Tuesday, December 14, 2021

কোরান পাঠকের চিন্তার স্বাধীনতা


(ঐতিহ্যগত সতর্কীকরণ: এখানে কোরান দ্বারা ইসলামি ধর্মদ্রোহিতার স্বরুপ উম্মোচন করা হয়েছে। যারা হুজুর , মোল্লা ও শেখদেরকে তাদের শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করে ইসলাম সম্পর্কে শিখেছে , তারা গভীর ও ভয়ানকভাবে মর্মাহত হবে। তাদের অবিলম্বে এই নিবন্ধটি না পড়ে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যেভাবেই হোক, আপনি নিবন্ধটি সম্পূর্ণ পড়তে পারবেন না।)

"কোরান আল্লাহর গ্রন্থ"  প্রমানের জন্য এই নিবন্ধ লেখা হয় নি। বরং যারা এটা বিশ্বাস করে তাদের নিয়েই সমস্যা। যারা এই বিবৃতিটিকে (কোরান আল্লাহর গ্রন্থ) একটি অনুমান (hypothesis) হিসাবে গ্রহণ করেন , তাদের উদ্দেশ্যেই এই লেখা। 

কোরান একটি চমৎকার বই। আমরা যখন এটি পড়ি এবং এর মধ্যে  গভীর মনোনিবেশ করি, তখন একটি ব্যতিক্রমী যৌক্তিক বুঝ আমাদের মনে ধরা দেয়। আয়াতের  আন্তঃসম্পর্ক এতটাই নিবিড় যে যারা অন্য বইয়ের মতো সাধারন পাঠে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখে , তারা বুঝের উচ্চ স্তরগুলিকে শোচনীয়ভাবে মিস করে। এই উচ্চ স্তরগুলি তাদের কাছেই ধরা দেয় ,  যারা তাদের মন এবং হৃদয়ে কোরান ধারন করে এবং তাদের নিজস্ব উপলব্ধি বের করার জন্য আয়াতের  ক্রস-রেফারেন্স (তারতিল) করতে সক্ষম হয়।

আমরা প্রথমে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব সমগ্র কোরানের  অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াতকে:

৩:৭ তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তারা বলেনঃ আমরা এতে বিশ্বাস করি। এই সবই আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি সম্পন্নেরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না।

এই আয়াতটি একটি ভাল উদাহরণ যার মানে যুক্তির মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। মুসলমানরা তাদের আল্লাহর আয়াতকে হালকাভাবে গ্রহণ করে এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত হুজুর ও মোল্লাদের  হাতে তাদের ব্যাখ্যা অর্পণ করে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তার বিরুদ্ধে প্রকৃত অপরাধ করে।

এই আয়াতটি বেশ কিছু বিষয়কে নিশ্চিত করে।

প্রথমত, কোরান তার পাঠককে প্রত্যয়িত করে যে তিনি প্রথম পাঠ থেকে বার্তাটির সারাংশ বুঝতে সক্ষম।

তারপর, কোরান বলে যে কিছু আয়াতের একাধিক ব্যাখ্যা /মানে (রুপক) আছে এবং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে তারা এই বহুবিধ অর্থের মধ্যে সম্পূর্ণ পচাটি দিয়ে ফিৎনা ছড়াবে।

অবশেষে আয়াতটি আদেশ দেয় যে শুধুমাত্র আল্লাহই একাধিক অর্থের আয়াতের প্রকৃত অর্থ জানেন এবং যারা সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী তারা এই "অনিশ্চয়তা" কে প্রত্যাখ্যানের কারণ হিসাবে গ্রহণ করবে না। তারা অন্তত একটি ব্যাখ্যার অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ করবে না যা আপাত দ্বন্দ্ব দূর করে। "জ্ঞান সম্পন্ন " লোকেরা সবই মেনে নেবে কারণ তারা যা বুঝেছে তাই তাদের জন্য প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট।

এটি পড়ার প্রথম স্তর। 

আপনি যখন গভীরভাবে চিন্তা করতে এবং নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন তখন জিনিসগুলি জটিল হয়ে যায়।

কেন আল্লাহ তার কোরানে এমন আয়াত রাখবেন যা বোঝা যায় না?

