খোলাফায়ে রাশেদীন ও হাদীস।
মূল নথিপত্রগুলো , যেমন ইবনে সা'দ (২৩০/৮৪৫), মালিক ইবনে আনাস (১৭৯/৭৯৫),
তায়ালিসি (২০৩/৮১৮), হুমায়দী (২১৯/৮৩৪) এবং ইবনে হাম্বাল (২৪১/৮৫৫) পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে খোলাফায়ে রাশেদীনের ৪ খলিফাই তাদের শাসনামলে রসূলের আদেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে হাদীস লেখা ও সঙ্কলনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিলেন।
আবুবকর , রসূলের হাদীস পুড়িয়ে ফেলার আদেশ শোনার পরে , ঠিক করতে পারছিলেন না কি করবেন। রসূলের সাথে দীর্ঘ কালীন এক সাথে থাকার সময় তিনি ৫০০ হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন কিন্তু সেই রাতে হাদীসগুলো না পোড়ানো পর্যন্ত তিনি ঘুমাতে পারেন নি।
ওমর ইবনে আল-খাত্তাব তার ছেলে আবদুল্লাহকে তারই সংগৃহিত হাদীসগুলো ধ্বংস করতে বাধ্য করেছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এমন ঘটনা ও পাওয়া যায় যে , ওমর ইবনে আল-খাত্তাব ৪ ছাহাবীকে হাদীস বলা থেকে বিরত থাকার জন্য আদেশ করেছিলেন। এরা হলেন:- ইবনে মাসুদ , আবু আল-দারদা , আবু মাসুদ আল আনসারি এবং আবু দার আল-গফ্ফারি। ওমর ইবনে আল-খাত্তাব আবু হুরায়রাকে মিথ্যাবাদি বলেছিলেন এবং তাকে এই বলে শসিয়েছিলেন যে , যদি আবু হুরায়রা রসূলের সম্পর্কে মিথ্যা হাদীস বলা থেকে বিরত না হয় , তবে তাকে তার জন্মস্থান ইয়েমেনে ফেরৎ পাঠাবেন। ওমর ইবনে আল-খাত্তাবের জীবদ্দশায় আবু হুরায়রা আর কোন হাদীস বলেন নি।
৪র্থ খলিফা আলি ইবনে আবু তালেব এক খোতবায় বলেছিলেন , " যাদের কাছে আল্লাহর রসূলের কোন হাদীস আছে , আমি তাদেরকে অনুরোধ করব বাড়ি যেয়ে সেগুলো মুছে ফেলতে। তোমাদের আগের মানব সমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের ধর্মীয় পন্ডিতদের হাদীস অনুসরন করার জন্য এবং প্রভুর বাণী পরিত্যাগ করার জন্য।"(সুত্র- সুনান আল দারামি)
আবু হুরায়রা , সর্বাধিক হাদীসের বর্ননাকারী।
আবু হুরায়রা হিজরী ৭ সালে ইয়েমেন থেকে মদিনায় আসেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তিনি রসূলের সঙ্গী হয়েছিলেন ২ বছরের ও কম সময়ের জন্য । আশ্চর্যের ব্যাপার আবু হুরায়রা বর্নীত হাদীসের সংখ্যা, আবুবকর , ওমর , আলী ও আয়েশা যারা সারা জীবন রসূলের সাথে কাটিয়েছেন, তাদের বর্নীত হাদীসের সম্মিলিত সংখ্যার চেয়ে ও বেশি। মুহাম্মদ জুবায়ের সিদ্দিকির বই হাদীস সাহিত্য থেকে জানা যায় :
১)আবু হুরায়রা ৫৩৭৪ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
২)আয়েশা ২২১০ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
৩)ওমর ৫৩৭ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
৪)আলি ৫৩৬ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
৫)আবুবকর ১৪২ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
