Monday, December 20, 2021

শয়তান -


কোরানের শুরু থেকে মানুষকে যে জ্ঞান শেখানো হয়েছে তার একটি হলো , মানুষ ছাড়াও আরো সত্বা বা শক্তি আছে যারা মানুষের মতোই বুদ্ধিমান, অনুভূতিসম্পন্ন ও স্বাধীন ইচ্ছার অধিকারী (?)।  এমনি একটি সত্বা , যাকে আমরা শয়তান বলে জানি, জেনে শুনে অহঙ্কার বশত আল্লাহর উপস্থিতীতে আল্লাহর আদেশ অমান্য করার ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছিল।  {সে বললঃ দেখুন তো, ইনিই সে ব্যক্তি, যাকে আপনি আমার চাইতেও উচ্চ মার্যাদা দিয়ে দিয়েছেন। যদি আপনি আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত সময় দেন, তবে আমি সামান্য সংখ্যক ছাড়া তার বংশধরদেরকে সমূলে নষ্ট করে দেব।১৭:৬২}  


এটা পরিস্কার যে, আদমের বংশধরদের সমূলে বিনষ্ট করে দেয়ার শয়তানের এই শপথকে খাটো করে দেখা মানবসমাজের উচিৎ হবে না। {সে বলল, আপনার ইযযতের কসম, আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করে দেব। ৩৩:৮২} 


শয়তান যে ফাকা বুলি আওড়ায়নি এবং সে যে তার শপথ পুরনে সক্ষম তার প্রমান আমরা পাই এই আয়াতদ্বয়ে।{আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয়। অধিকাংশ মানুষ যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে।১২:১০৩,১০৬}       


শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। সে কসম খেয়েছে কেয়ামত পর্যন্ত আদমের বংশধরকে বিপথগামি করেই যাবে। শয়তানের চক্রান্ত থেকে বাচানোর লক্ষ্যে আল্লাহ মানব সমাজের শুরু থেকেই বিভিন্ন নবি ও রসূলের মাধ্যমে  ঐশীগ্রন্থ পাঠিয়ে শয়তানের পরিচিতি ও লক্ষ্য সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করেছেন এবং হেদায়েত করেছেন।

 {আমরা বল্লাম, তোমরা সবাই  নেমে যাও এখান থেকে।  অতঃপর যখন তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত    পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না তাকে দুঃখ করা লাগবে। ২:৩৮, 

তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়েই এখান থেকে এক সঙ্গে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ঠ হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।২০:১২৩}

                                                                                                       

পার্থিব জীবণের শুরু থেকেই  মানুষকে আল্লাহর হেদায়েত প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বা হেদায়েতকে অকার্যকর করার জন্য শয়তান উর্ধজগতের সাথে মানুষের যোগাযোগের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ ও আড়িপাতার চেষ্টা করেছে। 

{ নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে। ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয় ওদেরকে বিতাড়নের উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি। তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।৩৭:৬-১০}


আল্লাহর বাণী যাতে অপরিবর্তিতভাবে মানুষের কাছে পৌছায় এবং শয়তান যাতে আঁড়ি পাত্তে না পারে , সেকারনে সবধরনের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শয়তানের স্বীকারোক্তি পড়ুন। 

{আমরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ। আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে। আমরা জানি না পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করা অভীষ্ট, না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন করার ইচ্ছা রাখেন।৭২:৮-১০}


ভাবছেন শয়তান এরপরে হাল ছেড়ে দিয়েছে। না, ওহি নাযিলে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করতে পারলেও , ওহি নাযিলের পরে রসূলদের হৃদয়ে ঢুকে আল্লাহর বানীকে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আল্লাহর হস্তক্ষেপে শয়তানের সে চেষ্টাও বিফলে গেছে।

 {আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।২২:৫২}


সুতরাং কোরানের আয়াত অনুযায়ী আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌছান পর্যন্ত প্রথম দুই ধাপ আল্লাহ শয়তানের চক্রান্ত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থাই শুধু করেন নি , এই বাণী কেয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তিত রাখার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন।