কেন তিনি তার পাঠকদের জন্য এটিকে সহজ করার জন্য সমস্যাযুক্ত আয়াতগুলি চিহ্নিত করেন না বা একটি সূরা 'অস্পষ্ট' রাখেন নি?

সমস্ত "মস্তিষ্কের" জন্য "সমস্যা" আয়াত কি একই?

যারা কুরআনকে পুরোপুরি আয়ত্ত করতে চায় এবং যারা মতভেদ চায় তাদের কেন তিনি একত্রিত করেন? এটা বোঝা প্রায় অসাধ্য। 

কেন তিনি জোর দিয়ে বলেন যে তিনি নিজে ছাড়া কেউ সবকিছু বুঝতে পারবে না?

আয়াতটি কেন রসূল মুহাম্মাদকে তাদের থেকে বাদ দেয় যারা কোরানকে  সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে (আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সঠিক ব্যাখ্যা জানে না  , এটি সংকীর্ণ মনের জন্যও স্পষ্ট এবং অবিসংবাদিত)?

মুহাম্মদ কিভাবে তার প্রিয়জনদের ধর্মীয় জ্ঞান শেখাতে পারেন যদি তিনি যে বার্তাটি দিচ্ছেন তার সঠিক ধারণা তার না থাকে? ফেরেশতারা কি সঠিক ব্যাখ্যা জানে?

আমরা তখনই প্রতিফলনের এই স্তরে পৌঁছাতে পারি এবং নিজেদেরকে এই ধরণের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারি যখন আমরা এই দৃঢ় বিশ্বাসে পৌঁছাতে পারি যে এই বইটির লেখক হলেন সর্বোচ্চ রব (শিক্ষক) এবং তাঁর ছাত্রদের জন্য একটি শিক্ষা রয়েছে যা সময় এবং বাহককে অতিক্রম করে।

আপনি মনে করেন আপনি বুঝতে পেরেছেন , এমন যেকোন আয়াতের জন্য ৩:৭ আয়াতটি একটি যৌক্তিক ড্যামোক্লের তলোয়ার। (আপনি যদি বলেন যে কারো মাথায় ড্যামোক্লের তলোয়ার ঝুলছে, তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন যে তারা এমন একটি পরিস্থিতিতে রয়েছে যেখানে যে কোনো সময় তাদের সাথে খুব খারাপ কিছু ঘটতে পারে।) অর্থাৎ আপনার বুঝ ভুল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা বিদ্যমান। 

আয়াত ৩:৭ প্রতিফলন এবং চিন্তার স্বাধীনতার জন্য একটি স্থায়ী আহ্বান। যে কোন আয়াত প্রশ্নবিদ্ধ। আল্লাহর অবিসংবাদিত সত্য তার জানা আছে বলে কেউ দাবি করতে পারে না। আল্লাহই ইসলামের একমাত্র রব (শিক্ষক)। তিনি ছাড়া অন্য কেউ নিজেকে রব বলে দাবি করতে পারে না, কারন আয়াতের সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা কেবল আল্লাহই জানেন। 

আয়াত ৩:৭ , এর পাঠককে ব্যাখ্যা করে যে তিনি নিজে যা বুঝেছেন তার উপর মহান রব তার বিচার করবেন এবং মোল্লা , হুজুর , শেখদের কাছ থেকে পাওয়া বুঝ ও ব্যখ্যার দোহাই কোন কাজে আসবে না। 

এটাই কোরান! মানুষ এবং তাদের কল্পনার জন্য ভিন্ন অর্থ ও জ্ঞানের একটি মহাসাগর। এমন একটি বই যা পাঠ করে প্রতিটি আত্মা তারই জন্য নির্দিষ্ট জ্ঞান লাভে সক্ষম।

এটি কোরানের লেখকের রচনাশৈলী (তারতিল):

