Saturday, February 8, 2025

জানেন কি , কাদের সাথে আল্লাহ কেয়ামতের দিন কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে ফিরেও তাকাবেন না?


সূরা আল ইমরান ৩:৭৭ "যারা আল্লাহর অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য মুল্যে বিক্রয় করে, আখেরাতে তাদের কোন অংশ নেই। আর তাদের সাথে কেয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না। তাদের প্রতি (করুণার) দৃষ্টিও দেবেন না। আর তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। বস্তুতঃ তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।"


এরা তারাই , যারা আল্লাহর অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য মুল্যে বিক্রয় করে। কারা এরা? আমরা সাধারন মুসসলমানরা তো জানিইনা আল্লাহর অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা , বেচা তো পরের কথা। জানতে হলে তো কুরআন বুঝে পড়া লাগবে , যে কাজটা আজকের মুসলমানরা করে না। এই সুযোগটাই নিয়েছে একদল ধর্ম ব্যাবসায়ী , যারা ধর্মের ওয়াজ মাহফিল করে , মসজিদে ইমামতি করে খুতবার মাধ্যমে আল্লাহ যা বলেননি সেগুলোকেই আল্লাহর অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা বলে বিক্রি করছে। পরের আয়াতেই আল্লাহ এই লোকদের পরিচয় দিয়েছেন। এরা যে কিতাব থেকে পাঠ করে তা কুরআন নয়। এগুলো বানোয়াট সহীহ সিত্তার হাদিসের বই , খুতবার বই ইত্যাদি। এরা বলে নামাজ বেহেশতের চাবি , নবীর শাফায়াত ছাড়া কেউ বেহেশতে যাবে না , এই দোয়া পড়লে সমুদ্রের ফেনা পরিমান গুনাহ মাফ হয়ে যাবে , কাল পাথরে চুমু দিলে নিষ্পাপ হয়ে যাবে ইত্যাদি এগুলো আল্লাহর তরফ থেকে কিন্তু এগুলো আল্লাহর তরফ থেকে নয়। 


৩:৭৮ "আর তাদের মধ্যে একদল রয়েছে, যারা বিকৃত উচ্চারণে মুখ বাঁকিয়ে কিতাব পাঠ করে, যাতে তোমরা মনে কর যে, তার কিতাব থেকেই পাঠ করছে। অথচ তারা যা আবৃত্তি করছে তা আদৌ কিতাব নয়। এবং তারা বলে যে, এসব কথা আল্লাহর তরফ থেকে আগত। অথচ এসব আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত নয়। তারা বলে যে, এটি আল্লাহর কথা অথচ এসব আল্লাহর কথা নয়। আর তারা জেনে শুনে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যারোপ করে।"


আলেম উলামা , ওয়াজীনে কারাম ও মোল্লা মৌলভি ধর্ম ব্যাবসায়ীগণ আল্লাহকে ভয় করুন। 




Saturday, February 1, 2025

ধর্মের নামে অধর্ম

 আমাদের দেশে ধর্মের নামে চলছে অধর্ম। ইসলামের মূল মন্ত্র হল - এক আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস এবং সৎকাজ। কুরআনের বহু আয়াতে বলা হয়েছে এদের ভয় নেই ও দুঃখ করা লাগবে না। কুরআনে সৎ কাজের বর্ননা ও দেয়া আছে : মিথ্যা না বলা , মিথ্যা সাক্ষী না দেয়া , ওজনে মাপে কম না দেয়া , বাপ মার যত্ন নেয়া এমনকি 'উফ' বলে বিরক্ত ও না হওয়া , গীবত না করা , দান করা যার পুরষ্কার আল্লাহর কাছে রক্ষিত থাকবে বলে আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন , ইত্যাদি। এটাই ধর্ম। পড়ুন সূরা আলআনাম ৬:১৫১ থেকে ১৫৩ ও সূরা ইস্রাইল ১৭:২২ থেকে ৩৯ আয়াতগুলো।