 {আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।১৫:৯}


মানুষের কাছে আল্লাহর হেদায়েত তথা অবিকৃত শয়তানের হস্তক্ষেপমুক্ত কোরান পৌছে গেছে। এই কোরান ভেজালমুক্ত। অতীতে ও কেউ এতে মিথ্যা ঢুকাতে পারেনি , ভবিষ্যতেও পারবেনা। {কোন মিথ্যা এতে ঢুকেনি , না অতীতে না ভবিষ্যতে। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। ৪১:৪২}


কোরানে ভেজাল মেশাতে ব্যার্থ  হয়ে শয়তান নুতন পরিকল্পনা আটে। সেটা হলো - মানুষ যেন কোরানের বাণী হৃদয়াঙ্গম করে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে না পারে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমেই যে কাজটি করেছে তা হলো সাধারন মানুষকে বোঝানো যে আলেম ছাড়া কোরান বোঝা যার তার পক্ষে সম্ভব নয়। কোরান বুঝতে বিশাল জ্ঞানের প্রয়োজন , কারন বোঝার জন্য হাদিস বিশারদ হতে হবে , বড় বড় আলেমদের তাফসির পড়া লাগবে ইত্যাদি। শয়তান এব্যাপারে সফল হয়েছে তা নির্দ্বীধায় বলা যায়। আজ কাপড়ে জড়িয়ে চুমু খেয়ে তাকের পরে তুলে রাখা ও না বুঝে অক্ষর প্রতি ১০ নেকির (কোরানে এই নেকির কথা বলা নেই) লোভে না বুঝে পড়া ছাড়া বাঙালি মুসলমানের জন্য কোরানের আর কোন মূল্য নেই। এদের সম্পর্কে কোরানে পূর্ববর্তি সম্প্রদায়ের উদাহরন দিয়ে সাবধান করা হয়েছে - {যাদেরকে তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তাদের দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। ৬২:৫}


কোরানে বহু আয়াতে শয়তান কিভাবে মানুষকে বিপথগামী করে থাকে তার বর্ণনা দেয়া আছে , যাতে মানুষ সাবধান হতে পারে। মুহাম্মদের সময় এমনি এক পদ্ধতি ছিল কোরান তেলাওয়াতের সময় " লাঘু/ الْغَوْا"  করা, অর্থাৎ অবান্তর  কথা বলে হট্টগোল সৃষ্টি করা।{আর কাফেররা বলে, তোমরা এ কোরআন শ্রবণ করো না এবং এতে হট্টগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হও। ৪১:২৬} আজকের জমানায় ও এই আয়াতের গুরুত্ব অনুধাবনে আসে যখন মানুষকে কোরানের দিকে আহবান করা হয় , তখন শুনতে হয় নামাজ কিভাবে পড়ব, দাঁড়ি কতটুকু লম্বা রাখব , পায়খানায় যেতে ডান পা নাকি বাম পা আগে রাখব , কুলুখ নিয়ে কয় কদম হাটা লাগবে সেটা কিভাবে জানব ? ইত্যাদি সব অবান্তর কথাবার্তা।


অখ্যাত এক মোল্লা শেখ বড়ই পেরেশানিতে আছেন। তিনি ভাবছেন আর ভাবছেন , কিন্তু কোন সমাধান পাচ্ছেন না। শয়তানতো সব ধর্মের লোককেই আল্লাহর রাস্তা থেকে ভুলিয়ে বিপথে নিয়ে গেছে। বাকি রয়েছি কেবল আমরা মুসলমানরা। ৭ম শতাব্দির শুরুতে মুহম্মদের উপর কোরান নাযিলের পর থেকে শয়তান নিশ্চয় বসে নেই। তিনি ভাবছেন কি ভালই না হোত যদি আগেভাগেই শয়তানের চক্রান্ত জেনে নিতে পারতাম , তাহলে শয়তান যত চেষ্টাই করুক না কেন আমাকে আর ভুলাতে পারতনা।


শয়তানের চক্রান্ত ও তার কাজের ধারা , শয়তানের চেয়ে আর কে ভাল জানবে? কিন্তু সমস্যা হল শয়তানের দেখা কিভাবে পাবেন? শয়তান তো আর বোকা না , নিজে থেকে এসে তার পরিকল্পনা বাৎলে দেবে!! তখন ভাবলেন , আচ্ছা আমি যদি শয়তান হতাম তাহলে কি করতাম? যে ভাবা সেই কাজ....