79-24: আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব (শেখ/পণ্ডিত)" ফিরাউনের দ্বারা উচ্চারিত একটি আয়াত। ফিরাউন এক উদ্ধত স্থানীয় ক্ষমতাবান , যে তার লোকেদের মধ্যে বিভেদ বপন করেছিল তাদের বিভক্ত করে (28-4)। আয়াত 40-28 প্রমাণ করে যে ফিরাউন ছিলেন একজন পুরোহিত/শেখ এবং ফেরাউনের লোকদের ঈশ্বর ছিলেন আল্লাহ। এটি আরও দেখায় যে এমনকি ফিরাউনের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যেও "ঈশ্বরের" লোক ছিল যারা স্বৈরাচারের অধীনে মানুষের ভালোর জন্য কাজ করেছিল। 66-11 আয়াতে আল্লাহ নিজেই ফিরাউনের স্ত্রীকে ভালো উদাহরণ হিসাবে দেখিয়েছেন যে, যারা ফেরআউনের সাথে ঘনিষ্ঠ তাদের যেমন তিরস্কার করা উচিত নয় , তেমনি 66-10 আয়াতে দেখান যে নবীপত্নী হলেও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আল্লাহর শাস্তির কবল থেকে  নবীরা তাদের রক্ষা করতে পারেনি। যারা অতীতের ফেরাউনের কারনে ভুগেছেন, যারা আজকের ফেরাউনের কারনে ভুগছেন এবং যারা নিজেদেরকে একজন জ্ঞানী বলে দাবি করেন ও তাদের সাথে যারা সান্ত্বনা পান , এদের  সকলের চিন্তা ও ধ্যান করার জন্য কোরান একটি দুর্দান্ত পাঠ্য বই।

ইসলামে নিজেকে একজন ধর্মীয় গুরু বা শিক্ষক হিসেবে ঘোষণা করা ফিরাউনের কুফরির সমতুল্যই শুধু নয় , এটি কোরান গভীর ভাবে না বোঝার লক্ষণও বটে। এমনকি যদি হুজুররা , মোল্লারা , শেখরা আন্তরিক হন এবং সুসংগত কথা বলেন, তবুও তাদের মূর্খ ঘোষণা করা উচিত কারণ তারা যা শেখানোর দাবি করে তা শেখাতে অক্ষম।

সম্ভাব্য এবং কল্পিত সমস্ত ধর্মদ্রোহিতার মধ্যে নিজেকে আল্লাহর দ্বীনের শিক্ষাদানকারী  ঘোষণা করা সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ!

কোরান সর্বাবস্থায় সন্দেহ করতে শেখায়। শয়তান হল একটি ছোট্ট কণ্ঠ যা আমাদের মনে ক্রমাগত ফিসফিস করে (সূরা 114)। এর লক্ষ্য হল আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া এবং সেই সাথে সত্য থেকে। শয়তান গপ্প দ্বারা আল্লাহর বাণীকে (বুখারি অর্থে) ধূপধূনায় ধূপিত করে এবং যারা দাঁড়ি , টুপি ও  পোশাকের মধ্যে আল্লাহর জ্ঞানকে চিনতে পারে , তাদেরকে বিভ্রান্ত করে।  শয়তানের মিশন হল আল্লাহ/সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে দেয়া। 

সত্য বনাম মিথ্যা। কোরান কখনোই ইসলামকে মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর সংগ্রাম হিসেবে উপস্থাপন করেনি। এটি গগ এবং মাগোগদের মধ্যে একটি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস। শয়তানের উদ্দেশ্য হল সত্যকে বিভ্রান্ত করা এবং ঘটনাক্রমে, মিথ্যার নামে ভাল কাজ হলে, সে তা প্রচারের জন্য ব্যবহার করে। তার মিথ্যা প্রচারের জন্য সাময়িকভাবে দরিদ্রদের খাওয়ানোর প্রয়োজন হলে, শয়তান দান খয়রাত প্রচার করতে দ্বিধা করবে না। কোরান নাস্তিক এবং মূর্তিপূজারীরা ভাল কাজ করতে পারে তা স্বীকার করার সাথে , এটাও নির্দিষ্ট করে যে তাদের ভাল কাজগুলিকে বিবেচনায় নেওয়া হবে না (উদাহরণস্বরূপ 3-22 এবং 6-88)। মিথ্যার নামে ভাল কাজ মিথ্যাকে শক্তিশালী করে এবং সর্বদাই শেষ পর্যন্ত মন্দের জন্ম দেয়। রাজনীতিবিদরা এটি ভাল করেই জানেন এবং কোরান বিশ্বাসীদেরকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে দাতব্য গ্রহণ করতে নিষেধ করে (ওহিলা লি গাইর আল্লাহ: 5-3, 6-145 ,16-115)। কোরান বিশ্বাসীদেরকে তাদের বিশ্বাসকে অন্যের আস্থা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করতে বলে (16-92; 16-94) এবং বড়াইপূর্ণ/ভানপূর্ণ দাতব্যের (2-264,4-38) নিন্দা করে।

