Sunday, December 26, 2021

আল্লাহর সাথে মুসার কথোপকথন

 প্রচলিত বিশ্বাস হল মুসা সরাসরি আল্লাহর সাথে কথা বলেছিলেন। যেমনটি আগের পোস্টে বলেছি কোরানে আল্লাহ সম্পর্কিত সবকিছুই রূপক , তেমনি আল্লাহর সাথে মুসার কথোপকথন ও রূপক। মুসা আমাদের মতোই মানুষ ছিলেন এবং কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। দেখুন নিচের আয়াত-


৪২:৫১ 

‎وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ أَن يُكَلِّمَهُ اللَّهُ إِلَّا وَحْيًا أَوْ مِن وَرَاءِ حِجَابٍ أَوْ يُرْسِلَ رَسُولًا فَيُوحِيَ بِإِذْنِهِ مَا يَشَاءُ ۚ إِنَّهُ عَلِيٌّ حَكِيمٌ

কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে অথবা তিনি কোন দূত প্রেরণ করবেন, অতঃপর আল্লাহ যা চান, সে তা তাঁর অনুমতিক্রমে পৌঁছে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বোচ্চ প্রজ্ঞাময়।


আল্লাহ অবশ্যই মুসার সাথে কথা বলেছিলেন, তবে সরাসরি নয়। আল্লাহ মুসার সাথে ওহীর মাধ্যমে কথা বলেছিলেন , যেমনটি অন্যান্য রাসুল ও সাধারন মানুষের সাথে (মুসার মা) বলে থাকেন। আল্লাহর সাথে মুসার কথোপকথন যে রূপক , তা বিশ্লেষন করার আগে চলুন কোরানের কিছু আয়াত দেখি যা পড়ে আমরা জানতে পারব আল্লাহ মুসার সাথে সরাসরি নাকি ওহীর মাধ্যমে কথা বলেছিলেন -


কোরানে ৩টি সূরায় (সূরা২০ ত্বোয়া-হা, সূরা২৭ নমল, সূরা২৮ আল কাসাস) আল্লাহর সাথে মুসার একই কথোপকথন নিয়ে বিশদ বর্ণনা আছে। আয়াতগুলো পড়লে মনে হবে আল্লাহ সরাসরি মুসার সাথে কথা বলছেন। 


২০:১১ فَلَمَّا أَتَاهَا نُودِيَ يَا مُوسَىٰ

অতঃপর যখন তিনি ( আগুনের কাছে ) আসলেন, তখন আওয়াজ আসল হে মূসা

২০:১২ إِنِّي أَنَا رَبُّكَ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ ۖ إِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى

আমিই তোমার পালনকর্তা, অতএব তুমি জুতা খুলে ফেল, তুমি পবিত্র উপত্যকা তুয়ায় রয়েছ।

২০:১৪ إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي

আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।


২৭:৮ فَلَمَّا جَاءَهَا نُودِيَ أَن بُورِكَ مَن فِي النَّارِ وَمَنْ حَوْلَهَا وَسُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

অতঃপর যখন তিনি (আগুনের কাছে) আসলেন তখন আওয়াজ হল ধন্য তিনি, যিনি আগুনের স্থানে আছেন এবং যারা আগুনের আশেপাশে আছেন। বিশ্ব জাহানের পালনকর্তা আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত।

২৭:৯ يَا مُوسَىٰ إِنَّهُ أَنَا اللَّهُ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ

হে মূসা, আমি আল্লাহ, প্রবল পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।


২৮:৩০ فَلَمَّا أَتَاهَا نُودِيَ مِن شَاطِئِ الْوَادِ الْأَيْمَنِ فِي الْبُقْعَةِ الْمُبَارَكَةِ مِنَ الشَّجَرَةِ أَن يَا مُوسَىٰ إِنِّي أَنَا اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ

যখন সে তার (আগুনের) কাছে পৌছল, তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান প্রান্তের বৃক্ষ থেকে তাকে আওয়াজ দেয়া হল, হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা।


আল্লাহর সাথে মূসার কথোপকথন সরাসরি হলে ৩টি সূরাতেই "হে মূসা! আমি আল্লাহ" বলার পরের বাক্যগুলি (word) একই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেখুন বাক্যগুলো এক নয়। এগুলো এক নয় কারন এ কথা ওহীর মাধ্যমে হয়েছিল। এবং আল্লাহ সূরা ত্বোয়া-হা তে "হে মূসা," এবং "আমিই আল্লাহ" বলার মাঝে ২০:১৩ আয়াতে বলে দিয়েছেন এটা ওহী , যা আমাদের আলেমদের চোখ এড়িয়ে গেছে। 


২০:১৩ وَأَنَا اخْتَرْتُكَ فَاسْتَمِعْ لِمَا يُوحَىٰ

এবং আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, অতএব যা প্রত্যাদেশ করা হচ্ছে(يُوحَىٰ ওহী), তা শুনতে থাক।


অনেকেই আল্লাহ মুসার সাথে সরাসরি কথা বলেছেন তার প্রমান স্বরুপ ৪:১৬৪ আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে থাকেন।  ৪:১৬৪ আয়াতে, "কাল্লামা আল্লাহু মুসা তাকলিমান" প্রায়শই 'আল্লাহ সরাসরি মুসার সাথে কথা বলেছেন' হিসাবে অনুবাদ করা হয়, কিন্তু এটি ভুল অনুবাদ। 'কাল্লামা' ক্রিয়াপদ থেকে উদ্ভুত বিশেষ্য 'তাকলিমা' দ্বারা ঐ ক্রিয়ার উপর আরবীতে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। কাল্লামা আল্লাহু মুসা তাকলিমান, মানে 'আল্লাহ মুসার সাথে ব্যাপকভাবে কথা বলেছেন'। বাংলায় যেমন বলা হয় - "কত কথা কইছে বা কি মার মারছে"। আরবি ব্যাকরণে ও প্রায়শই এমন তুলনা করা হয়, 'দারাবাহু দারবান', যার অর্থ 'তিনি তাকে কঠোর প্রহার করেছেন', 'তিনি তাকে সরাসরি মেরেছেন' নয়।


এটি আক্ষরিক কথোপকথন না হওয়ার আরেকটি কারণ হল, এটি অবশ্যই কুরআনের বাকি অংশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।


এই একই আয়াতে (৪:১৬৪) ‘কাসা' ক্রিয়াপদটি সকল রাসূলের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে, যার অর্থ 'বর্ণনা করা', । আপনি যদি প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে,  আল্লাহ আক্ষরিক অর্থে মূসার সাথে কথা বলেছিলেন বলে মেনে নেন এবং আপনি যদি আপনার পদ্ধতিতে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে চান তবে আপনাকে এই 'কাসা' (এবং 20:19 এবং 20:36 এ ক্বালা) সকল নবী রাসূলের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। যদি আপনি এটি করেন, তাহলে মুসাই একমাত্র রাসূল যিনি সরাসরি আল্লাহর সাথে কথা বলেছিলেন এই দাবী ধোঁপে টিকবে না। চলুন দেখা যাক ইব্রাহিমের সাথে আল্লাহর কথোপকথন- 


২:২৬০ আর স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম বলল, হে আমার পালনকর্তা আমাকে দেখাও, কেমন করে তুমি মৃতকে জীবিত করবে। বললেন; তুমি কি বিশ্বাস কর না? বলল, অবশ্যই বিশ্বাস করি, কিন্তু দেখতে এজন্যে চাইছি যাতে অন্তরে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। বললেন, তাহলে চারটি পাখী ধরে নাও। পরে সেগুলোকে নিজের পোষ মানিয়ে নাও, অতঃপর সেগুলোর দেহের একেকটি অংশ বিভিন্ন পাহাড়ের উপর রেখে দাও। তারপর সেগুলোকে ডাক; তোমার নিকট দৌড়ে চলে আসবে। আর জেনে রাখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, অতি জ্ঞান সম্পন্ন।

২০:১১ فَلَمَّا أَتَاهَا نُودِيَ يَا مُوسَىٰ
অতঃপর যখন তিনি ( আগুনের কাছে ) আসলেন, তখন আওয়াজ (নুদিয়া) আসল হে মূসা। 

20:11, 28:30 এবং 27:8 এ 'নাদা' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ 'ডাকা' (নাম ধরিয়া বা উচ্চস্বরে)। একটি জায়গারও নামকরণ করা হয়েছে, যেখান থেকে এই ডাক এসেছে। এটাও রূপক। কারণ?