আমি যদি শয়তান হতাম , তাহলে মানুষকে আল্লাহর রাস্তা থেকে বিপথে নেয়ার মিশনে অটল থাকতাম। মুহাম্মদ তো আর প্রথম নবী না , তার আগে যত নবী রসূল এসেছে এবং তাদের সকলের অনুসারীদের যেভাবে বিপথে নিয়েছি , সেভাবেই মুসলমানদের বিপথে নিব। এ আর এমনকি কঠিন। তাছাড়া সকল মানুষকে বিপথে নেয়াই আমার মিশন এবং এটা করার কথাই আমি আল্লাহকে গর্বভরে বলেছি। ইতিমধ্যে বিশ্বাসীদের উদ্বুদ্ধ করেছি যীশুকে শূলে চড়াতে।


মুহাম্মদ কোরান নামের একটা বই আবৃত্তি ও প্রচার করেছে মাত্র। যে বইয়ে মানুষকে সবর করতে , আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বানীর অনুসরন না করতে , নবী রসূলদের মাঝে পার্থক্য না করতে বলা হয়েছে। সুতরাং আমার প্রথম কাজ হবে মুসলমানদের এই কোরান থেকে দুরে সরিয়ে নেয়া বা তারা যেন কোরানকে আমলে না নেয় সে ব্যাবস্থা করা। এর জন্য আমার দরকার কোরানের পাশাপাশি অনেকগুলো বই।


সমস্যা নেই। প্রথমেই নবীর নিজস্ব কথা , তার চালচলন ও তার স্বভাব চরিত্র নিয়ে কিছু গুজব মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিলাম। ইসলামি রাজত্বের প্রসার ও সময়ের সাথে সাথে এই সকল গুজব নিজেই ডালপালা ছড়িয়ে চারিদিকে বহুগুনে প্রসার লাভ করল। নবীর মৃত্যুর ৩০০ বছর পরে দুই ইডিয়ট ঐশী দায়িত্ব দাবী করে তখনকার দিনে প্রচলিত অগুনতি হাদিস থেকে সহীহ হাদিস খুজে বের করে বই লিখল। ঠগ বাছতে কম্বল উজাড় করার মতো করে ১০ লক্ষ হাদিস থেকে যাচাই বাছাই করে প্রায় ৭ হাজার হাদিস সংকলন করে একজন লিখলেন "সত্যি  ধোঁয়া" (সহীহ বুখারি , আরবি বুখার মানে ধোঁয়া)এবং আরেকজন প্রায় একিভাবে লিখলেন "সত্যি মুসলমান (সহীহ মুসলিম)। এদের দেখাদেখি আরো চার জন লিখলেন আরো চারটি সহীহ বই। এখন পবিত্র কোরানের পাশাপাশি মুসলমানরা আরো ৬টি পবিত্র গ্রন্থ পেয়ে গেল।  বইয়ের নামগুলো খুব চটকদার কিন্তু খুব মজার হলেও আমি নিশ্চিত এটা মুসলমানেরা গ্রহন করবে। এখন এই বইগুলোকে পবিত্র করার জন্য আমি শব্দ নিয়ে খেলব।


আমি রাসুল (আল্লাহর বাণীকে হুবহু ব্যবহার করে বার্তাবাহক) এবং নবী (তার নিজের শব্দ ব্যবহার করে তথ্যদাতা নবী) শব্দগুলিকে গুলিয়ে ফেলব। রাসুলকে অনুসরণ করার ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার (যখন তিনি আল্লাহর বাণী উদ্ধৃত করেন) সাথে নবীকে অনুসরণ করা একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতায় পরিণত করব। ফলে মানুষ ঐশী নির্দেশ ভেবে নবীর নামে প্রচলিত বানোয়াটভাবে সংকলিত "সত্যি ধোঁয়া" , "সত্যি মুসলমান" এবং অন্যান্য হাদিসের বইগুলি মেনে নেবে। 