আস্তিক যখন কোরান পড়ে, তখন তাকে শয়তানের মুখোমুখি হতে হয় অর্থাৎ কে জানে কোথা থেকে পাওয়া কোরানের ব্যাখ্যা দাবিদার এই সব গপ্প , গুজব , চুটকি এবং উপাখ্যানের এই নোংরা "সংস্কৃতি" সামনে চলে আসে। কোরান বুঝার জন্য এই মিথ্যার পাহাড়ের উপর নির্ভর করা শয়তানকে রব হিসাবে ভুল করার শামিল। এটা আজকের মুসলমানদের ইসলাম , যারা  জাক্কুম গাছকে গান্ডেপিন্ডে গিলে খেয়েছে। শয়তান বাস্তবিক কারণে প্রতীকী সত্তা হলেও ধর্মীয় পণ্ডিত, দার্শনিক, বিশ্বাসী এবং চিন্তাবিদদের দ্বারা নির্মিত ইসলামি সংস্কৃতির মিথ্যার ম্যাগমা (জলন্ত গলিত লাভা)। 

হিকমা (জ্ঞান) শব্দটি কোরানে বহুবার উল্লিখিত হয়েছে যেমনটি নবী ও রসূলদের দ্বারা শেখানো হয়েছে। শয়তান এই শব্দটিকে একটি বিপরীত অর্থের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে তার হাদীসের বইগুলিকে অন্ধ বিশ্বাসের জন্য। প্রজ্ঞা হল এমন একজনের মনের অবস্থা যে জটিল বাস্তবতা এবং একাধিক অর্থ বুঝতে শেখে। মোল্লা/ঋষিরা পণ্ডিত/স্কলার নন। জ্ঞানী ব্যক্তিই কেবল চিন্তা করতে এবং অনুধাবন করতে জানে। তিনি জানেন কিভাবে দাঁড়ি টুপি পোষাকে ঢাকা চেহারা কাটিয়ে উঠতে হয় এবং যখন তিনি শেখের পোশাক পরেন তখনও নির্বুদ্ধিতার সাথে শয়তানকে অনুসরণ করেন না।

"তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? ৪৭:২৪"

"এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।৩৮:২৯"

মুহাম্মদ আল্লাহর আয়াত নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে শিখিয়েছিলেন , কারণ বিখ্যাত আয়াত 3-7 ইঙ্গিত করে যে মুহাম্মদ নিশ্চিততার সাথে আয়াতের অর্থ জানতেন না। এই চিন্তা-কেন্দ্রিক জ্ঞানই শয়তান দমন করেছে ইসলাম থেকে। আজকের ধার্মিক মুসলমান  এক চিন্তাহীন এবং প্রজ্ঞাহীন মানুষের নমুনা। যে পূর্ববর্তীদের তাফসিরের বাইরে নিজের জন্য নুতন করে চিন্তা ভাবনা করা নিষিদ্ধ করেছে এবং সেই শয়তানের জম্বি/ ভ্যাবাগঙ্গারাম হয়ে উঠেছে , যে শয়তান হিকমার /প্রজ্ঞার নামে তার মাথার মধ্যে গোবর ঢুকিয়েছে। 

শয়তানের নিকট থেকে  যে কোরানের ব্যাখ্যা গ্রহন করেছে , সে কিছুই বোঝে না। শুধু তাই নয় বরং সে দ্রুতই মূর্খ  ও মূর্খ আচার-অনুষ্ঠানে তৈরি ধর্মে নিজেকে আবিস্কার করে। সে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে সামনের মাটিতে আধ্যাত্মিকতা খুঁজে পায় এবং বিশ্বাস করে যে পৃথিবী নামক একটি বৃহৎ গোলাকার বলের উপর থাকাকালীন সুদুর মক্কার একটি বড় কিউবের / কাবার দিকে লক্ষ্য রাখতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘ দূরত্বে মেঘের মধ্যে তার লক্ষ্য হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তার লক্ষ্য সরাসরি সামনে দাড়ানো নামাজির নিতম্বের কাছাকাছি পরিসরে প্রবেশ করে।  মহাবিশ্বের প্রভুর কথা জানিনা , তার সামান্য এই কৌতুকে অনেকেই হাসতে হাসতে লাল হয়ে যাচ্ছে।