20:10 থেকে 20:14 আয়াতের মধ্যে এটা বোঝানো হয়েছে এই 'ডাকা' কি রূপ ছিল। যত্ন সহকারে পড়ুন:

২০:১০ إِذْ رَأَىٰ نَارًا فَقَالَ لِأَهْلِهِ امْكُثُوا إِنِّي آنَسْتُ نَارًا لَّعَلِّي آتِيكُم مِّنْهَا بِقَبَسٍ أَوْ أَجِدُ عَلَى النَّارِ هُدًى
তিনি যখন আগুন দেখলেন(রায়া), তখন পরিবারবর্গকে বললেনঃ তোমরা এখানে অবস্থান কর আমি আগুন দেখেছি(আনাস্তু)। সম্ভবতঃ আমি তা থেকে তোমাদের কাছে কিছু আগুন জালিয়ে আনতে পারব অথবা আগুনে পৌছে পথের সন্ধান পাব।
২০:১১ فَلَمَّا أَتَاهَا نُودِيَ يَا مُوسَىٰ
অতঃপর যখন তিনি আসলেন, তখন আওয়াজ (নুদিয়া) আসল হে মূসা,
২০:১২ إِنِّي أَنَا رَبُّكَ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ ۖ إِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى
আমিই তোমার পালনকর্তা, অতএব তুমি জুতা খুলে ফেল, তুমি পবিত্র উপত্যকা তুয়ায় রয়েছ।
২০:১৩ وَأَنَا اخْتَرْتُكَ فَاسْتَمِعْ لِمَا يُوحَىٰ
এবং আমি তোমাকে মনোনীত করেছি, অতএব যা প্রত্যাদেশ (ওহী) করা হচ্ছে, তা শুনতে থাক।
২০:১৪ إِنَّنِي أَنَا اللَّهُ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدْنِي وَأَقِمِ الصَّلَاةَ لِذِكْرِي
আমিই আল্লাহ আমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। অতএব আমার এবাদত কর এবং আমার স্মরণার্থে নামায কায়েম কর।

অনুবাদের সময় ব্রাকেটে কিছু আরবি শব্দ রেখে দিয়েছি। এর তাৎপর্য আছে। আগুন দেখলেন(রায়া) , এই দেখাটা অন্তর্চক্ষু দিয়ে দেখা। রায়া মানে অন্তর্চক্ষু বা স্বপ্নে দেখা। সরাসরি চোখে দেখার জন্য কোরানে 'বাছারা /بصر ব্যবহৃত হয়েছে। 

আমি আগুন দেখেছি(আনাস্তু) - আনাস্তু মানে উপলব্ধি করা/টের পাওয়া। 

এই 'কথোপকথন' নিয়ে আরও অদ্ভুত কিছু ঘটেছে। এটি 'আগুন' থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং এটি একটি 'পবিত্র উপত্যকায়' ঘটেছে।

28:30-এ, এই 'আওয়াজ/ডাক' পুনরাবৃত্তি হয়, আরেকটি অদ্ভুত জায়গা থেকে:

২৮:৩০ فَلَمَّا أَتَاهَا نُودِيَ مِن شَاطِئِ الْوَادِ الْأَيْمَنِ فِي الْبُقْعَةِ الْمُبَارَكَةِ مِنَ الشَّجَرَةِ أَن يَا مُوسَىٰ إِنِّي أَنَا اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
যখন সে তার (আগুনের) কাছে পৌছল, তখন পবিত্র ভূমিতে অবস্থিত উপত্যকার ডান প্রান্তের বৃক্ষ থেকে তাকে আওয়াজ দেয়া হল, হে মূসা! আমি আল্লাহ, বিশ্ব পালনকর্তা।

পবিত্র বা বরকতময় স্পট, একটি অনুভূত আগুন (কিন্তু এটি কি আগুন ছিল?), আওয়াজ , ওহী , ... এ সমস্ত উপাদান একত্রে নিশ্চিত করে যে এটি রূপক।

{২০:১৪ আয়াতে মুসাকে আল্লাহর স্মরনার্থে নামাজ কায়েম করতে বলা হয়েছে। এটা কোন নামায? আমরা যাকে নামায বলে জানি সেই নামায?}

৭:১১৭ وَأَوْحَيْنَا إِلَىٰ مُوسَىٰ أَنْ أَلْقِ عَصَاكَ ۖ فَإِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَأْفِكُونَ
তারপর আমরা মূসাকে ওহী করলাম, এবার নিক্ষেপ কর তোমার লাঠিখানা। অতএব সঙ্গে সঙ্গে তা সে সমুদয়কে গিলতে লাগল, যা তারা বানিয়েছিল যাদু বলে।

 এই আয়াতটির মতোই 26:63, 10:87 এবং 20:77-আয়াতগুলিতেও মূসার কাছে ওহী (অনুপ্রানীত) করা হয় যা সরাসরি আদেশ হিসাবে উচ্চারিত হয়।

৭:১৪৪ قَالَ يَا مُوسَىٰ إِنِّي اصْطَفَيْتُكَ عَلَى النَّاسِ بِرِسَالَاتِي وَبِكَلَامِي فَخُذْ مَا آتَيْتُكَ وَكُن مِّنَ الشَّاكِرِينَ
(পরওয়ারদেগার) বললেন, হে মূসা, আমি তোমাকে আমার বার্তা পাঠানোর এবং আমার বাণীর (কালাম/word) মাধ্যমে লোকদের (নাস) উপর বিশিষ্টতা দান করেছি। সুতরাং যা কিছু আমি তোমাকে দান করলাম, গ্রহণ কর এবং কৃতজ্ঞ থাক।

এই আয়াতে মুসাকে আল্লাহ তাঁর বার্তা এবং বাণী দিয়ে তাকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু মুহাম্মদ সহ অন্যান্য রাসূলদের কাছে পাঠানো আল্লাহর বাণী ও বার্তার সাথে মুসার কাছে পাঠানো বার্তা ও বাণীর কোন পার্থক্য নেই। 
৪১:৪৩ مَّا يُقَالُ لَكَ إِلَّا مَا قَدْ قِيلَ لِلرُّسُلِ مِن قَبْلِكَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ وَذُو عِقَابٍ أَلِيمٍ
আপনাকে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত পূর্ববর্তী রসূলগনকে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার কাছে রয়েছে ক্ষমা এবং রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
৪২:১৩ شَرَعَ لَكُم مِّنَ الدِّينِ مَا وَصَّىٰ بِهِ نُوحًا وَالَّذِي أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهِ إِبْرَاهِيمَ وَمُوسَىٰ وَعِيسَىٰ ۖ أَنْ أَقِيمُوا الدِّينَ وَلَا تَتَفَرَّقُوا فِيهِ ۚ كَبُرَ عَلَى الْمُشْرِكِينَ مَا تَدْعُوهُمْ إِلَيْهِ ۚ اللَّهُ يَجْتَبِي إِلَيْهِ مَن يَشَاءُ وَيَهْدِي إِلَيْهِ مَن يُنِيبُ
তিনি তোমাদের জন্যে দ্বীনের ক্ষেত্রে সে পথই নিধারিত করেছেন, যার আদেশ দিয়েছিলেন নূহকে, যা আমি প্রত্যাদেশ (ওহী) করেছি আপনার প্রতি এবং যার আদেশ দিয়েছিলাম ইব্রাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই মর্মে যে, তোমরা দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না। আপনি মূশরেকদেরকে যে বিষয়ের প্রতি আমন্ত্রণ জানান, তা তাদের কাছে দুঃসাধ্য বলে মনে হয়। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা মনোনীত করেন এবং যে তাঁর অভিমুখী হয়, তাকে পথ প্রদর্শন করেন।

