Thursday, October 6, 2011

হাদীস ও সুন্নাহ। (৯ )

বুখারী ও তার সমর্থকদের দাবীর যৌক্তিকতা!!


দাবী করা হয় যে , বুখারী ১০০০ শিক্ষকের তত্বাবধানে থেকে ১৬ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে ৬ লক্ষ হাদীস সংগ্রহ , যাচাই বাছাই ও শ্রেনীভূক্ত করেন , যার ভিতরে ১ লক্ষের ও বেশি হাদীস তার মুখস্ত ছিল। তিনি হাদীস সংগ্রহ , যাচাই বাছাই ও শ্রেনীভূক্ত করার কাজটি অতি সতর্কতার সাথে করেছিলেন। যাতে কোন ভুল হাদিস তার সঙ্কলনে ঢুকে পড়তে না পারে। ফলশ্রুতিতে তিনি ৯৯% হাদীস বাদ দিয়ে মাত্র ৭ হাজারের মতো হাদীসকে সহী আখ্যা দিয়ে তার গ্রন্থে স্থান দিয়েছেন। তার এই অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য মুসলিম উম্মাহ ৫ লক্ষ ৯৩হাজার মিথ্যা হাদীসের প্রভাব থেকে রক্ষা পেয়েছে , এ জন্য তিনি অবশ্যই প্রশংসা পাওয়ার দাবীদার।

তিনি যে কত সতর্ক ছিলেন এবং কি পরিমান কষ্ট স্বীকার করেছেন তা বলে শেষ করা যাবে না। তিনি নিজে প্রতিটি হাদীসের বর্ননাকারীর বাড়িতে গিয়ে খোজ নিয়েছেন , বর্ননাকারী মদ খেতো কিনা , জীবনে কখনো মিথ্যা কথা বলেছে কিনা , তার চরিত্র কেমন , স্মরনশক্তি কেমন ইত্যাদি ইত্যাদি। এর কোন কিছুতে এতটুকু ব্যাত্যয় পেলেই তিনি সেই হাদীস ছুড়ে ফেলে দিয়েছেন। এই সকল বর্ননাকারী আবার আরবের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন। প্রতিটি বর্ননাকারীর বাড়িতে যাওয়া এত সহজ ছিল না। তখনকার দিনে প্রাইভেট প্লেন বা পাজেরো বা road sign দেয়া রাজপথ ছিলনা যে নিমেশেই তিনি পৌছে যাবেন। ফলে তাকে শত শত মাইল উট বা ঘোড়ার পিঠে করে যেতে হয়েছে। সঙ্গে নিতে হয়েছে রসদ , রাস্তার গাইড , চোর দস্যু মোকাবেলার জন্য পাইক বরকন্দাজ আরো কত কি। হয়তো বা দেখা গেছে একজনের বাড়িতে যেয়ে ফিরে আসতেই বছর শেষ।

বুখারী হয়তো করিৎকর্মা লোক ছিলেন , তার এতো সময় নাও লাগতে পারে। ধরে নিলাম প্রতিটি হাদীস সংগ্রহ , যাচাই বাছাই ও মুখস্ত করতে তার ১ ঘন্টা সময় লেগেছে। এই হিসাবে দিনে ২৪ ঘন্টা ঘুম খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে তিনি এক নাগাড়ে কাজ করলেও ৬৮ বছর লাগার কথা। তারপরে ও না হয় প্রতিটি সহী হাদীস (৭০০০) লিপিবদ্ধ করার পরে তার ওজু করে ২ রাকাত করে নফল নামাজ পড়ার কথা বাদ ই দিলাম। তার আয়ুষ্কালই ছিল ৬২ বছর।

No comments:

Post a Comment