আবু হুরায়রা বর্নীত হাদীসগুলোর বেশিরভাগি 'আহাদ' হাদীস , অর্থাৎ একজন ছাড়া আর কোন সাক্ষী নেই এই হাদীসগুলোর এবং সেই একজন হলেন আবু হুরায়রা। আয়েশা ও কিছু ছাহাবীর মতে আবু হুরায়রা রসূলের নামে বানিয়ে মিথ্যা হাদীস বলতেন সমাজে প্রতিপত্তি লাভের আশায়। মুয়াবিয়ার রাজত্বকালে সিরিয়াতে তার দরবারে থাকার সময় খলিফাকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিনি অধিকাংস হাদীস বর্ননা করেন। আবু হুরায়রা একবার তার শোতৃমন্ডলীদের বলেছিলেন , তাদেরকে উনি যে হাদীস শোনাচ্ছেন , এটা যদি ওমরের সময় ঘটত , তবে তাকে বেতের বাড়ি খেতে হোত।
আবু হুরায়রা কিছু হাদীস সন্দেহযুক্ত , কারন তার দাবী মতে ঘটনার সময় তিনি যেখানে উপস্থিত ছিলেন , সেখানে তার থাকা সম্ভব ছিল না। যেমন রসূলের মেয়ে রুকাইয়ার চিরুনি দিয়ে রসূলের চুল আচড়ানোর সময় ওসমান সম্পর্কে রসূলের মন্তব্য। রুকাইয়া মৃত্যুবরন করেন হিজরী ৩ সালে , আর আবু হুরায়রা মদিনা আসেন হিজরী ৭ সালে।
ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায়, আবু হুরায়রা মদিনা এসে ছিলেন খালি হাতে এবং তার ভরনপোষন চলত দান ও ভিক্ষার ওপরে নির্ভর করে। এ ব্যাপারে আয়েশার একটি বিখ্যাত হাদীস ও আছে।(সুত্র-ইবনে কুতিবা আল-দিনোরির 'তাওইল মুখতালাফ আল হাদিথ বই)
খলিফা ওমরের সময় তাকে বাহরাইনের আমীর করে পাঠানো হয় এবং ২ বছর আমীর থাকার সুবাদে তিনি প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হয়ে যান। একারনে ওমর তাকে ফিরিয়ে আনেন ও বলেন : "তুমি , আল্লাহর শত্রু , তুমি আল্লাহর সম্পদ চুরি করেছ। আমি যখন তোমাকে বাহরাইনের আমীর করে পাঠিয়েছিলাম , তখন তোমার পায়ে এক জোড়া জুতা ও ছিল না। তুমি কোথা থেকে এত টাকা (৪০,০০০ দিরহাম??) পেয়েছ? ইতিহাস বলে ওমর তার কাছ থেকে ১০,০০০ দিরহাম উদ্ধার করেন। আবু হুরায়রা ২০,০০০ দিরহামের কথা স্বীকার করেছিল।
মূল নথিপত্রগুলো , যেমন ইবনে সা'দ (২৩০/৮৪৫), মালিক ইবনে আনাস (১৭৯/৭৯৫),
তায়ালিসি (২০৩/৮১৮), হুমায়দী (২১৯/৮৩৪) এবং ইবনে হাম্বাল (২৪১/৮৫৫) পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে খোলাফায়ে রাশেদীনের ৪ খলিফাই তাদের শাসনামলে রসূলের আদেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে হাদীস লেখা ও সঙ্কলনের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিলেন।
আবুবকর , রসূলের হাদীস পুড়িয়ে ফেলার আদেশ শোনার পরে , ঠিক করতে পারছিলেন না কি করবেন। রসূলের সাথে দীর্ঘ কালীন এক সাথে থাকার সময় তিনি ৫০০ হাদীস সংগ্রহ করেছিলেন কিন্তু সেই রাতে হাদীসগুলো না পোড়ানো পর্যন্ত তিনি ঘুমাতে পারেন নি।
ওমর ইবনে আল-খাত্তাব তার ছেলে আবদুল্লাহকে তারই সংগৃহিত হাদীসগুলো ধ্বংস করতে বাধ্য করেছিলেন। ইসলামের ইতিহাসে এমন ঘটনা ও পাওয়া যায় যে , ওমর ইবনে আল-খাত্তাব ৪ ছাহাবীকে হাদীস বলা থেকে বিরত থাকার জন্য আদেশ করেছিলেন। এরা হলেন:- ইবনে মাসুদ , আবু আল-দারদা , আবু মাসুদ আল আনসারি এবং আবু দার আল-গফ্ফারি। ওমর ইবনে আল-খাত্তাব আবু হুরায়রাকে মিথ্যাবাদি বলেছিলেন এবং তাকে এই বলে শসিয়েছিলেন যে , যদি আবু হুরায়রা রসূলের সম্পর্কে মিথ্যা হাদীস বলা থেকে বিরত না হয় , তবে তাকে তার জন্মস্থান ইয়েমেনে ফেরৎ পাঠাবেন। ওমর ইবনে আল-খাত্তাবের জীবদ্দশায় আবু হুরায়রা আর কোন হাদীস বলেন নি।