যদি একই বার্তা ও বাণী সকল রাসূলের উপরে ওহী করা হয়ে থাকে , তাহলে প্রশ্ন ওঠে আল্লাহ কার উপর মুসাকে বিশিষ্টতা দান করেছেন? প্রচলিত ধারনা হল অন্যান্য নবী রাসূলের উপরে আল্লাহ মুসাকে বিশিষ্টতা দান করেছেন। এই ধারনা বা প্রচারনা ভুল। সত্য হল সাধারন লোকের (নাস) উপরে মুসাকে বিশিষ্টতা দান করেছেন এবং এটাই পরিস্কারভাবে উপরে দেয়া ৭:১৪৪ আয়াতে বলা আছে। সকল নবী রাসূলই আল্লাহর বার্তা ও বাণীর জন্য সাধারন মানুষ থেকে বিশিষ্ট। ইসলামে আল্লাহর বার্তা ও বানীই গুরুত্বপূর্ন , নবী রাসুল নয়। আল্লাহর বার্তা ও বানীর বাইরে মুহাম্মাদকে বিশ্বাস করা হল এক প্রকার অবিশ্বাস, অর্থাৎ সেই অবিশ্বাসীদের যারা তাঁকে দেবতার আসনে বসিয়েছে।



Monday, December 20, 2021

শয়তান -


কোরানের শুরু থেকে মানুষকে যে জ্ঞান শেখানো হয়েছে তার একটি হলো , মানুষ ছাড়াও আরো সত্বা বা শক্তি আছে যারা মানুষের মতোই বুদ্ধিমান, অনুভূতিসম্পন্ন ও স্বাধীন ইচ্ছার অধিকারী (?)।  এমনি একটি সত্বা , যাকে আমরা শয়তান বলে জানি, জেনে শুনে অহঙ্কার বশত আল্লাহর উপস্থিতীতে আল্লাহর আদেশ অমান্য করার ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছিল।  {সে বললঃ দেখুন তো, ইনিই সে ব্যক্তি, যাকে আপনি আমার চাইতেও উচ্চ মার্যাদা দিয়ে দিয়েছেন। যদি আপনি আমাকে কেয়ামত দিবস পর্যন্ত সময় দেন, তবে আমি সামান্য সংখ্যক ছাড়া তার বংশধরদেরকে সমূলে নষ্ট করে দেব।১৭:৬২}  


এটা পরিস্কার যে, আদমের বংশধরদের সমূলে বিনষ্ট করে দেয়ার শয়তানের এই শপথকে খাটো করে দেখা মানবসমাজের উচিৎ হবে না। {সে বলল, আপনার ইযযতের কসম, আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে বিপথগামী করে দেব। ৩৩:৮২} 


শয়তান যে ফাকা বুলি আওড়ায়নি এবং সে যে তার শপথ পুরনে সক্ষম তার প্রমান আমরা পাই এই আয়াতদ্বয়ে।{আপনি যতই চান, অধিকাংশ লোক বিশ্বাসকারী নয়। অধিকাংশ মানুষ যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে, কিন্তু সাথে সাথে শিরকও করে।১২:১০৩,১০৬}       


শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। সে কসম খেয়েছে কেয়ামত পর্যন্ত আদমের বংশধরকে বিপথগামি করেই যাবে। শয়তানের চক্রান্ত থেকে বাচানোর লক্ষ্যে আল্লাহ মানব সমাজের শুরু থেকেই বিভিন্ন নবি ও রসূলের মাধ্যমে  ঐশীগ্রন্থ পাঠিয়ে শয়তানের পরিচিতি ও লক্ষ্য সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করেছেন এবং হেদায়েত করেছেন।

 {আমরা বল্লাম, তোমরা সবাই  নেমে যাও এখান থেকে।  অতঃপর যখন তোমাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে কোন হেদায়েত    পৌঁছে, তবে যে ব্যক্তি আমার সে হেদায়েত অনুসারে চলবে, তার উপর না কোন ভয় আসবে, না তাকে দুঃখ করা লাগবে। ২:৩৮, 

তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়েই এখান থেকে এক সঙ্গে নেমে যাও। তোমরা একে অপরের শত্রু। এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার বর্ণিত পথ অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ঠ হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না।২০:১২৩}

                                                                                                       

পার্থিব জীবণের শুরু থেকেই  মানুষকে আল্লাহর হেদায়েত প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টির লক্ষ্যে বা হেদায়েতকে অকার্যকর করার জন্য শয়তান উর্ধজগতের সাথে মানুষের যোগাযোগের মাধ্যমে অনুপ্রবেশ ও আড়িপাতার চেষ্টা করেছে। 

{ নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে। ওরা উর্ধ্ব জগতের কোন কিছু শ্রবণ করতে পারে না এবং চার দিক থেকে তাদের প্রতি উল্কা নিক্ষেপ করা হয় ওদেরকে বিতাড়নের উদ্দেশে। ওদের জন্যে রয়েছে বিরামহীন শাস্তি। তবে কেউ ছোঁ মেরে কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।৩৭:৬-১০}


আল্লাহর বাণী যাতে অপরিবর্তিতভাবে মানুষের কাছে পৌছায় এবং শয়তান যাতে আঁড়ি পাত্তে না পারে , সেকারনে সবধরনের সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। শয়তানের স্বীকারোক্তি পড়ুন। 

{আমরা আকাশ পর্যবেক্ষণ করছি, অতঃপর দেখতে পেয়েছি যে, কঠোর প্রহরী ও উল্কাপিন্ড দ্বারা আকাশ পরিপূর্ণ। আমরা আকাশের বিভিন্ন ঘাঁটিতে সংবাদ শ্রবণার্থে বসতাম। এখন কেউ সংবাদ শুনতে চাইলে সে জলন্ত উল্কাপিন্ড ওঁৎ পেতে থাকতে দেখে। আমরা জানি না পৃথিবীবাসীদের অমঙ্গল সাধন করা অভীষ্ট, না তাদের পালনকর্তা তাদের মঙ্গল সাধন করার ইচ্ছা রাখেন।৭২:৮-১০}


ভাবছেন শয়তান এরপরে হাল ছেড়ে দিয়েছে। না, ওহি নাযিলে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করতে পারলেও , ওহি নাযিলের পরে রসূলদের হৃদয়ে ঢুকে আল্লাহর বানীকে বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু আল্লাহর হস্তক্ষেপে শয়তানের সে চেষ্টাও বিফলে গেছে।

 {আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়।২২:৫২}


সুতরাং কোরানের আয়াত অনুযায়ী আল্লাহর বাণী মানুষের কাছে পৌছান পর্যন্ত প্রথম দুই ধাপ আল্লাহ শয়তানের চক্রান্ত থেকে সুরক্ষার ব্যবস্থাই শুধু করেন নি , এই বাণী কেয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তিত রাখার নিশ্চয়তাও দিয়েছেন।

 {আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।১৫:৯}


মানুষের কাছে আল্লাহর হেদায়েত তথা অবিকৃত শয়তানের হস্তক্ষেপমুক্ত কোরান পৌছে গেছে। এই কোরান ভেজালমুক্ত। অতীতে ও কেউ এতে মিথ্যা ঢুকাতে পারেনি , ভবিষ্যতেও পারবেনা। {কোন মিথ্যা এতে ঢুকেনি , না অতীতে না ভবিষ্যতে। এটা প্রজ্ঞাময়, প্রশংসিত আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। ৪১:৪২}


কোরানে ভেজাল মেশাতে ব্যার্থ  হয়ে শয়তান নুতন পরিকল্পনা আটে। সেটা হলো - মানুষ যেন কোরানের বাণী হৃদয়াঙ্গম করে আল্লাহর নির্দেশিত পথে চলতে না পারে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমেই যে কাজটি করেছে তা হলো সাধারন মানুষকে বোঝানো যে আলেম ছাড়া কোরান বোঝা যার তার পক্ষে সম্ভব নয়। কোরান বুঝতে বিশাল জ্ঞানের প্রয়োজন , কারন বোঝার জন্য হাদিস বিশারদ হতে হবে , বড় বড় আলেমদের তাফসির পড়া লাগবে ইত্যাদি। শয়তান এব্যাপারে সফল হয়েছে তা নির্দ্বীধায় বলা যায়। আজ কাপড়ে জড়িয়ে চুমু খেয়ে তাকের পরে তুলে রাখা ও না বুঝে অক্ষর প্রতি ১০ নেকির (কোরানে এই নেকির কথা বলা নেই) লোভে না বুঝে পড়া ছাড়া বাঙালি মুসলমানের জন্য কোরানের আর কোন মূল্য নেই। এদের সম্পর্কে কোরানে পূর্ববর্তি সম্প্রদায়ের উদাহরন দিয়ে সাবধান করা হয়েছে - {যাদেরকে তওরাত দেয়া হয়েছিল, অতঃপর তারা তার অনুসরণ করেনি, তাদের দৃষ্টান্ত সেই গাধা, যে পুস্তক বহন করে, যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলে, তাদের দৃষ্টান্ত কত নিকৃষ্ট। আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। ৬২:৫}


