Saturday, October 1, 2011

হাদীস ও সুন্নাহ।(১)

হাদীস ও সুন্নাহ কি আসলেই ইসলামের অবিচ্ছেদ্দ অংশ নাকি এটা একটি ভিত্তিহীন প্রথা যা কোরানের শান্তির বাণীকে পঙ্গু করে দিচ্ছে?

বর্তমানে প্রতিটি মুসলমানের জন্য হাদীস ও সুন্নাহ মেনে চলা বাধ্যতামূলক এবং কোরানের পরেই একে স্থান দেয়া হয়। ঐতিহ্যবাহী মুসলমানরা দাবী করেন যে , যারা হাদীস ও সুন্নাহ বিশ্বাস করেন না তারা কাফের। হাদীস বলতে বুঝায় মুহাম্মদের কথাকে যা তিনি কোরানের নির্দেশের বাইরে বলেছিলেন (আদেশ , নির্দেশ উপদেশ..) এবং সুন্নাহ হলো মুহাম্মদ কতৃক প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান।

প্রচলিত বিশ্বাস হল ,কোরান নবী মুহাম্মদের জীবদ্দশায় তারই তত্বাবধানে লিখিত হত (কোরান সংকলন হয় আবুবকর ও ওসমানের সময়) কিন্তু হাদীস লেখার ব্যপারে নবী মুহম্মদের পরিস্কার নিষেধ ছিল , যে কারনে হাদীস মুখে মুখে প্রচলিত ছিল এবং নবীর মৃত্যুর ১০০ বৎসর পরেই কেবল লিখিত আকারে আসা শুরু করে। সর্বাধিক প্রচলিত হাদীস গ্রন্থ সহী বুখারীর লেখক বুখারীর জন্ম নবী মুহাম্মদের মৃত্যুর প্রায় ২০০ বৎসর পরে।

১) ইবনে সাঈদ আল খুদরি ইরশাদ করেছেন যে আল্লাহর নবী বলেছেন : তোমরা কোরান ছাড়া আমার কোন কথা লিপিবদ্ধ করবে না। যদি কেউ কোরান ছাড়া অন্যকিছু লিখে থাকে , তবে তা মুছে ফেলবে।

২)যায়িদ ইবনে থাবিত (রসুলের মৃত্যুর ৩০ বষর পরে) মুয়াবিয়ার দরবারে রসূলের সম্পর্কে একটি গল্প বলেছিলেন। মুয়াবিয়ার গল্পটি ভালো লাগে এবং এটি লিখে রাখার আদেশ দেন। কিন্তু যায়িদ বল্লেন : রসূল আমাদেরকে আদেশ করেছেন তার কোন হাদীস কখনো না লিখতে। (ইবনে হাম্বল থেকে) এই গল্প থেকে বুঝা যায় হাদীস লেখার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা রসূল মৃত্যুর আগে তুলে নেন নি।

৩)ইবনে সালাহ'র উলুম আল হাদীস বই তে উল্লেখ আছে - আবু হুরায়রা বলেছেন: আমরা একদিন যখন হাদীস লিখছিলাম তখন আল্লাহর রসূল এসে বল্লেন , তোমরা কি লিখছ? হাদীস , যা আমরা আপনার কাছ থেকে শুনি। তিনি বল্লেন: আল্লাহর বই ছাড়া অন্য আরেকটা বই? আবু হুরায়রা বল্লেন: আমরা যত হাদীস লিখেছিলাম , তা একত্র করে আগুনে পুড়িয়ে দিলাম।

৪) তাকঈদ আল ইলম বইতে উল্লেখ আছে- আবু সাঈদ আল খুদরি বলেছেন: আমি আল্লাহর রসূলের কাছে হাদীস লেখার জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম কিন্তু তিনি অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন।

একারনেই নবীর জীবদ্দশায় বা তার মৃত্যুর পরে ২০০ বৎসর পর্যন্ত হাদীস লিখিত আকারে সংকলিত হয় নি। আজ যারা হাদীসের সমর্থক তারা উপরে বর্নীত হাদীসকে পালন না করে হাদীস লিখে ও প্রচার করে চলেছেন যা হাদীস ও সুন্নাহর পরিপন্থি।

2 comments:

  1. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  2. আপনি বললেন কোরআন যথেষ্ট তাহলে আমার কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিন।।১নং,সূরা বাকারার ৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেনوَأَقِيمُواْ الصَّلاَةَ وَآتُواْ الزَّكَاةَ-তাহলে আপনি এখন কোরআন দিয়ে পাচঁ ওয়াক্ত স্বলাত ও যাকাতের যাবতীয় বিধিবিধান আলোচনা করুন।।

    ২নং,সূরা বাকারার ১৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ,তাহলে এখন আপনি হাদিস ছাড়াই প্রমান করুন সিয়াম কিভাবে শুরু হবে?সাওম অবস্হায় কি কি নিষিদ্ব?

    ৩নং,সূরা আল ইমরানের ৯৭ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-وَلِلّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلاً, এখন আপনি হাদিস ছাড়াই প্রমান করুন কোথা হতে এবং কিভাবে ইহরাম বাধবে?হজ্বের দিনগুলোতে মক্কা,মিনায় ও আরাফায় কি কি কাজ করতে হবে?

    ৪নং,যেহেতু কোরআন-ই যথেষ্ট এবং হাদিস মানা যাবেনা তাহলে আপনি কেনো হাদিসের স্মরনাপন্ন হলেন এটা প্রমান করার জন্য যে হাদিস মানা যাবেনা।।যে হাদিস মানা-ই যাবেনা সে হাদিস দিয়ে প্রমান পেশ করা কতটুকু যুক্তিযুক্ত??

    ৫নং,কোরআনের সূরা আনফালের ১নং আয়াত,সূরা আল হাশরের ৭নং আয়াত,সূরা সূরা নিসার ৫৯নং আয়াতে, সূরা নিসার ৮০নং আয়াতে এবং অসংখ্য আয়াতে যে আল্লাহ তাআলা বারংবার বললেন রাসূলের আনুগত্য করতে এবং রাসূল যা দেয় তা গ্রহন করতে এবং রাসূল যা নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাকতে।।রাসূল (সঃ)এর এ আদেশ নিষেধ কোথাই পাব??

    ৬নং,সূরা আল মায়েদাহর ৩৮ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-وَالسَّارِقُ وَالسَّارِقَةُ فَاقْطَعُواْ أَيْدِيَهُمَا এখন আপনি হাদিস ছাড়াই প্রমান করুন হাত দ্বারা কোন হাত উদ্দ্যেশ্য?কতটুকু পরিমান কব্জি পর্যন্ত,না কনুই পর্যন্ত,না কাধ পর্যন্ত??

    শেষ প্রশ্ন সূরা আল ইমরানের ৯৭ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন- قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ اللّهَ فَاتَّبِعُونِي يُحْبِبْكُمُ اللّهُ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَاللّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ ।।অর্থ্যাৎ-বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাকারী দয়ালু। উক্ত আয়াতে রাসূল (সঃ) এর অনুসরন করতে বলা হয়েছে এখন আপনিই বলুন কিভাবে রাসূল (সঃ) এর অনুসরন করব??

    ReplyDelete