আল্লাহর গুনগান করার জন্য পড়ে থাকি। 


ভিক্ষুকরা যার যার মতো করে ভিক্ষা চায়। ভিক্ষার যেমন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই তেমনি প্রার্থনার ও নির্দিষ্ট নিয়ম নেই। প্রতিটি ধর্মের মানুষের প্রার্থনার নিয়ম ভিন্ন। এগুলোকে নুসুখ বলে। মুসলমানরা নামাজ পড়ে , হিন্দুরা পুজা করে , খৃষ্টানরা চার্চে ও ইহুদিরা সিনাগগে যেয়ে প্রার্থনা করে। আমি নামাজ পড়াকে নুসুখ হিসাবে দেখি। যে ভাবে যার ভাল লাগবে , সেভাবেই সে নুসুখ পালন করবে। এর কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই। 


[5:48 আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে এক উম্মত করে দিতেন, কিন্তু এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে ধর্ম দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। অতএব, দৌড়ে কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন কর। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অতঃপর তিনি অবহিত করবেন সে বিষয়, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে।]


কোরানে যেসকল আয়াতে বলা হয়েছে পরকালে যাদের কোন ভয় নেই এবং দু:খ করা লাগবেনা , সেই সকল আয়াতের একটিতেও নামাজ পড়ার কথা বলা নেই।

যাকাতের পরিমান

 মুত্তাকি কারা? তারাই যারা তাদের রিজিক থেকে ব্যায় করে। (وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ)


কতটুকু ব্যায় করবে?


 2:219 وَيَسْأَلُونَكَ مَاذَا يُنفِقُونَ قُلِ الْعَفْوَ ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمُ الْآيَاتِ لَعَلَّكُمْ تَتَفَكَّرُونَ

আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে, কি তারা ব্যয় করবে? বলে দাও, নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ের পর যা বাঁচে তাই খরচ করবে। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্যে নির্দেশ সুস্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা চিন্তা করতে পার।


এর থেকে সুস্পষ্ট বর্ণনা আর কি হতে পারে? আমরা যারা শুধু কোরান মেনে  চলি বলে দাবী করি , তারা এখনও হাদিসের ভূত মাথা থেকে ঝাড়তে পারিনি। যেকারনে নামাজ রোজা হজ্জ যাকাত এর নিয়ম কোরান থেকে যার যার মতো খুজে বের করার চেষ্টা করি এবং যার যার মতো খুজেও বের করি। অনেকটা  নিজের মাপে জামা না বানিয়ে যতটুকু কাপড় আছে তা দিয়েই জামা বানানোর মতো, তা সে জামা গায়ে লাগুক বা না লাগুক। 


আগের পোস্টে যাকাত নিয়ে অনেক আলোচনা ও বিশ্লেষন পড়লাম। কোরান তো সহজ , আল্লাহ তো পরিস্কার বলে দিতেই পারতেন যাকাত 20% বা 2.5%। উনি বলেন নি , কারন উনি পরিস্কার বলেই দিয়েছেন নিজেদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যায় কর। এখন কেউ আমরা গনীমতের হুকুমকে যাকাতের হুকুম বানাচ্ছি, কেউ আনফাল , কেঊ সাদাকা..... কারন হাদিসের ভূত আমাদের মাথায় আছে। ইহুদিদের গরু কুরবানির কথা মনে আছে? যেখানে তারা যেকোন গরু কুরবানি করলেই পারত , তা না গরুর রঙ কি হবে , বয়স কত, চাষের যোগ্য কিনা ইত্যাদি প্রশ্ন করে বিষয়টাকে কিভাবে জটিল করে তুলেছিল।

যাকাতের বিধান

 একজন প্রশ্ন করেছেন - যাকাতের বিধান কী?


উত্তর - আমরা যাকাত বা যাকাতের বিধান বলতে যা বুঝি , তা মানুষের বানানো। এর কিছুই কোরানে নেই। 'আতু যাকাত' অর্থ যাকাত দেয়া নয়। প্রকৃত অর্থ - নিজেকে পরিশুদ্ধ করা। কতটুকু দান করবেন বা অন্যকে দেবেন? নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। এই পরিমান ঠিক করবেন আপনি নিজে, কারন আপ্নার কতটুকু প্রয়োজন তা আপনার চেয়ে ভাল আর কেউ জানেনা। এক্টা জিনিষ মাথায় রাখবেন , এই দানের পুরস্কার আল্লাহর কাছে জমা থাকবে , যা তিনি পরকালে দেবেন। আরো একটি জিনিষ স্মরন করিয়ে দেই - পরকালের আশায় সব কিছু দান করে নি:স্ব হয়ে অপরের কাছে হাত পাততে আল্লাহ নিরুৎসাহিত করেছেন।