কোরানে বহু আয়াতে শয়তান কিভাবে মানুষকে বিপথগামী করে থাকে তার বর্ণনা দেয়া আছে , যাতে মানুষ সাবধান হতে পারে। মুহাম্মদের সময় এমনি এক পদ্ধতি ছিল কোরান তেলাওয়াতের সময় " লাঘু/ الْغَوْا"  করা, অর্থাৎ অবান্তর  কথা বলে হট্টগোল সৃষ্টি করা।{আর কাফেররা বলে, তোমরা এ কোরআন শ্রবণ করো না এবং এতে হট্টগোল সৃষ্টি কর, যাতে তোমরা জয়ী হও। ৪১:২৬} আজকের জমানায় ও এই আয়াতের গুরুত্ব অনুধাবনে আসে যখন মানুষকে কোরানের দিকে আহবান করা হয় , তখন শুনতে হয় নামাজ কিভাবে পড়ব, দাঁড়ি কতটুকু লম্বা রাখব , পায়খানায় যেতে ডান পা নাকি বাম পা আগে রাখব , কুলুখ নিয়ে কয় কদম হাটা লাগবে সেটা কিভাবে জানব ? ইত্যাদি সব অবান্তর কথাবার্তা।


অখ্যাত এক মোল্লা শেখ বড়ই পেরেশানিতে আছেন। তিনি ভাবছেন আর ভাবছেন , কিন্তু কোন সমাধান পাচ্ছেন না। শয়তানতো সব ধর্মের লোককেই আল্লাহর রাস্তা থেকে ভুলিয়ে বিপথে নিয়ে গেছে। বাকি রয়েছি কেবল আমরা মুসলমানরা। ৭ম শতাব্দির শুরুতে মুহম্মদের উপর কোরান নাযিলের পর থেকে শয়তান নিশ্চয় বসে নেই। তিনি ভাবছেন কি ভালই না হোত যদি আগেভাগেই শয়তানের চক্রান্ত জেনে নিতে পারতাম , তাহলে শয়তান যত চেষ্টাই করুক না কেন আমাকে আর ভুলাতে পারতনা।


শয়তানের চক্রান্ত ও তার কাজের ধারা , শয়তানের চেয়ে আর কে ভাল জানবে? কিন্তু সমস্যা হল শয়তানের দেখা কিভাবে পাবেন? শয়তান তো আর বোকা না , নিজে থেকে এসে তার পরিকল্পনা বাৎলে দেবে!! তখন ভাবলেন , আচ্ছা আমি যদি শয়তান হতাম তাহলে কি করতাম? যে ভাবা সেই কাজ....


আমি যদি শয়তান হতাম , তাহলে মানুষকে আল্লাহর রাস্তা থেকে বিপথে নেয়ার মিশনে অটল থাকতাম। মুহাম্মদ তো আর প্রথম নবী না , তার আগে যত নবী রসূল এসেছে এবং তাদের সকলের অনুসারীদের যেভাবে বিপথে নিয়েছি , সেভাবেই মুসলমানদের বিপথে নিব। এ আর এমনকি কঠিন। তাছাড়া সকল মানুষকে বিপথে নেয়াই আমার মিশন এবং এটা করার কথাই আমি আল্লাহকে গর্বভরে বলেছি। ইতিমধ্যে বিশ্বাসীদের উদ্বুদ্ধ করেছি যীশুকে শূলে চড়াতে।


মুহাম্মদ কোরান নামের একটা বই আবৃত্তি ও প্রচার করেছে মাত্র। যে বইয়ে মানুষকে সবর করতে , আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বানীর অনুসরন না করতে , নবী রসূলদের মাঝে পার্থক্য না করতে বলা হয়েছে। সুতরাং আমার প্রথম কাজ হবে মুসলমানদের এই কোরান থেকে দুরে সরিয়ে নেয়া বা তারা যেন কোরানকে আমলে না নেয় সে ব্যাবস্থা করা। এর জন্য আমার দরকার কোরানের পাশাপাশি অনেকগুলো বই।


সমস্যা নেই। প্রথমেই নবীর নিজস্ব কথা , তার চালচলন ও তার স্বভাব চরিত্র নিয়ে কিছু গুজব মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিলাম। ইসলামি রাজত্বের প্রসার ও সময়ের সাথে সাথে এই সকল গুজব নিজেই ডালপালা ছড়িয়ে চারিদিকে বহুগুনে প্রসার লাভ করল। নবীর মৃত্যুর ৩০০ বছর পরে দুই ইডিয়ট ঐশী দায়িত্ব দাবী করে তখনকার দিনে প্রচলিত অগুনতি হাদিস থেকে সহীহ হাদিস খুজে বের করে বই লিখল। ঠগ বাছতে কম্বল উজাড় করার মতো করে ১০ লক্ষ হাদিস থেকে যাচাই বাছাই করে প্রায় ৭ হাজার হাদিস সংকলন করে একজন লিখলেন "সত্যি  ধোঁয়া" (সহীহ বুখারি , আরবি বুখার মানে ধোঁয়া)এবং আরেকজন প্রায় একিভাবে লিখলেন "সত্যি মুসলমান (সহীহ মুসলিম)। এদের দেখাদেখি আরো চার জন লিখলেন আরো চারটি সহীহ বই। এখন পবিত্র কোরানের পাশাপাশি মুসলমানরা আরো ৬টি পবিত্র গ্রন্থ পেয়ে গেল।  বইয়ের নামগুলো খুব চটকদার কিন্তু খুব মজার হলেও আমি নিশ্চিত এটা মুসলমানেরা গ্রহন করবে। এখন এই বইগুলোকে পবিত্র করার জন্য আমি শব্দ নিয়ে খেলব।


আমি রাসুল (আল্লাহর বাণীকে হুবহু ব্যবহার করে বার্তাবাহক) এবং নবী (তার নিজের শব্দ ব্যবহার করে তথ্যদাতা নবী) শব্দগুলিকে গুলিয়ে ফেলব। রাসুলকে অনুসরণ করার ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার (যখন তিনি আল্লাহর বাণী উদ্ধৃত করেন) সাথে নবীকে অনুসরণ করা একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতায় পরিণত করব। ফলে মানুষ ঐশী নির্দেশ ভেবে নবীর নামে প্রচলিত বানোয়াটভাবে সংকলিত "সত্যি ধোঁয়া" , "সত্যি মুসলমান" এবং অন্যান্য হাদিসের বইগুলি মেনে নেবে। 


আমি আমার বইগুলির নামকরনের জন্য  সুন্নাহ শব্দটিকে ব্যাবহার করব। কোরানে শুধুমাত্র আল্লাহর সুন্নাহর উল্লেখ থাকলেও নবীর সুন্নতের নামে আমি বলব যে এটি আসলে কোরানের একটি ধর্মীয় পরিপূরক।


এই হাদিসের বইগুলি থেকে, আমি এমন লোকদের উদ্বুদ্ধ করব যাদেরকে আমি পর্যাপ্ত মূর্খতা এবং বিকৃততার মানদণ্ড অনুসারে মতবাদ তৈরি করতে এবং মুসলমানদের বিভক্ত করার জন্য বেছে নিয়েছিলাম। আমি তখন কোরানে  কোরানের জন্য ব্যবহৃত শরিয়া শব্দটি হাইজ্যাক করে এই সব বানোয়াট মতবাদের অনুসারীদের দেব।


এখন দেখি আমার বইগুলোতে কি লিখব।


একটু বিশ্বাসযোগ্যতা রাখার জন্য, আমাকে সম্ভবত কিছু প্রামাণিক গল্প উদ্ধৃত করতে হবে। সর্বোপরি আমার বইগুলিকে পবিত্র গ্রন্থ করার জন্য আমাকে অবশ্যই নবী এবং তাঁর সাহাবীদের পবিত্র ঘোষনা করতে হবে। এখানে যারা আমার বই অনুসরণ করে তাদের জন্য একটু জান্নাতের নিশ্চয়তা এবং যারা এটি অনুসরণ করে না তাদের জন্য একটু নরকের ভয় রাখতে হবে। 


