সুরা ফাতেহার ১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছেঃ যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তা’ আলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
আপনার আপত্তি হলো , আল্লাহ কেন রাজা বাদশাহ বা মানুষের মতো প্রশংসা পেয়ে প্রচন্ড খুশি হন? আল্লাহ প্রশংসা পেয়ে প্রচন্ড খুশি হোন এটা আপনি জেনেছেন বা এই স্বীদ্ধান্তে আপনি উপনীত হয়েছেন একটি শোনা কথার উপরে ভিত্তি করে। কথাটা হলো – “কেউ যদি একবার আলহামদুলিল্লাহ কথাটি উচ্চারণ করেছেন, তখনই তাকে ৭০ রাকাত নফল নামাজের ছওয়াব প্রদান করা হয়।” এমন কথা কোরানের কোথাও লেখা নেই। আপনি যখন কোরানের আয়াত ১:১ অনুসারে প্রশ্ন তুলেছেন , তখন সত্য জানার খাতিরে লোকমুখের শোনা কথার উপরে নির্ভর না করে আপনার কি উচিৎ ছিলনা কোরানে খুজে দেখা ? আদৌ কি আল্লাহ প্রচন্ড খুশি হন? সারা কোরান খুজেও খুশি হওয়ার স্বপক্ষে কোন আয়াত পেলাম না । যেটা পেলাম –
35:15 O people, you are the ones who need GOD, while GOD is in no need for anyone, the Most Praiseworthy
হে মানুষ, তোমাদেরি আল্লাহকে দরকার; তার কাউকে দরকার নেই (অভাবমুক্ত), প্রশংসিত।
29:6 Hence, whoever strives hard [in God’s cause] does so only for his own good: for, verily, God does not stand in need of anything in all the worlds!যে কষ্ট স্বীকার করে, সে তো নিজের জন্যেই কষ্ট স্বীকার করে। আল্লাহ বিশ্ব বাসী থেকে বে-পরওয়া।
আল্লাহর কাছে যদি মানুষের ও কোন কিছুর দরকার না থাকে , তাহলে তো প্রশংসার দরকার ও না থাকারি কথা। যুক্তি তো তাই বলে।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে , সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য একথাটা মুত্তাকীদের শেখানোর দরকার কেন পড়ল?
এর উত্তর জানার আগে আপনার উল্লিখিত ২:২ আয়াত নিয়ে আপনার সন্দেহগুলো নিয়ে আলোচনা দরকার।
“ইহা সেই কিতাব; ইহাতে কোন সন্দেহ নাই, মুত্তাকীদের জন্য ইহা পথ-নির্দেশক ।”
আপনি ঠিকি ধরেছেন , কোরান শুধুই মুত্তাকীদের জন্য। যে সকল মোল্লা দাবী করে কোরান বিশ্ব মানবতার পথ প্রদর্শক , তাদের দাবী যে ভুল ও বানোয়াট , তার বড় প্রমান এই আয়াতটি। এখন জানা দরকার মুত্তাকী , মুমেন বা মুসলমান কারা? তাহলে আপনার অনেক প্রশ্ন বা সন্দেহের জবাব আপনি নিজেই খুজে পাবেন।
মুত্তাকীদের পরিচয় ২:৩,৪ আয়াতে দেয়া আছে।
“যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে এবং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে সেসব বিষয়ের উপর যা কিছু তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেসব বিষয়ের উপর যা তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর আখেরাতকে যারা নিশ্চিত বলে বিশ্বাস করে।”
মুমেন মানে বিশ্বাসী। কিসে বিশ্বাস ? অদেখা বিষয়, সকল আসমানি কিতাব ও আখিরাতে বিশ্বাস।
মুসলমান হলো তারাই , যারা আল্লাহ/সৃষ্টিকর্তার ( নামে কি এসে যায় , আল্লাহ , ভগবাণ ,গড , ইয়াহয়ে ইত্যাদি যে কোন নামেই ডাকা যায়) কাছে আত্মসমর্পন করে তার নির্দেশ পালনের মাধ্যমে। এ কারনেই সকল রসুলদের অনুসারীদেরকে কোরানে মুসলমান বলা হয়েছে। শুধু কোরান/ মুহম্মদের অনুসারীরাই মুসলমান এমন দাবি কোরান অনুযায়ী ঠিক নয়। মুসলমান হওয়ার জন্য ধর্মান্তর নিষ্প্রয়োজন! ধুতি, পৈতা, প্যান্ট-সার্ট ত্যাগ করে নুনু কাটা, দাড়ি রাখা, যুব্বা-কাব্বা, স্যালোয়ার কামিজ পরা , সুরমা, মেহদি লাগানো অপ্রয়োজন। কারণ আল্লাহ বয়স, রূপ-রস চেহারা পিয়াসী নন! এমন কি পশু-পক্ষি, আগুন-পানি, আলো-বাতাসো মানুষের রূপ চেহারায় আকৃষ্ঠ হয়না।
কোরান শুধুমাত্র মুত্তাকীদের জন্য। যারা মুত্তাকী না , তাদের কাছে কোরান মিথ্যা মনে হবেই। এর বিরুদ্ধে যুক্তি তর্কেরো অভাব হবে না। যার বড় প্রমাণ আপনার এই পোস্ট। আপনি কি মুত্তাকী? আপনার এই পোস্ট সাক্ষ্য দেয় , কোরান সত্য।