Friday, October 8, 2010

হালাল ও হারাম

কতবার এই কথাটি শুনেছেন: "এইটা হারাম , ঐটা হালাল!"

প্রতিটি মুসলমানকে প্রতিদিন না হলেও প্রায়-ই এই কথাগুলো কয়েকবার শোনা লাগে। আপনি এটা স্কুলে শুনবেন , টিভি তে শুনবেন , বাপ মার কাছে শুনবেন , মোল্লা মৌলভীর কাছে শুনবেন এবং এই ব্লগ ও পিছিয়ে নেই হালাল হারামের উপরে জ্ঞাণ দিতে।

হালাল হারাম নিয়ে বাঙালী মুসলমানদের খুতখুতানি অপরিসীম। তাইতো পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুক চেষ্টা করে হালাল খাইতে। টিভিতে এমন প্রশ্নও শোনা যায়: "যে মাইক্রোওয়েভে শুয়োরের মাংস গরম করা হয়েছে, সেটাতে খাবার গরম করলে হালাল হবে কি না?"

হালাল ও হারাম শব্দ দুটি আরবি শব্দ এবং কোরানে বহুবার এই শব্দ দুটি ব্যাবহৃত হয়েছে। আল্লাহ যখন কোন কিছুকে(কার্য্য, খাদ্য, বস্তু) হারাম/নিষিদ্ধ করেন , তখন তা সকল মুসলমানের জন্য অবশ্য পালনীয়। কোন ওজর আপত্তি করার সুযোগ নেই। আল্লাহ ছাড়া আর কারো কোন কিছুকে হারাম ঘোষনা করার এখতিয়ার নেই।

১৬:১১৬ তোমাদের মুখ থেকে সাধারনতঃ যেসব মিথ্যা বের হয়ে আসে তেমনি করে তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে বল না যে, এটা হালাল এবং ওটা হারাম। নিশ্চয় যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে, তাদের মঙ্গল হবে না।


আমাদের মোল্লা মৌলভীরা বা আমরা নিজেরাই কখনো কি চিন্তা করি , যেটাকে আমরা হালাল বা হারাম বলছি , সে ব্যাপারে কোরানিক নির্দেশ আছে কিনা। এমনকি আমাদের নবী মুহম্মদকে ও কোন কিছু হারাম ঘোষনা দেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়নি। একবার নিজের স্ত্রীদের খুশি করার জন্য হালালকে হারাম করার জন্য তিনি আল্লাহ কতৃক তিরষ্কৃত হয়েছেন।

৬৬:১ হে নবী, আল্লাহ আপনার জন্যে যা হালাল করছেন, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে খুশী করার জন্যে তা নিজের জন্যে হারাম করেছেন কেন? আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়।


কোরানে পরিস্কার নির্দেশ দেয়া আছে হালাল ও হারাম কি কি। হারামের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কোরানে যেগুলোকে হারাম বলা হয়েছে , সেগুলো বাদে আর সবকিছুই হালাল। এই ব্লগে অনেকের ধারনা কুকুরের মাংস হারাম , সে কারনে প্রায়-ই দেখি কুকুরের রোস্ট দিয়ে কাউকে খেতে বলা হচ্ছে। এটা ঠিক না। কুকুর যে হারাম , একথা কোরানের কোথাও লেখা নেই। এটা রুচীর ব্যাপার। রুচী হলে খাবে নইলে নয়, কিন্তু হারাম বলা যাবে না। যারা হারাম বলে তাদের জন্য -

১০:৫৯ বল, তোমরা কি দেখ না, যা কিছু আল্লাহ তোমাদের জন্য রিযিক হিসাবে অবতীর্ণ করেছেন, তোমরা সেগুলোর মধ্য থেকে কোনটাকে হারাম আর কোনটাকে হালাল সাব্যস্ত করেছ। বল, তোমাদের কি এটা করতে আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন, নাকি আল্লাহর উপর অপবাদ আরোপ করছ?


আর যারা সাজ সজ্জা , গান বাজনা , ভাস্কর্য ইত্যাদিকে হারাম বলে , তাদের জন্য -

৭:৩২ আপনি বলুনঃ আল্লাহর সাজ-সজ্জাকে, যা তিনি বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্রবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছে? আপনি বলুনঃ এসব নেয়ামত আসলে পার্থিব জীবনে মুমিনদের জন্যে এবং কিয়ামতের দিন খাঁটিভাবে তাদেরই জন্যে। এমনিভাবে আমি আয়াতসমূহ বিস্তারিত বর্ণনা করি তাদের জন্যে যারা বুঝে।


৩৪:১৩তারা সোলায়মানের ইচ্ছানুযায়ী দুর্গ, ভাস্কর্য, হাউযসদৃশ বৃহদাকার পাত্র এবং চুল্লির উপর স্থাপিত বিশাল ডেগ নির্মাণ করত। হে দাউদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা সহকারে তোমরা কাজ করে যাও। আমার বান্দাদের মধ্যে অল্পসংখ্যকই কৃতজ্ঞ।


নবী সোলায়মানের জন্য যদি ভাস্কর্য হারাম না হয় , তো এখনো হারাম হওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা।

No comments:

Post a Comment