আমার বইগুলিতে আমি পেডোফিলিয়া, দুর্ব্যবহার, খুন, নির্যাতন ও একনায়কত্ব এবং এই সমস্ত কিছুকে আল্লাহর নামে উৎসাহিত করব। নবীর নামে আমি বলব কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম এবং আমি এমন সব ধরনের মূর্খ আচার অনুষ্ঠান রাখব যা জনগণকে আমার জম্বি বানিয়ে দেবে এই বলে যে এগুলো সরাসরি জান্নাতে নিয়ে যায়। সেইসব লোক যারা শুধুমাত্র কোরানকে আঁকড়ে ধরে থাকে এবং আমার সত্যি হাদিস বইগুলিকে মিথ্যা বলে , আমি তাদেরকে মুসলমানদের সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করব যেন তারা নবীকে এবং আল্লাহকে অমান্য করতে চায় , ঘৃনা করে। আমি তাদের ধর্মত্যাগী ঘোষণা করব এবং আমি তাদের মৃত্যুদণ্ড দেব আল্লাহর নামে এবং যারা এদের হত্যা করবে তাদের আমি জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেব।


সবচেয়ে মূর্খদের মধ্য থেকে আমি আমার মোল্লা , হুজুর , মাওলানাদের বেছে নেব। আমি তাদের সম্মান ও  অনুপ্রেরণার জন্য লম্বা দাড়ি এবং বিশেষ পোশাক পরাবো এবং তাদের অনুসরণকারীদের জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার সময় যতটা সম্ভব উচ্চস্বরে আল্লাহু আকবর বলে চিৎকার করতে বলব। অবশ্য এরা নিজেদের আলেম তথা বিজ্ঞানী দাবী করলেও এরা কিছুই আবিষ্কার করে না। তারা প্রকৃত বিজ্ঞান এবং ভৌত ঘটনা এমনকি যেগুলোকে আল্লাহ কুরআনের আয়াত বলেছেন সে সম্পর্কেও  সম্পূর্ণভাবে অন্ধ। তারা ব্লা ব্লা বিজ্ঞানী / ওয়াজী হবে। তারা মাঝে মাঝে বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য কিছু কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করবে এবং সেগুলিকে প্রসঙ্গ থেকে সরিয়ে নিয়ে আমার বইগুলিতে আমি যে অর্থ দিতাম সে অনুযায়ী ব্যাখ্যা করবে। আমার পণ্ডিতরা কোরানের পরিবর্তে একে অপরের উদ্ধৃতি , আমার হাদিস বই এবং আমার অনুপ্রাণিত যত বই আছে সেগুলো পড়ে সময় ব্যয় করবে।


আমার বই পড়ে, আমার পণ্ডিতরা মধ্যযুগীয় সংস্কৃতিকে আত্মস্থ করে বৈপরিত্ব এবং মিথ্যার মোকাবিলা করতে শিখবে। আমি তাদের যে কর্তৃত্ব অর্পণ করেছি সেই চিন্তায় তাদের জিহ্বা দিয়ে  লালা ঝরবে এবং আমি তাদের বলব যে ইসলাম একজন মুসলিমের জীবনের সমস্ত দিককে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের নিয়মিত ভাবে এই পন্ডিতদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। মুসলমানদের জন্য জান্নাতের  লোভ দেখিয়ে   প্রতিটি গ্রামে , গঞ্জে , শহরের কোনায় কোনায় জাক জমকপূর্ণ আল্লাহর ঘর তথা মসজিদ তৈরি করে এগুলোর ভার আমার বিভিন্ন আড়ম্বরপূর্ণ টাইটেলধারী পন্ডিতদের উপরে দিয়ে তাদের আয় উপার্জনের ব্যাবস্থা করে দেব। 


আমি এই তত্ত্বকে উৎসাহিত করব যে আমার পণ্ডিত এবং তাদের নোংরামি ছাড়া কোরান বোঝা সম্ভব নয়। ৭ম শতাব্দীতে সাধারণ বেদুইনরা  কোরানকে বুঝলেও এখন আর কেউ বুঝতে চেষ্টা করবে না।


এই পর্যায়ে আমার আলেমগণ ধর্মীয় চিন্তাধারা এবং অন্য সকল চিন্তার একচেটিয়া অধিকার নিয়ে নিবে। হ্যাঁ, আমি এমন মুসলমানদের তৈরি করব যারা আল্লাহ সম্পর্কে চিন্তা করতে পারে না, এমনকি কোরান যদি তাদের চিন্তা করতে ও বলে তবুও চিন্তা করবে না। তারা আমার বাজে কথা শুনবে  বিজ্ঞান এবং ধর্মীয় জ্ঞান ভেবে এবং তারা কোরান শুনবে যেভাবে কেউ একটি গান শোনে তা বোঝার চেষ্টা না করেও। আমি কুৎসিত পোশাককে আধ্যাত্মিক সৌন্দর্যের প্রতীক করে তুলব এবং আমি এমন যে কোনও শিল্পকে নিষিদ্ধ করব যা আমাদের ব্রেনকে কাজে লাগাতে শেখাবে। 


আল্লাহর নামে, আমি অধার্মিক দেশগুলি থেকে আসা সমস্ত বিজ্ঞানের শিক্ষার পরিবর্তে  স্কুলগুলিতে আমার বিজ্ঞান অধ্যয়নের জন্য আমন্ত্রণ জানাব। এমনকি বিষ্ঠার মধ্যেও, তারা মনে করবে তারা সত্য পেয়েছে। পরিচয়ের অনুভূতি নিয়ে খেলা করে, আমি মধ্যযুগে প্রত্যাবর্তনকে আধুনিকতা এবং অগ্রগতির একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত করে তুলব। (আফগানিস্তান)


আমি মসজিদগুলোকে কলুষিত করব এবং তাদেরকে আমার বই ও আমার দলগুলোর অনুসরণ করার আহ্বান জানাব। যদিও কোরান বলে যে মসজিদে  কেবলমাত্র আল্লাহর  নাম ডাকা উচিৎ , তবে এটি কোনও সমস্যা নয়।


নির্বোধ, এমনকি গণতন্ত্রেও, তারা আমার একনায়কত্বের পক্ষে ভোট দেবে এবং আমার বিজ্ঞানীরা এতটাই মূর্খ হবে যে তারা আমাকে অনুসরণ করবে এই বিশ্বাস করে যে , তারা আল্লাহকে অনুসরণ করছে । তারা তাদের সাথে জনগণের একটি বড় অংশকে আমার ,  মহান শয়তানের উপাসনায় নিয়ে যাবে।


১৪:২২ যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি। তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম (অন্ধকারে আছে। আরবি জুলম মানে অন্ধকার)  তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।


Tuesday, December 14, 2021

কোরান পাঠকের চিন্তার স্বাধীনতা


(ঐতিহ্যগত সতর্কীকরণ: এখানে কোরান দ্বারা ইসলামি ধর্মদ্রোহিতার স্বরুপ উম্মোচন করা হয়েছে। যারা হুজুর , মোল্লা ও শেখদেরকে তাদের শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করে ইসলাম সম্পর্কে শিখেছে , তারা গভীর ও ভয়ানকভাবে মর্মাহত হবে। তাদের অবিলম্বে এই নিবন্ধটি না পড়ে প্রস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। যেভাবেই হোক, আপনি নিবন্ধটি সম্পূর্ণ পড়তে পারবেন না।)

"কোরান আল্লাহর গ্রন্থ"  প্রমানের জন্য এই নিবন্ধ লেখা হয় নি। বরং যারা এটা বিশ্বাস করে তাদের নিয়েই সমস্যা। যারা এই বিবৃতিটিকে (কোরান আল্লাহর গ্রন্থ) একটি অনুমান (hypothesis) হিসাবে গ্রহণ করেন , তাদের উদ্দেশ্যেই এই লেখা। 

কোরান একটি চমৎকার বই। আমরা যখন এটি পড়ি এবং এর মধ্যে  গভীর মনোনিবেশ করি, তখন একটি ব্যতিক্রমী যৌক্তিক বুঝ আমাদের মনে ধরা দেয়। আয়াতের  আন্তঃসম্পর্ক এতটাই নিবিড় যে যারা অন্য বইয়ের মতো সাধারন পাঠে নিজেদেরকে সীমাবদ্ধ রাখে , তারা বুঝের উচ্চ স্তরগুলিকে শোচনীয়ভাবে মিস করে। এই উচ্চ স্তরগুলি তাদের কাছেই ধরা দেয় ,  যারা তাদের মন এবং হৃদয়ে কোরান ধারন করে এবং তাদের নিজস্ব উপলব্ধি বের করার জন্য আয়াতের  ক্রস-রেফারেন্স (তারতিল) করতে সক্ষম হয়।