পক্ষান্তরে ধর্মীয় নেতারা কলেমা , নামাজ , রোজা , হজ্ব ও যাকাতকে বানিয়েছে ইসলামের মূল স্তম্ভ , যা পরিস্কার অধর্ম। কারন কুরআনের কোথাও এমন কথা বলা হয় নি বা যেভাবে যে নিয়মে এগুলো পালন করে থাকে তার বর্ননা কুরআনে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে ও খুজে পাবেন না। যে বিধান কুরআনে নেই , তা আল্লাহর বিধান নয়। মানুষের তৈরি বিধান ধর্মের নামে চালানোই অধর্ম। যদি কেউ বলে কলেমা , নামাজ , রোজা , হজ্ব ও যাকাতের নিয়মাবলী রাসুল দিয়েছেন , তাহলেও এটা অধর্ম। কারন রাসুল ও মানুষ এবং তার ধর্মীয় বিধান দেয়ার এখতিয়ার নেই। সর্বোপরি কুরআনের কোথাও বলা হয়নি রাসুল তোমাদেরকে বলে দেবেন বা দেখিয়ে দেবেন কিভাবে কলেমা , নামাজ , রোজা , হজ্ব ও যাকাত করতে হয় বা দিতে হয়। যদি এমনটা হয় , তাহলে রাসুল উপাস্য হিসাবে গন্য হবেন। এই অধর্ম মানুষকে ধর্ম থেকে দুরে রাখছে এবং সত্যবাদী , সৎ , পরোপকারী হতে অনুৎসাহিত করছে।
{২৫:২০ আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত। আমি তোমাদের এককে অপরের জন্যে পরীক্ষাস্বরূপ করেছি। দেখি, তোমরা সবর কর কিনা। আপনার পালনকর্তা সব কিছু দেখেন।}
{৪১:৬ বলুন, আমিও তোমাদের মতই মানুষ, আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের মাবুদ একমাত্র মাবুদ, অতএব তাঁর দিকেই সোজা হয়ে থাক এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। আর মুশরিকদের জন্যে রয়েছে দুর্ভোগ}
{১৮:১১০ বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।}

Tuesday, January 28, 2025

ভাবুন কি করবেন.....


মুসলমান মাত্রই সালাত বলতে বোঝে নামায পড়া। হাদিস অনুসারী মুশরিকদের প্রথম প্রশ্নই হল , "নামায পড়িস ব্যাটা? পড়লে কুরআন থেকে দেখা কোন নামায কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হবে?" এই প্রশ্নের মাধ্যমে তারা কুরআনকে অসম্পুর্ন এবং হাদিস ছাড়া ইসলাম অচল এটা প্রমান করে থাকে। কুরআনকে অসম্পুর্ন প্রমান করতে চাওয়ার মাধ্যমে এরা পারতপক্ষে আল্লাহর বাণীকে অস্বীকার করে। কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী কাফেররাই আল্লাহর বাণী অস্বীকার করে। পড়ুন-

৬:১১৫-১১৬ "আপনার প্রতিপালকের বাণী পূর্ণ , সত্য ও সুষম। তাঁর বাক্যের কোন পরিবর্তনকারী নেই। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন, তবে তারা আপনাকে আল্লাহর পথ থেকে বিপথগামী করে দেবে। তারা শুধু অলীক কল্পনার অনুসরণ করে এবং সম্পূর্ণ অনুমান ভিত্তিক কথাবার্তা বলে থাকে।"


অনেক কুরআন অনুসারীদের  ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে শুনবেন , কুরআনে নামাযের নিয়ম সব আছে। সত্য হল কুরআনে নামাযের কোন বিবরন নেই। থাকবে কি করে? থাকা সম্ভব না। কারন নামায মানুষের বানানো উপাসনার পদ্ধতি, আল্লাহর নয়। আল্লাহ মানুষকে নামায পড়তে বলেন নি। 


কুরআনের আলোকে বলা যায় প্রচলিত নামায পড়া মদ খাওয়ার চেয়েও গুরুতর নেশা - পাপ। নেশা ছাড়ানো যেমন কষ্টকর , তেমনি নামায পড়া বন্ধ করা। নেশাগ্রস্থ অবস্থায় ঈমানদারদের সালাতের কাছে যেতে নিষেধ করেছেন আল্লাহ , কারন নামাযে কি বলছে তা ৯৯.৯৯% বাঙালি মুসাল্লি বোঝে না। আর নেশা , জুয়া , প্রতিমাকে আল্লাহ এড়িয়ে চলতে বলেছেন। একটি সরাসরি আল্লাহর নিষেধ , অন্যটি কল্যানপ্রাপ্ত হওয়ার উপদেশ।  ভাবুন কি করবেন.....


"হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন সালাতের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ,.."(৪:৪৩)


"হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।"(৫:৯০)

Sunday, January 26, 2025

আত্মশুদ্ধি

 পরকালে মুক্তির সাথে আত্মশুদ্ধি যাকে আরবিতে বলে 'আতু যাকাত' অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কুরআনে বারে বারে 'আকিমুস সালাতে'র সাথে 'আতু যাকাত' বলে আল্লাহ আমাদের শুদ্ধ হওয়ার আদেশ করেছেন , উপদেশ দিয়েছেন। আল্লাহর সকল বিধান মানার (আকিমুস সালাত) মাধ্যমেই আমরা নিজেদের শুদ্ধ করতে পারি। নামাজ পড়ে নয় বা হজ্ব করেতো নয়ই। 


আত্ম শুদ্ধির প্রথম করনীয় হল অপরকে শুদ্ধ করার চেষ্টা না করা। এ কাজটি বাস্তবিকই কঠিন। নিজের থেকে অন্যকে শুদ্ধ করার চেষ্টায় আমাদের আগ্রহ বেশি। একারনে আল্লাহ বলেছেন:


২:৪৪ "তোমরা কি মানুষকে সৎকর্মের নির্দেশ দাও এবং নিজেরা নিজেদেরকে ভূলে যাও, অথচ তোমরা কিতাব পাঠ কর? তবুও কি তোমরা চিন্তা কর না?"


নিজের জন্য পরকালে কি অপেক্ষা করছে সেটা না জানলেও অপরের চিন্তায় আমরা বেশি চিন্তিত। নিজে শুদ্ধ হই ,  নিজের চিন্তা করি। এমনটি আল্লাহর উপদেশ বলতে পারেন ,  নির্দেশ ও বলতে পারেন। পড়ুন-


৫:১০৫ হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের চিন্তা কর। তোমরা যখন সৎপথে রয়েছ, তখন কেউ পথভ্রান্ত হলে তাতে তোমাদের কোন ক্ষতি নাই। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে। তখন তিনি তোমাদেরকে বলে দেবেন, যা কিছু তোমরা করতে।

Thursday, January 23, 2025

জানেন কি আল্লাহ কাদের ভালবাসেন?

 যারা এই শীতের ভোরে লেপের ভিতরের উষ্ণ গরম থেকে অতিকষ্টে বেরিয়ে ঠান্ডা পানিতে ওজু করে ঠকঠক করে কাপতে কাপতে মসজিদে দৌড়াচ্ছেন ফজর নামাজ ধরার জন্য , আর ভাবছেন আল্লাহ এমন লোকদেরকেই ভালবাসেন , এদেরকেই আল্লাহ জান্নাতের চাবি দিবেন। তাহলে ভুল ভাবছেন এবং ভুল ওয়াজ শুনেছেন। এমন লোকদের ভালবাসার কথা কুরআনে বলা নেই। নামাজ জান্নাতের চাবি - এটা শয়তানের ওয়াদা , আল্লাহর নয়। 


আল্লাহ কাদের ভালবাসেন? জানতে হলে পড়ুন-


"নিশ্চয় আল্লাহ্ ন্যায়বিচারকারীদের ভালোবাসেন।"

(সূরা মায়িদাহ ৫: ৪২)


"আর যারা সবর করে আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন।"

(সূরা আলে ইমরান ৩: ১৪৬)


"অতঃপর যখন কোন কাজের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলেন, তখন আল্লাহর উপর ভরসা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ ভরসাকারীদের ভালোবাসেন।"

(সূরা আলে ইমরান ৩: ১৫৯)

Sunday, January 12, 2025

সাকার

 আপনার সন্তানকে নামাজ পড়া নয়, তাকে শেখান অভাবীকে খাবার দিতে। 

কেন? 

তাহলে আপনি আপনার সন্তানকে সাকার থেকে বাচাতে পারবেন।

কুরআন থেকে নিচের আয়াতটি পড়েন.......


"তুমি কি জানো 'সাকার' কি? সাকার হচ্ছে এমন জাহান্নাম, যার আগুন মরতেও দেবেনা, বাঁচতেও দেবেনা। দেহের চামড়া ঝলসাবে শুধু।"[মুদ্দাসির:২৭-২৯]


যখন অপরাধীদের জিজ্ঞাসা করা হবে কী কারণে তাদেরকে সাকারে নিক্ষেপ করা হলো,তারা বলবে-


"অপরাধীদের সম্পর্কে বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে সাকারে নীত করেছে? তারা বলবেঃ আমরা মুসল্লিদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম না। অভাবীদের খাবার দিতাম না। আমরা অবান্তর আজেবাজে কথায় লিপ্ত থাকতাম। আর কর্মফল দিবসকে অস্বীকার করতাম। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমরা বিভ্রান্তিতেই নিমজ্জিত ছিলাম।"

[মুদ্দাসসির: ৪১-৪৭]


N.B- মুসল্লি হল তারাই , যারা কুরআনে আল্লাহ যা করার আদেশ দিয়েছেন তা করে , আর যা নিষেধ করেছেন তা করে না। মুসল্লি মানে নামাজ পড়ুয়া নয় , যেমনটি হুজুররা দাবী করে থাকে।