আমি আমার বইগুলির নামকরনের জন্য  সুন্নাহ শব্দটিকে ব্যাবহার করব। কোরানে শুধুমাত্র আল্লাহর সুন্নাহর উল্লেখ থাকলেও নবীর সুন্নতের নামে আমি বলব যে এটি আসলে কোরানের একটি ধর্মীয় পরিপূরক।


এই হাদিসের বইগুলি থেকে, আমি এমন লোকদের উদ্বুদ্ধ করব যাদেরকে আমি পর্যাপ্ত মূর্খতা এবং বিকৃততার মানদণ্ড অনুসারে মতবাদ তৈরি করতে এবং মুসলমানদের বিভক্ত করার জন্য বেছে নিয়েছিলাম। আমি তখন কোরানে  কোরানের জন্য ব্যবহৃত শরিয়া শব্দটি হাইজ্যাক করে এই সব বানোয়াট মতবাদের অনুসারীদের দেব।


এখন দেখি আমার বইগুলোতে কি লিখব।


একটু বিশ্বাসযোগ্যতা রাখার জন্য, আমাকে সম্ভবত কিছু প্রামাণিক গল্প উদ্ধৃত করতে হবে। সর্বোপরি আমার বইগুলিকে পবিত্র গ্রন্থ করার জন্য আমাকে অবশ্যই নবী এবং তাঁর সাহাবীদের পবিত্র ঘোষনা করতে হবে। এখানে যারা আমার বই অনুসরণ করে তাদের জন্য একটু জান্নাতের নিশ্চয়তা এবং যারা এটি অনুসরণ করে না তাদের জন্য একটু নরকের ভয় রাখতে হবে। 


আমার বইগুলিতে আমি পেডোফিলিয়া, দুর্ব্যবহার, খুন, নির্যাতন ও একনায়কত্ব এবং এই সমস্ত কিছুকে আল্লাহর নামে উৎসাহিত করব। নবীর নামে আমি বলব কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম এবং আমি এমন সব ধরনের মূর্খ আচার অনুষ্ঠান রাখব যা জনগণকে আমার জম্বি বানিয়ে দেবে এই বলে যে এগুলো সরাসরি জান্নাতে নিয়ে যায়। সেইসব লোক যারা শুধুমাত্র কোরানকে আঁকড়ে ধরে থাকে এবং আমার সত্যি হাদিস বইগুলিকে মিথ্যা বলে , আমি তাদেরকে মুসলমানদের সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করব যেন তারা নবীকে এবং আল্লাহকে অমান্য করতে চায় , ঘৃনা করে। আমি তাদের ধর্মত্যাগী ঘোষণা করব এবং আমি তাদের মৃত্যুদণ্ড দেব আল্লাহর নামে এবং যারা এদের হত্যা করবে তাদের আমি জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেব।


সবচেয়ে মূর্খদের মধ্য থেকে আমি আমার মোল্লা , হুজুর , মাওলানাদের বেছে নেব। আমি তাদের সম্মান ও  অনুপ্রেরণার জন্য লম্বা দাড়ি এবং বিশেষ পোশাক পরাবো এবং তাদের অনুসরণকারীদের জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় যতটা সম্ভব উচ্চস্বরে আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করতে বলব। অবশ্য এরা নিজেদের আলেম তথা বিজ্ঞানী দাবী করলেও এরা কিছুই আবিষ্কার করে না। তারা প্রকৃত বিজ্ঞান এবং ভৌত ঘটনা এমনকি যেগুলোকে আল্লাহ কুরআনের আয়াত বলেছেন সে সম্পর্কেও  সম্পূর্ণভাবে অন্ধ। তারা ব্লা ব্লা বিজ্ঞানী / ওয়াজী হবে। তারা মাঝে মাঝে বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য কিছু কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করবে এবং সেগুলিকে প্রসঙ্গ থেকে সরিয়ে নিয়ে আমার বইগুলিতে আমি যে অর্থ দিতাম সে অনুযায়ী ব্যাখ্যা করবে। আমার পণ্ডিতরা কোরানের পরিবর্তে একে অপরের উদ্ধৃতি , আমার হাদিস বই এবং আমার অনুপ্রাণিত যত বই আছে সেগুলো পড়ে সময় ব্যয় করবে।