আমরা প্রথমে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব সমগ্র কোরানের  অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াতকে:

৩:৭ তিনিই আপনার প্রতি কিতাব নাযিল করেছেন। তাতে কিছু আয়াত রয়েছে সুস্পষ্ট, সেগুলোই কিতাবের আসল অংশ। আর অন্যগুলো রূপক। সুতরাং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে, তারা অনুসরণ করে ফিৎনা বিস্তার এবং অপব্যাখ্যার উদ্দেশে তন্মধ্যেকার রূপকগুলোর। আর সেগুলোর ব্যাখ্যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানে না। আর যারা জ্ঞানে সুগভীর, তারা বলেনঃ আমরা এতে বিশ্বাস করি। এই সবই আমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে। আর বোধশক্তি সম্পন্নেরা ছাড়া অপর কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না।

এই আয়াতটি একটি ভাল উদাহরণ যার মানে যুক্তির মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। মুসলমানরা তাদের আল্লাহর আয়াতকে হালকাভাবে গ্রহণ করে এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত হুজুর ও মোল্লাদের  হাতে তাদের ব্যাখ্যা অর্পণ করে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তার বিরুদ্ধে প্রকৃত অপরাধ করে।

এই আয়াতটি বেশ কিছু বিষয়কে নিশ্চিত করে।

প্রথমত, কোরান তার পাঠককে প্রত্যয়িত করে যে তিনি প্রথম পাঠ থেকে বার্তাটির সারাংশ বুঝতে সক্ষম।

তারপর, কোরান বলে যে কিছু আয়াতের একাধিক ব্যাখ্যা /মানে (রুপক) আছে এবং যাদের অন্তরে কুটিলতা রয়েছে তারা এই বহুবিধ অর্থের মধ্যে সম্পূর্ণ পচাটি দিয়ে ফিৎনা ছড়াবে।

অবশেষে আয়াতটি আদেশ দেয় যে শুধুমাত্র আল্লাহই একাধিক অর্থের আয়াতের প্রকৃত অর্থ জানেন এবং যারা সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী তারা এই "অনিশ্চয়তা" কে প্রত্যাখ্যানের কারণ হিসাবে গ্রহণ করবে না। তারা অন্তত একটি ব্যাখ্যার অস্তিত্ব নিয়ে সন্দেহ করবে না যা আপাত দ্বন্দ্ব দূর করে। "জ্ঞান সম্পন্ন " লোকেরা সবই মেনে নেবে কারণ তারা যা বুঝেছে তাই তাদের জন্য প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট।

এটি পড়ার প্রথম স্তর। 

আপনি যখন গভীরভাবে চিন্তা করতে এবং নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করেন তখন জিনিসগুলি জটিল হয়ে যায়।

কেন আল্লাহ তার কোরানে এমন আয়াত রাখবেন যা বোঝা যায় না?

কেন তিনি তার পাঠকদের জন্য এটিকে সহজ করার জন্য সমস্যাযুক্ত আয়াতগুলি চিহ্নিত করেন না বা একটি সূরা 'অস্পষ্ট' রাখেন নি?

সমস্ত "মস্তিষ্কের" জন্য "সমস্যা" আয়াত কি একই?

যারা কুরআনকে পুরোপুরি আয়ত্ত করতে চায় এবং যারা মতভেদ চায় তাদের কেন তিনি একত্রিত করেন? এটা বোঝা প্রায় অসাধ্য। 

কেন তিনি জোর দিয়ে বলেন যে তিনি নিজে ছাড়া কেউ সবকিছু বুঝতে পারবে না?

আয়াতটি কেন রসূল মুহাম্মাদকে তাদের থেকে বাদ দেয় যারা কোরানকে  সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারে (আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সঠিক ব্যাখ্যা জানে না  , এটি সংকীর্ণ মনের জন্যও স্পষ্ট এবং অবিসংবাদিত)?

মুহাম্মদ কিভাবে তার প্রিয়জনদের ধর্মীয় জ্ঞান শেখাতে পারেন যদি তিনি যে বার্তাটি দিচ্ছেন তার সঠিক ধারণা তার না থাকে? ফেরেশতারা কি সঠিক ব্যাখ্যা জানে?

আমরা তখনই প্রতিফলনের এই স্তরে পৌঁছাতে পারি এবং নিজেদেরকে এই ধরণের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে পারি যখন আমরা এই দৃঢ় বিশ্বাসে পৌঁছাতে পারি যে এই বইটির লেখক হলেন সর্বোচ্চ রব (শিক্ষক) এবং তাঁর ছাত্রদের জন্য একটি শিক্ষা রয়েছে যা সময় এবং বাহককে অতিক্রম করে।

আপনি মনে করেন আপনি বুঝতে পেরেছেন , এমন যেকোন আয়াতের জন্য ৩:৭ আয়াতটি একটি যৌক্তিক ড্যামোক্লের তলোয়ার। (আপনি যদি বলেন যে কারো মাথায় ড্যামোক্লের তলোয়ার ঝুলছে, তাহলে আপনি বলতে চাচ্ছেন যে তারা এমন একটি পরিস্থিতিতে রয়েছে যেখানে যে কোনো সময় তাদের সাথে খুব খারাপ কিছু ঘটতে পারে।) অর্থাৎ আপনার বুঝ ভুল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা বিদ্যমান। 

আয়াত ৩:৭ প্রতিফলন এবং চিন্তার স্বাধীনতার জন্য একটি স্থায়ী আহ্বান। যে কোন আয়াত প্রশ্নবিদ্ধ। আল্লাহর অবিসংবাদিত সত্য তার জানা আছে বলে কেউ দাবি করতে পারে না। আল্লাহই ইসলামের একমাত্র রব (শিক্ষক)। তিনি ছাড়া অন্য কেউ নিজেকে রব বলে দাবি করতে পারে না, কারন আয়াতের সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা কেবল আল্লাহই জানেন। 

আয়াত ৩:৭ , এর পাঠককে ব্যাখ্যা করে যে তিনি নিজে যা বুঝেছেন তার উপর মহান রব তার বিচার করবেন এবং মোল্লা , হুজুর , শেখদের কাছ থেকে পাওয়া বুঝ ও ব্যখ্যার দোহাই কোন কাজে আসবে না। 

এটাই কোরান! মানুষ এবং তাদের কল্পনার জন্য ভিন্ন অর্থ ও জ্ঞানের একটি মহাসাগর। এমন একটি বই যা পাঠ করে প্রতিটি আত্মা তারই জন্য নির্দিষ্ট জ্ঞান লাভে সক্ষম।

এটি কোরানের লেখকের রচনাশৈলী (তারতিল):

79-24: আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ রব (শেখ/পণ্ডিত)" ফিরাউনের দ্বারা উচ্চারিত একটি আয়াত। ফিরাউন এক উদ্ধত স্থানীয় ক্ষমতাবান , যে তার লোকেদের মধ্যে বিভেদ বপন করেছিল তাদের বিভক্ত করে (28-4)। আয়াত 40-28 প্রমাণ করে যে ফিরাউন ছিলেন একজন পুরোহিত/শেখ এবং ফেরাউনের লোকদের ঈশ্বর ছিলেন আল্লাহ। এটি আরও দেখায় যে এমনকি ফিরাউনের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মধ্যেও "ঈশ্বরের" লোক ছিল যারা স্বৈরাচারের অধীনে মানুষের ভালোর জন্য কাজ করেছিল। 66-11 আয়াতে আল্লাহ নিজেই ফিরাউনের স্ত্রীকে ভালো উদাহরণ হিসাবে দেখিয়েছেন যে, যারা ফেরআউনের সাথে ঘনিষ্ঠ তাদের যেমন তিরস্কার করা উচিত নয় , তেমনি 66-10 আয়াতে দেখান যে নবীপত্নী হলেও বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আল্লাহর শাস্তির কবল থেকে  নবীরা তাদের রক্ষা করতে পারেনি। যারা অতীতের ফেরাউনের কারনে ভুগেছেন, যারা আজকের ফেরাউনের কারনে ভুগছেন এবং যারা নিজেদেরকে একজন জ্ঞানী বলে দাবি করেন ও তাদের সাথে যারা সান্ত্বনা পান , এদের  সকলের চিন্তা ও ধ্যান করার জন্য কোরান একটি দুর্দান্ত পাঠ্য বই।

ইসলামে নিজেকে একজন ধর্মীয় গুরু বা শিক্ষক হিসেবে ঘোষণা করা ফিরাউনের কুফরির সমতুল্যই শুধু নয় , এটি কোরান গভীর ভাবে না বোঝার লক্ষণও বটে। এমনকি যদি হুজুররা , মোল্লারা , শেখরা আন্তরিক হন এবং সুসংগত কথা বলেন, তবুও তাদের মূর্খ ঘোষণা করা উচিত কারণ তারা যা শেখানোর দাবি করে তা শেখাতে অক্ষম।

সম্ভাব্য এবং কল্পিত সমস্ত ধর্মদ্রোহিতার মধ্যে নিজেকে আল্লাহর দ্বীনের শিক্ষাদানকারী  ঘোষণা করা সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ!