অনেকে আছেন যারা  সালাত , সওম ও হজের অনুশীলন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চালু রাখেন। কিন্তু আল্লাহকে বোকা বানানো সহজ নয়। দুর্ভাগ্যবশত  যখন তারা তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি হারাতে শুরু করে তখন তারা জ্ঞানের পথ আবিষ্কার করবে না। তারা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে যারা চিন্তা করে না বা চিন্তা করেনি। তাদের মন জাক্কুম গাছ থেকে পরিপূর্ণভাবে পুষ্ট হবে। সবচেয়ে "ধার্মিক" ব্যক্তিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাতনী মক্কাতে (ভয়াবহ যুদ্ধের ময়দানের উদরে 48-24) নিজেদের নিক্ষেপ করার জন্য ইয়াথরিবের(33-13) মধ্য দিয়ে যাবে। তারা জান্নাতে প্রবেশের জন্য শয়তান কতৃক অমূলক হিসাবে উপস্থাপন করা ছোট রেসিপিগুলির প্রতি অনুরাগী হয়ে ওঠে। (হুজুরদের বর্ণীত বিভিন্ন আমল , দোয়ার রেসিপি , যেগুলো দিনে কয়েকবার করলে বা পড়লে জান্নাত নিশ্চিত)। তার ব্রেনের নিউরনগুলিকে কাজ করাতে অক্ষম অতি-ধার্মিক গগ (গগ = মিথ্যা মুক্তা) তার জীবনের শেষ দিনগুলি কাটিয়ে দেবে শয়তানকে হাসাতে  হাসাতে  তার আঙ্গুলের মধ্যে মিথ্যা মুক্তো গুনে এই বিশ্বাসে যে সে আল্লাহর পথে সাঁতার কাটছে (তাসবিহ-ইউসাব্বিহু ,আরবি সাবাহা মানে সাঁতার কাটা)। 

শয়তানের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে বিভ্রান্ত হয়ে, সে নিজেকে জান্নাতের দরজার সামনে আছে বলে বিশ্বাস করে জাহান্নামের দরজার সামনে উপস্থিত হবে এবং তার একমাত্র আশ্রয় হবে আল্লাহর ক্ষমা।

“৬:২১-তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে বা তার আয়াতকে মিথ্যা বলে? জালেমরা সফল হবে না। 

৬:২২-এবং যেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্র করব, তখন যারা শিরক করবে তাদের বলব: তাহলে তোমাদের শরীকরা কোথায় আছে যাদেরকে তোমরা দাবি করেছিলে?

৬:২৩- অতঃপর তাদের জন্য একমাত্র অজুহাত অবশিষ্ট থাকে এই বলে: "আমাদের প্রভু আল্লাহর শপথ!" আমরা কখনই সহযোগী ছিলাম না”।

৬:২৪- দেখ কিভাবে তারা নিজেদের মিথ্যা কথা বলে! আর তারা যা উদ্ভাবন করেছে তা কিভাবে পরিত্যক্ত হয়!

৬:২৫ তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা আপনার কথা শুনতে আসে, অথচ আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি যাতে একে না বুঝে এবং তাদের কানে বোঝা ভরে দিয়েছি। যদি তারা সব আয়াত/ নিদর্শন অবলোকন করে তবুও সেগুলো বিশ্বাস করবে না। আর যখন তারা তোমার সাথে তর্ক করতে আসে, তখন যারা প্রত্যাখ্যান করে, তারা বলে, এগুলো তো পূর্ববর্তীদের কিংবদন্তী মাত্র। “


(দ্বৈত অর্থে সক্ষম পাঠকদের জন্য, অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে দুটি ধরণের প্রত্যাখ্যান রয়েছে, নাস্তিকদের দ্বারা পাঠ্য এবং মূর্তিপূজারীদের দ্বারা অর্থ। উভয়ে একত্রিত হয়ে বলে যে এগুলো পুরানো গল্প)


