Saturday, October 1, 2011

হাদীস ও সুন্নাহ (৩)

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি।

ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। ফলে একি ঘটনা বারে বারে ঘটে। ইহুদীরা মূসার মৃত্যুর শত শত বছর পরে মিসনাহ (হাদীস, নবীর কথা) ও গেমারাহ (সুন্নাহ , নবীর কর্ম) আবিস্কার করে । এর ভিতরে পরবর্তি কালের রাব্বীদের বানানো বিভিন্ন আইন অন্তর্ভুক্ত হয়। এখনকার ইহুদীদের জন্য আল্লাহ প্রেরিত তাওরাতের পাশাপাশি মিসনাহ ও গেমারাহ অনুসরন করা অত্যাবশ্যক , অর্থাৎ মানুষ রচিত মিসনাহ ও গেমারাহ কালের আবর্তে তাদের ধর্মেরই একটি অংশ হয়ে গিয়েছে।

খৃষ্টানদের বাইবেলের গসপেল ইমাম ম্যথিউ , ইমাম মার্ক , ইমাম লুক ও ইমাম জনের লেখা। ইতিহাস বলে এই ৪ জনের কেউ কখনো যীশুকে চোখে দেখেন নি। অথচ দেখুন নিউটেস্টামেন্টের ভিত্তি এই ৪ জনের লেখা বইয়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। যে ট্রিনিটি খৃষ্টান ধর্মবিশ্বাসের মূল (কলেমা), যা না মানলে খৃষ্টান হওয়াই যায় না , জানেন কি ট্রিনিটির কোন অস্তিত্বই ছিল না খৃষ্টান ধর্মের প্রথম ৩০০বছর। ৩২৫ খৃষ্টাব্দে নিসেন শহরে প্যগান রোমান রাজা কনস্টান্টিনের অধীনে তৎকালীন পোপ ও বিশপদের কাউন্সিলে প্রথম ট্রিনিটি ধারনার সৃষ্টি ও র‌্যটিফিকেশন করা হয়।

অনুরুপ ইসলামের প্রথম ২০০ বছর হাদীস বা হাদীসের উপর প্রতিষ্ঠিত শরীয়া আইনের কোন অস্তিত্বই ছিল না। শরীয়া আইনের ভিত্তি রচনা করেন বিখ্যাত ইমাম শাফেয়ী ,হিজরি ২০৪/৮২০ খৃষ্টাব্দে। এরি পর পর আবির্ভাব হলো বিখ্যাত হাদীস গ্রন্থগুলো, সহী সেত্তাহ বা ছয়টি বইয়ের। এগুলোর সঙ্কলক হলেন ইমাম বুখারি(২৫৬/৮৭০) , মুসলিম (২৬১/৮৭৫), আবু দাউদ (২৭৫/৮৮৮), তিরমিজি (২৭৯/৮৯২), ইবনে মাযা (২৭৩/৮৮৬) এবং আল নাসাঈ (৩০৩/৯১৫)। লক্ষ্য করুন , এদের কেউই আমাদের নবীকে জীবিত দেখেন নি বা এই হাদীসগুলোর কোন জীবিত সাক্ষী থাকা নবীর মৃত্যুর ২৫০ বছর পরে সম্ভব ছিল না। অনেকে প্রশ্ন করেন , কোরান মানতে পারলে , হাদীস মানতে অসুবিধা কোথায়? তারা ভুলে যান , কোরানের বর্তমান ভার্ষান ওসমানের সময় যখন সঙ্কলন হয় তখনো , বহু হাফেজ ও সাহাবী বেচে ছিলেন , যারা সরাসরি নবীর কাছ থেকে কোরান শিখেছিলেন। সুতরাং ভুল কিছু কোরানে ঢোকানো সম্ভব ছিল না। কিন্তু হাদীসের বেলা তা খাটেনা।

তাওরাত ও ইন্জিলের মতোই হাদীস ও সুন্নাহ ইসলাম ধর্মের অংশ হয়ে উঠেছে।

সুরা মায়েদাহ(৫) আয়াত ৬৭
হে রসূল, পৌছে দিন আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে। আর যদি আপনি এরূপ না করেন, তবে আপনি তাঁর পয়গাম কিছুই পৌছালেন না। আল্লাহ আপনাকে মানুষের কাছ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে পথ প্রদর্শন করেন না।

এখানে হাদীস ও সুন্নাহর কথা বলা হয় নি। আল্লাহর পয়গাম কোরানকেই মানুষের কাছে পৌছানোর কথা বলা হয়েছে। (বালাগা)।

No comments:

Post a Comment