কোরান সর্বাবস্থায় সন্দেহ করতে শেখায়। শয়তান হল একটি ছোট্ট কণ্ঠ যা আমাদের মনে ক্রমাগত ফিসফিস করে (সূরা 114)। এর লক্ষ্য হল আল্লাহর পথ থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া এবং সেই সাথে সত্য থেকে। শয়তান গপ্প দ্বারা আল্লাহর বাণীকে (বুখারি অর্থে) ধূপধূনায় ধূপিত করে এবং যারা দাঁড়ি , টুপি ও  পোশাকের মধ্যে আল্লাহর জ্ঞানকে চিনতে পারে , তাদেরকে বিভ্রান্ত করে।  শয়তানের মিশন হল আল্লাহ/সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে দেয়া। 

সত্য বনাম মিথ্যা। কোরান কখনোই ইসলামকে মন্দের বিরুদ্ধে ভালোর সংগ্রাম হিসেবে উপস্থাপন করেনি। এটি গগ এবং মাগোগদের মধ্যে একটি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস। শয়তানের উদ্দেশ্য হল সত্যকে বিভ্রান্ত করা এবং ঘটনাক্রমে, মিথ্যার নামে ভাল কাজ হলে, সে তা প্রচারের জন্য ব্যবহার করে। তার মিথ্যা প্রচারের জন্য সাময়িকভাবে দরিদ্রদের খাওয়ানোর প্রয়োজন হলে, শয়তান দান খয়রাত প্রচার করতে দ্বিধা করবে না। কোরান নাস্তিক এবং মূর্তিপূজারীরা ভাল কাজ করতে পারে তা স্বীকার করার সাথে , এটাও নির্দিষ্ট করে যে তাদের ভাল কাজগুলিকে বিবেচনায় নেওয়া হবে না (উদাহরণস্বরূপ 3-22 এবং 6-88)। মিথ্যার নামে ভাল কাজ মিথ্যাকে শক্তিশালী করে এবং সর্বদাই শেষ পর্যন্ত মন্দের জন্ম দেয়। রাজনীতিবিদরা এটি ভাল করেই জানেন এবং কোরান বিশ্বাসীদেরকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে দাতব্য গ্রহণ করতে নিষেধ করে (ওহিলা লি গাইর আল্লাহ: 5-3, 6-145 ,16-115)। কোরান বিশ্বাসীদেরকে তাদের বিশ্বাসকে অন্যের আস্থা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার না করতে বলে (16-92; 16-94) এবং বড়াইপূর্ণ/ভানপূর্ণ দাতব্যের (2-264,4-38) নিন্দা করে।

আস্তিক যখন কোরান পড়ে, তখন তাকে শয়তানের মুখোমুখি হতে হয় অর্থাৎ কে জানে কোথা থেকে পাওয়া কোরানের ব্যাখ্যা দাবিদার এই সব গপ্প , গুজব , চুটকি এবং উপাখ্যানের এই নোংরা "সংস্কৃতি" সামনে চলে আসে। কোরান বুঝার জন্য এই মিথ্যার পাহাড়ের উপর নির্ভর করা শয়তানকে রব হিসাবে ভুল করার শামিল। এটা আজকের মুসলমানদের ইসলাম , যারা  জাক্কুম গাছকে গান্ডেপিন্ডে গিলে খেয়েছে। শয়তান বাস্তবিক কারণে প্রতীকী সত্তা হলেও ধর্মীয় পণ্ডিত, দার্শনিক, বিশ্বাসী এবং চিন্তাবিদদের দ্বারা নির্মিত ইসলামি সংস্কৃতির মিথ্যার ম্যাগমা (জলন্ত গলিত লাভা)। 

হিকমা (জ্ঞান) শব্দটি কোরানে বহুবার উল্লিখিত হয়েছে যেমনটি নবী ও রসূলদের দ্বারা শেখানো হয়েছে। শয়তান এই শব্দটিকে একটি বিপরীত অর্থের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে তার হাদীসের বইগুলিকে অন্ধ বিশ্বাসের জন্য। প্রজ্ঞা হল এমন একজনের মনের অবস্থা যে জটিল বাস্তবতা এবং একাধিক অর্থ বুঝতে শেখে। মোল্লা/ঋষিরা পণ্ডিত/স্কলার নন। জ্ঞানী ব্যক্তিই কেবল চিন্তা করতে এবং অনুধাবন করতে জানে। তিনি জানেন কিভাবে দাঁড়ি টুপি পোষাকে ঢাকা চেহারা কাটিয়ে উঠতে হয় এবং যখন তিনি শেখের পোশাক পরেন তখনও নির্বুদ্ধিতার সাথে শয়তানকে অনুসরণ করেন না।

"তারা কি কোরআন সম্পর্কে গভীর চিন্তা করে না? না তাদের অন্তর তালাবদ্ধ? ৪৭:২৪"

"এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে।৩৮:২৯"

মুহাম্মদ আল্লাহর আয়াত নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে শিখিয়েছিলেন , কারণ বিখ্যাত আয়াত 3-7 ইঙ্গিত করে যে মুহাম্মদ নিশ্চিততার সাথে আয়াতের অর্থ জানতেন না। এই চিন্তা-কেন্দ্রিক জ্ঞানই শয়তান দমন করেছে ইসলাম থেকে। আজকের ধার্মিক মুসলমান  এক চিন্তাহীন এবং প্রজ্ঞাহীন মানুষের নমুনা। যে পূর্ববর্তীদের তাফসিরের বাইরে নিজের জন্য নুতন করে চিন্তা ভাবনা করা নিষিদ্ধ করেছে এবং সেই শয়তানের জম্বি/ ভ্যাবাগঙ্গারাম হয়ে উঠেছে , যে শয়তান হিকমার /প্রজ্ঞার নামে তার মাথার মধ্যে গোবর ঢুকিয়েছে। 

শয়তানের নিকট থেকে  যে কোরানের ব্যাখ্যা গ্রহন করেছে , সে কিছুই বোঝে না। শুধু তাই নয় বরং সে দ্রুতই মূর্খ  ও মূর্খ আচার-অনুষ্ঠানে তৈরি ধর্মে নিজেকে আবিস্কার করে। সে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে সামনের মাটিতে আধ্যাত্মিকতা খুঁজে পায় এবং বিশ্বাস করে যে পৃথিবী নামক একটি বৃহৎ গোলাকার বলের উপর থাকাকালীন সুদুর মক্কার একটি বড় কিউবের / কাবার দিকে লক্ষ্য রাখতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, দীর্ঘ দূরত্বে মেঘের মধ্যে তার লক্ষ্য হারিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তার লক্ষ্য সরাসরি সামনে দাড়ানো নামাজির নিতম্বের কাছাকাছি পরিসরে প্রবেশ করে।  মহাবিশ্বের প্রভুর কথা জানিনা , তার সামান্য এই কৌতুকে অনেকেই হাসতে হাসতে লাল হয়ে যাচ্ছে।