কোরানের আবির্ভাব মানুষের প্রকৃতিতে কোনই পরিবর্তন করেনি। আল্লাহর ইচ্ছায় শয়তান তার মূর্খ আচারগুলি পুনরায় চালু করেছিল। আল্লাহর পথকে আবার ধর্মে রূপান্তরিত করা হয়েছিল , অর্থাৎ মূর্খ আচার-অনুষ্ঠানের মাঝেই মানুষের আধ্যাত্মিকতাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছিল। 

ইসলাম কোন ধর্ম নয়। এটি একটি প্রজ্ঞা এবং একটি পথ যা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর কালাম এবং একজন মহান শিক্ষকের শিক্ষার উপর কেন্দ্রীভূত। ইসলাম জ্ঞানের প্রতি জ্ঞানীর এবং চিন্তার প্রতি মুক্তচিন্তকের ঋণ (দ্বীন)। (دين দ্বীন মানে ঋন।)

https://translate.google.com/?sl=bn&tl=ar&text=ঋন&op=translate 

যে কোরান পড়ে তার উপরে আল্লাহর জ্ঞান (ওহী) যখন নাযিল হয় , সেই ওহী সে চিনবে কিনা তা তারই উপর নির্ভর করে।

সালাত হল তার কথার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপনের একটি কাজ। এই সংযোগের সময়  আয়াত ও ব্রেনের আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে প্রতিটি বিশ্বাসী যার যার মতো আল্লাহর চিত্র নিজস্ব কল্পনায় আনে এবং কোরানের শিক্ষা অন্তরে ধারন করে। বস্তুজগতের সত্যটি যেমন আমাদের প্রত্যেকের দ্বারা আলাদাভাবে উপলব্ধি করা হয় দুটি ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে যা আমাদের চোখ হিসাবে কাজ করে, তেমনিভাবে আল্লাহর সত্যটি তার নিজের আত্মার মাধ্যমে সংযুক্ত প্রত্যেকের সাথে আলাদাভাবে প্রকাশিত হবে। শুধুমাত্র আল্লাহর শিষ্যরা রয়েছে তার জ্ঞানের পরিবেষ্টন ছাড়াই। যারা আল্লাহর সাথে যুক্ত , তারা বাস্তব জগতের দাড়ি এবং পাগড়ি দিয়ে দুষ্ট সেই ভাইরাসকে চিনতে শিখে , যারা জান্নাতে যাওয়ার জন্য মিথ্যা রাস্তা দেখায়। 

যাকাত (শুদ্ধিকরন) আদায়ের জন্য সালাত ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ শয়তানের হয়ে কাজ করা সমস্ত ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি দূর করার মাধ্যমে আত্মার শুদ্ধিকরণ করে সালাত। 


কোরান পড়ার (তিলাওয়াত) সাথে আল্লাহর জ্ঞান (ওহী) অবতরন (নুযুল) করে। 

যতদিন কোরান তিলাওয়াত করা হবে ততদিন ওহী নাজিল হতে থাকবে এবং

এই অবিরাম নাজিল কুরআন ক্রমাগত নতুন অর্থ নিয়ে আসে সেই হৃদয়ের জন্য , যে 

হৃদয় এটি গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত। 


যারা কোরান পড়েন তারা বোঝেন নবী রসূলগণ সুপারম্যান নন। আল্লাহর রসূলগণ একথা বলেনঃ

১৪:১১ তাদের রসূলগণ তাদেরকে বললেন, “নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের মতই মানুষ। কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত  তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়। আর আল্লাহর উপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত।

আম্বিয়ারা (নবীরা) এমন মানুষ যারা খুব বড় ভুল করতে সক্ষম। আম্বিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভুলের অলরাউন্ড চ্যাম্পিয়ন সম্ভবত আমাদের প্রিয় ইব্রাহিম। এখানে তিনিই, যিনি একটি সাধারণ স্বপ্ন অনুসরণ করে, তার নিজের ছেলেকে জবাই করতে যান।


যদি কেউ আজকাল একটি স্বপ্ন অনুসরণ করে তার একটি সন্তানকে জবাই করার উদ্যোগ নেয় , তবে হয় তাকে অবিলম্বে বন্দী করা হবে নতুবা হেমায়েতপুরে পাগলা গারদে পাঠানো হবে। 






No comments:

Post a Comment