৪র্থ খলিফা আলি ইবনে আবু তালেব এক খোতবায় বলেছিলেন , " যাদের কাছে আল্লাহর রসূলের কোন হাদীস আছে , আমি তাদেরকে অনুরোধ করব বাড়ি যেয়ে সেগুলো মুছে ফেলতে। তোমাদের আগের মানব সমাজ ধ্বংস হয়ে গেছে তাদের ধর্মীয় পন্ডিতদের হাদীস অনুসরন করার জন্য এবং প্রভুর বাণী পরিত্যাগ করার জন্য।"(সুত্র- সুনান আল দারামি)
আবু হুরায়রা , সর্বাধিক হাদীসের বর্ননাকারী।
আবু হুরায়রা হিজরী ৭ সালে ইয়েমেন থেকে মদিনায় আসেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। তিনি রসূলের সঙ্গী হয়েছিলেন ২ বছরের ও কম সময়ের জন্য । আশ্চর্যের ব্যাপার আবু হুরায়রা বর্নীত হাদীসের সংখ্যা, আবুবকর , ওমর , আলী ও আয়েশা যারা সারা জীবন রসূলের সাথে কাটিয়েছেন, তাদের বর্নীত হাদীসের সম্মিলিত সংখ্যার চেয়ে ও বেশি। মুহাম্মদ জুবায়ের সিদ্দিকির বই হাদীস সাহিত্য থেকে জানা যায় :
১)আবু হুরায়রা ৫৩৭৪ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
২)আয়েশা ২২১০ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
৩)ওমর ৫৩৭ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
৪)আলি ৫৩৬ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
৫)আবুবকর ১৪২ টি হাদীস বর্ননা করেছেন।
আবু হুরায়রা বর্নীত হাদীসগুলোর বেশিরভাগি 'আহাদ' হাদীস , অর্থাৎ একজন ছাড়া আর কোন সাক্ষী নেই এই হাদীসগুলোর এবং সেই একজন হলেন আবু হুরায়রা। আয়েশা ও কিছু ছাহাবীর মতে আবু হুরায়রা রসূলের নামে বানিয়ে মিথ্যা হাদীস বলতেন সমাজে প্রতিপত্তি লাভের আশায়। মুয়াবিয়ার রাজত্বকালে সিরিয়াতে তার দরবারে থাকার সময় খলিফাকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিনি অধিকাংস হাদীস বর্ননা করেন। আবু হুরায়রা একবার তার শোতৃমন্ডলীদের বলেছিলেন , তাদেরকে উনি যে হাদীস শোনাচ্ছেন , এটা যদি ওমরের সময় ঘটত , তবে তাকে বেতের বাড়ি খেতে হোত।
আবু হুরায়রা কিছু হাদীস সন্দেহযুক্ত , কারন তার দাবী মতে ঘটনার সময় তিনি যেখানে উপস্থিত ছিলেন , সেখানে তার থাকা সম্ভব ছিল না। যেমন রসূলের মেয়ে রুকাইয়ার চিরুনি দিয়ে রসূলের চুল আচড়ানোর সময় ওসমান সম্পর্কে রসূলের মন্তব্য। রুকাইয়া মৃত্যুবরন করেন হিজরী ৩ সালে , আর আবু হুরায়রা মদিনা আসেন হিজরী ৭ সালে।
ইসলামের ইতিহাসে পাওয়া যায়, আবু হুরায়রা মদিনা এসে ছিলেন খালি হাতে এবং তার ভরনপোষন চলত দান ও ভিক্ষার ওপরে নির্ভর করে। এ ব্যাপারে আয়েশার একটি বিখ্যাত হাদীস ও আছে।(সুত্র-ইবনে কুতিবা আল-দিনোরির 'তাওইল মুখতালাফ আল হাদিথ বই)
খলিফা ওমরের সময় তাকে বাহরাইনের আমীর করে পাঠানো হয় এবং ২ বছর আমীর থাকার সুবাদে তিনি প্রচুর ধনসম্পদের মালিক হয়ে যান। একারনে ওমর তাকে ফিরিয়ে আনেন ও বলেন : "তুমি , আল্লাহর শত্রু , তুমি আল্লাহর সম্পদ চুরি করেছ। আমি যখন তোমাকে বাহরাইনের আমীর করে পাঠিয়েছিলাম , তখন তোমার পায়ে এক জোড়া জুতা ও ছিল না। তুমি কোথা থেকে এত টাকা (৪০,০০০ দিরহাম??) পেয়েছ? ইতিহাস বলে ওমর তার কাছ থেকে ১০,০০০ দিরহাম উদ্ধার করেন। আবু হুরায়রা ২০,০০০ দিরহামের কথা স্বীকার করেছিল।
No comments:
Post a Comment