অনেকে আছেন যারা  সালাত , সওম ও হজের অনুশীলন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চালু রাখেন। কিন্তু আল্লাহকে বোকা বানানো সহজ নয়। দুর্ভাগ্যবশত  যখন তারা তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি হারাতে শুরু করে তখন তারা জ্ঞানের পথ আবিষ্কার করবে না। তারা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করবে যারা চিন্তা করে না বা চিন্তা করেনি। তাদের মন জাক্কুম গাছ থেকে পরিপূর্ণভাবে পুষ্ট হবে। সবচেয়ে "ধার্মিক" ব্যক্তিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাতনী মক্কাতে (ভয়াবহ যুদ্ধের ময়দানের উদরে 48-24) নিজেদের নিক্ষেপ করার জন্য ইয়াথরিবের(33-13) মধ্য দিয়ে যাবে। তারা জান্নাতে প্রবেশের জন্য শয়তান কতৃক অমূলক হিসাবে উপস্থাপন করা ছোট রেসিপিগুলির প্রতি অনুরাগী হয়ে ওঠে। (হুজুরদের বর্ণীত বিভিন্ন আমল , দোয়ার রেসিপি , যেগুলো দিনে কয়েকবার করলে বা পড়লে জান্নাত নিশ্চিত)। তার ব্রেনের নিউরনগুলিকে কাজ করাতে অক্ষম অতি-ধার্মিক গগ (গগ = মিথ্যা মুক্তা) তার জীবনের শেষ দিনগুলি কাটিয়ে দেবে শয়তানকে হাসাতে  হাসাতে  তার আঙ্গুলের মধ্যে মিথ্যা মুক্তো গুনে এই বিশ্বাসে যে সে আল্লাহর পথে সাঁতার কাটছে (তাসবিহ-ইউসাব্বিহু ,আরবি সাবাহা মানে সাঁতার কাটা)। 

শয়তানের দ্বারা সম্পূর্ণরূপে বিভ্রান্ত হয়ে, সে নিজেকে জান্নাতের দরজার সামনে আছে বলে বিশ্বাস করে জাহান্নামের দরজার সামনে উপস্থিত হবে এবং তার একমাত্র আশ্রয় হবে আল্লাহর ক্ষমা।

“৬:২১-তার চেয়ে বড় জালেম আর কে হবে যে আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে বা তার আয়াতকে মিথ্যা বলে? জালেমরা সফল হবে না। 

৬:২২-এবং যেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্র করব, তখন যারা শিরক করবে তাদের বলব: তাহলে তোমাদের শরীকরা কোথায় আছে যাদেরকে তোমরা দাবি করেছিলে?

৬:২৩- অতঃপর তাদের জন্য একমাত্র অজুহাত অবশিষ্ট থাকে এই বলে: "আমাদের প্রভু আল্লাহর শপথ!" আমরা কখনই সহযোগী ছিলাম না”।

৬:২৪- দেখ কিভাবে তারা নিজেদের মিথ্যা কথা বলে! আর তারা যা উদ্ভাবন করেছে তা কিভাবে পরিত্যক্ত হয়!

৬:২৫ তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা আপনার কথা শুনতে আসে, অথচ আমি তাদের অন্তরের উপর আবরণ রেখে দিয়েছি যাতে একে না বুঝে এবং তাদের কানে বোঝা ভরে দিয়েছি। যদি তারা সব আয়াত/ নিদর্শন অবলোকন করে তবুও সেগুলো বিশ্বাস করবে না। আর যখন তারা তোমার সাথে তর্ক করতে আসে, তখন যারা প্রত্যাখ্যান করে, তারা বলে, এগুলো তো পূর্ববর্তীদের কিংবদন্তী মাত্র। “


(দ্বৈত অর্থে সক্ষম পাঠকদের জন্য, অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে দুটি ধরণের প্রত্যাখ্যান রয়েছে, নাস্তিকদের দ্বারা পাঠ্য এবং মূর্তিপূজারীদের দ্বারা অর্থ। উভয়ে একত্রিত হয়ে বলে যে এগুলো পুরানো গল্প)


কোরানের আবির্ভাব মানুষের প্রকৃতিতে কোনই পরিবর্তন করেনি। আল্লাহর ইচ্ছায় শয়তান তার মূর্খ আচারগুলি পুনরায় চালু করেছিল। আল্লাহর পথকে আবার ধর্মে রূপান্তরিত করা হয়েছিল , অর্থাৎ মূর্খ আচার-অনুষ্ঠানের মাঝেই মানুষের আধ্যাত্মিকতাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা হয়েছিল। 

ইসলাম কোন ধর্ম নয়। এটি একটি প্রজ্ঞা এবং একটি পথ যা সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর কালাম এবং একজন মহান শিক্ষকের শিক্ষার উপর কেন্দ্রীভূত। ইসলাম জ্ঞানের প্রতি জ্ঞানীর এবং চিন্তার প্রতি মুক্তচিন্তকের ঋণ (দ্বীন)। (دين দ্বীন মানে ঋন।)

https://translate.google.com/?sl=bn&tl=ar&text=ঋন&op=translate 

যে কোরান পড়ে তার উপরে আল্লাহর জ্ঞান (ওহী) যখন নাযিল হয় , সেই ওহী সে চিনবে কিনা তা তারই উপর নির্ভর করে।

সালাত হল তার কথার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপনের একটি কাজ। এই সংযোগের সময়  আয়াত ও ব্রেনের আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে প্রতিটি বিশ্বাসী যার যার মতো আল্লাহর চিত্র নিজস্ব কল্পনায় আনে এবং কোরানের শিক্ষা অন্তরে ধারন করে। বস্তুজগতের সত্যটি যেমন আমাদের প্রত্যেকের দ্বারা আলাদাভাবে উপলব্ধি করা হয় দুটি ছোট ছিদ্রের মাধ্যমে যা আমাদের চোখ হিসাবে কাজ করে, তেমনিভাবে আল্লাহর সত্যটি তার নিজের আত্মার মাধ্যমে সংযুক্ত প্রত্যেকের সাথে আলাদাভাবে প্রকাশিত হবে। শুধুমাত্র আল্লাহর শিষ্যরা রয়েছে তার জ্ঞানের পরিবেষ্টন ছাড়াই। যারা আল্লাহর সাথে যুক্ত , তারা বাস্তব জগতের দাড়ি এবং পাগড়ি দিয়ে দুষ্ট সেই ভাইরাসকে চিনতে শিখে , যারা জান্নাতে যাওয়ার জন্য মিথ্যা রাস্তা দেখায়। 

যাকাত (শুদ্ধিকরন) আদায়ের জন্য সালাত ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ শয়তানের হয়ে কাজ করা সমস্ত ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি দূর করার মাধ্যমে আত্মার শুদ্ধিকরণ করে সালাত। 


কোরান পড়ার (তিলাওয়াত) সাথে আল্লাহর জ্ঞান (ওহী) অবতরন (নুযুল) করে। 

যতদিন কোরান তিলাওয়াত করা হবে ততদিন ওহী নাজিল হতে থাকবে এবং

এই অবিরাম নাজিল কুরআন ক্রমাগত নতুন অর্থ নিয়ে আসে সেই হৃদয়ের জন্য , যে 

হৃদয় এটি গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত। 


যারা কোরান পড়েন তারা বোঝেন নবী রসূলগণ সুপারম্যান নন। আল্লাহর রসূলগণ একথা বলেনঃ

১৪:১১ তাদের রসূলগণ তাদেরকে বললেন, “নিশ্চয়ই আমরা তোমাদের মতই মানুষ। কিন্তু আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা অনুগ্রহ করেন। আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত  তোমাদের কাছে প্রমাণ নিয়ে আসা আমাদের কাজ নয়। আর আল্লাহর উপরই মুমিনদের ভরসা করা উচিত।

আম্বিয়ারা (নবীরা) এমন মানুষ যারা খুব বড় ভুল করতে সক্ষম। আম্বিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভুলের অলরাউন্ড চ্যাম্পিয়ন সম্ভবত আমাদের প্রিয় ইব্রাহিম। এখানে তিনিই, যিনি একটি সাধারণ স্বপ্ন অনুসরণ করে, তার নিজের ছেলেকে জবাই করতে যান।


যদি কেউ আজকাল একটি স্বপ্ন অনুসরণ করে তার একটি সন্তানকে জবাই করার উদ্যোগ নেয় , তবে হয় তাকে অবিলম্বে বন্দী করা হবে নতুবা হেমায়েতপুরে পাগলা গারদে পাঠানো হবে।