আমার বই পড়ে, আমার পণ্ডিতরা মধ্যযুগীয় সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করে বৈপরিত্ব এবং মিথ্যার মোকাবিলা করতে শিখবে। আমি তাদের যে কর্তৃত্ব অর্পণ করেছি সেই চিন্তায় তাদের জিহ্বা দিয়ে  লালা ঝরবে এবং আমি তাদের বলব যে ইসলাম একজন মুসলিমের জীবনের সমস্ত দিককে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের নিয়মিত ভাবে এই পন্ডিতদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মুসলমানদের জন্য জান্নাতের  লোভ দেখিয়ে   প্রতিটি গ্রামে , গঞ্জে , শহরের কোনায় কোনায় জাক জমকপূর্ণ আল্লাহর ঘর তথা মসজিদ তৈরি করে এগুলোর ভার আমার বিভিন্ন আড়ম্বরপূর্ণ টাইটেলধারী পন্ডিতদের উপরে দিয়ে তাদের আয় উপার্জনের ব্যাবস্থা করে দেব। 


আমি এই তত্ত্বকে উৎসাহিত করব যে আমার পণ্ডিত এবং তাদের নোংরামি ছাড়া কোরান বোঝা সম্ভব নয়। ৭ম শতাব্দীতে সাধারণ বেদুইনরা  কোরানকে বুঝলেও এখন আর কেউ বুঝতে চেষ্টা করবে না।


এই পর্যায়ে আমার আলেমগণ ধর্মীয় চিন্তাধারা এবং অন্য সকল চিন্তার একচেটিয়া অধিকার নিয়ে নিবে। হ্যাঁ, আমি এমন মুসলমানদের তৈরি করব যারা আল্লাহ সম্পর্কে চিন্তা করতে পারে না, এমনকি কোরান যদি তাদের চিন্তা করতে ও বলে তবুও চিন্তা করবে না। তারা আমার বাজে কথা শুনবে  বিজ্ঞান এবং ধর্মীয় জ্ঞান ভেবে এবং তারা কোরান শুনবে যেভাবে কেউ একটি গান শোনে তা বোঝার চেষ্টা না করেও। আমি কুৎসিত পোশাককে আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যের প্রতীক করে তুলব এবং আমি এমন যে কোনও শিল্পকে নিষিদ্ধ করব যা আমাদের ব্রেনকে কাজে লাগাতে শেখাবে। 


আল্লাহর নামে, আমি অধার্মিক দেশগুলি থেকে আসা সমস্ত বিজ্ঞানের শিক্ষার পরিবর্তে  স্কুলগুলিতে আমার বিজ্ঞান অধ্যয়নের জন্য আমন্ত্রণ জানাব। এমনকি বিষ্ঠার মধ্যেও, তারা মনে করবে তারা সত্য পেয়েছে। পরিচয়ের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে, আমি মধ্যযুগে প্রত্যাবর্তনকে আধুনিকতা এবং অগ্রগতির একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত করে তুলব। (আফগানিস্তান)


আমি মসজিদগুলোকে কলুষিত করব এবং তাদেরকে আমার বই ও আমার দলগুলোর অনুসরণ করার আহ্বান জানাব। যদিও কোরান বলে যে মসজিদে  কেবলমাত্র আল্লাহর  নাম ডাকা উচিৎ , তবে এটি কোনও সমস্যা নয়।


নির্বোধ, এমনকি গণতন্ত্রেও, তারা আমার একনায়কত্বের পক্ষে ভোট দেবে এবং আমার বিজ্ঞানীরা এতটাই মূর্খ হবে যে তারা আমাকে অনুসরণ করবে এই বিশ্বাস করে যে , তারা আল্লাহকে অনুসরণ করছে । তারা তাদের সাথে জনগণের একটি বড় অংশকে আমার ,  মহান শয়তানের উপাসনায় নিয়ে যাবে।


১৪:২২ যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম (অন্ধকারে আছে। আরবি জুলম মানে অন্ধকার)  তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।


No comments:

Post a Comment