রসূল

 যে বা যারা আল্লাহর বাণী প্রচার করে , সে বা তারা রসূল। সেই অর্থে আমি বা আমরা যারাই কোরানের বাণী  প্রচার করি , আমরা সকলেই রসূল। এখন আমি যদি আপনাকে কোরানের আয়াত উদ্ধৃতি দিয়ে বলি মিথ্যা সাক্ষী দেবেননা ,ওজনে বা মাপে কম দেবেননা এবং আমার এই নির্দেশ যদি আপনি না মানেন বা মানতে অস্বীকার করেন , তাহলে  আপনি কাফের।  আর যদি বলি আমাকে  1000 টাকা দেন আমার দরকার। আপনি যদি টাকা দিতে অস্বীকার করেন  , তাহলেও আপনি কাফের নন আমার নির্দেশে টাকা না দেওয়ার জন্য। বুঝা গেল কিছু?

অপরাধের শাস্তি

 কোরানে  কি  পৃথিবীতে  যত  রকম  অপরাধ  সংঘটিত  হয়  ,  সবের  শাস্তির  কথা  উল্লেখ  আছে?  নেই।  যেগুলোর  উল্লেখ  নেই  সেগুলোর  শাস্তি  সমাজ /দেশ  নির্ধারন  করবে ,  এর  সাথে  ধর্মের  কোন  সম্পর্ক  নেই।  ধর্মের  সাথে  সম্পর্ক  যেগুলো কোরানে  আছে।  রসূলের  নামে  প্রচলিত  মিথ্যা  হাদিসের  মাধ্যমে পাওয়া শাস্তি  মানুন  আপত্তি  নেই ,  আপত্তি  তখনই  যখন  এগুলোকে  ধর্মের  অংশ  বানিয়ে  ফেলা  হয়।  রসূলের  ধর্মীয়  বিধান  দেয়ার  ক্ষমতা  নেই।  পিরিয়ড।  হাদিস  গ্রন্থগুলিতেও সব  অপরাধের  শাস্তির  বর্ণনা  পাবেন  না।  শেষ  মেষ  সমাজ/ দেশকেই  শাস্তি  নির্ধারন  করতে  হবে।  যেমন  ধরুন  red  light  violation  বা  বেপরোয়া  গতিতে  গাড়ি  চালানো  বা  মানুষ  চাপা  দিয়ে  মেরে  ফেলার  শাস্তি  কী?  হাদিসগ্রন্থ  থেকে  এর  উত্তর  দেখান।

প্রশ্নোত্তর

 একজন প্রশ্ন করেছেন -


ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।


৪:৬৫ আয়াতে বিদ্যমান শাজারা ( شَجَرَ ) শব্দটির অনুবাদ করা হয়েছে বিবাদ/বিতর্ক/মতভেদ ইত্যাদি। কিন্তু কিতাবাল্লাহর অন্য সকল আয়াতে বিদ্যমান "শাজারা" শব্দটির অর্থ গাছ/বৃক্ষ।


৪:৬৫ আয়াতের "শাজারা" কীভাবে ভিন্নরূপ অর্থ ধারণ করতে পারে- এ বিষয়ে আপনার উপলব্ধি জানালে কৃতার্থ হবো।


আলহামদুলিল্লাহ্‌!


আমার উত্তর-


কোরানের এই আয়াতটি ছাড়া আর যত আয়াতে শাজারা আছে , সব জায়গায় এটি বিশেষ্য /noun , যার অর্থ গাছ। শুধু এই আয়াতে ক্রিয়া/ verb , যার অর্থ উঠা/বিকশিত হওয়া ( গাছের মতো ডাল পালা ছড়িয়ে বেড়ে উঠা বা বিকশিত হওয়া)। এখন আয়াতটি পড়ুন। মানুষের মাঝে কি  গাছের মতো ডাল পালা ছড়িয়ে বেড়ে উঠে , যার বিচারের ভার রসুলের উপরে ন্যস্ত করা যায়? সেটা বিবাদ/বিতর্ক/ মতভেদ বা এমন সব কিছুই হতে পারে।  এগুলো একবার শুরু হলে গাছের ডাল পালার মতো বহুজনের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে , সহজে থামানো যায় না।