ইসলামে উপাসনার ধারণা অন্যান্য ধর্ম থেকে আলাদা। ইসলাম আমাদেরকে আল্লাহর হুকুম মানতে এবং নামাজ সহ অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় ও রোবটের মতো আচার-অনুষ্ঠান অনুশীলন করার পরিবর্তে অন্যের কল্যাণের জন্য নিয়মিতভাবে চেষ্টা করার আহ্বান জানায়। আমরা বিশ্বের প্রথম মুসলিম নই , সকল নবী এবং তাদের প্রকৃত অনুসারীরাও মুসলিম ছিলেন।
কুরআনের ভুল ব্যাখ্যার মাধ্যমে পার্শি ঈমামরা ইসলামে পৌত্তলিক আচার-অনুষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। অনুগ্রহ করে কুরআনের নিম্নোক্ত ৫:২ আয়াতটি দেখুন , যেখানে আল্লাহ আমাদেরকে বাইত আল-হারামে (কাবা) আচার অনুষ্ঠান এবং পশু কোরবানি করা থেকে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন কিন্তু একই আয়াত ৫:২ এর বিকৃত অনুবাদে আমাদের পণ্ডিতরা সমস্ত আচার এবং পশু কোরবানির অনুমতি দিয়েছেন।
{৫:২ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُحِلُّوا شَعَائِرَ اللَّهِ وَلَا الشَّهْرَ الْحَرَامَ وَلَا الْهَدْيَ وَلَا الْقَلَائِدَ وَلَا آمِّينَ الْبَيْتَ الْحَرَامَ يَبْتَغُونَ فَضْلًا مِّن رَّبِّهِمْ وَرِضْوَانًا ۚ
হে বিশ্বাসীগণ , হালাল কর না (لَا تُحِلُّوا )আল্লাহর জন্য আচার-অনুষ্ঠান (শায়ায়ের) এবং নিষিদ্ধ কাল পাথর (শাহরা আল-হারাম) এবং উপহার/কুরবানির পশু (হাদিয়া)এবং কালায়েদ এবং নিষিদ্ধ ঘরের (বাইত আল-হারাম) রক্ষক/তত্ত্বাবধায়ক হবেন না , তাদের রবের ফজিলত ও সন্তুষ্টির লাভের জন্য।}
لَا تُحِلُّوا মানে- হালাল কর না। অর্থাৎ হারাম জিনিষকে হালাল কর না।
কোনগুলো হারাম?
شَعَائِرَ اللَّهِ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাফেররা যে সকল আচার অনুষ্ঠান বা রিচুয়াল করত তাকে বলা হয় 'শায়ায়ের আল্লাহ'। সাফা মারওয়ার মাঝে হাজিরা যে দৌড়াদৌড়ি করে তা এমনি এক শায়ায়ের। দেখুন ২:১৫৮- إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِن شَعَائِرِ اللَّ নিঃসন্দেহে সাফা ও মারওয়া আল্লাহর শায়ায়ের থেকে। এই ধরনের শায়ায়েরকে হালাল করতে নিষেধ করা হয়েছে এই আয়াতে।
الشَّهْرَ الْحَرَامَ কাফেররা যাকে আমরা কাল পাথর বা হাজরে আসওয়াদ বলে জানি তাকে শাহর বলত ও চুমু খেত , যেমনটি আমাদের হাজি সাহেবরা করে থাকেন। এই একই কালো পাথরটি আয়াত ৭১:২৩ এ উল্লেখ করা হয়েছে , যা একটি কালো পাথর ছিল এবং নবী নূহের এর সময় উপাসনা করা হত। এটিকে সংস্কৃতে শিব বলা হয় এবং সেমেটিক ভাষাগুলোতে যেমন হিব্রু, আরামাইক, সিরিয়ায়িকে 'শাহর' বলা হয়। আরবি কুরআন মজীদে এই কালো পাথরকে শাহর আল- হারাম বলা হয়েছে , যাকে হালাল করতে নিষেধ করা হয়েছে এই আয়াতে।
আল-হারাম মানে নিষিদ্ধ , যা হালালের বিপরিত। কিন্তু ঈমামরা হারামের মানে করেছে পবিত্র। এরই ধারাবাহিকতায় নিষিদ্ধ কাল পাথরকে বানিয়েছে পবিত্র কাল পাথর , আর আলবাইত আল-হারাম/ নিষিদ্ধ ঘরকে বানিয়েছে পবিত্র ঘর/কাবা।
الْهَدْيَ আল হাদিয়া মানে উপহার। কাফেররা উপহার হিসাবে কাবায় বলী দেয়ার জন্য পশু নিয়ে যেত , যাকে হালাল না করতে বলা হয়েছে এই আয়াতে। কোরানে কুরবানি বলে কোন শব্দ না থাকলেও হাজিরা হাদিয়ার নামে কাবায় পশু কুরবানি দেয় পার্শি ঈমামদের নির্দেশে।
الْقَلَائِدَ আল-কালায়েদ ও তাকলিদের মূলে একই আরবি শব্দ , যার মানে- এই আয়াতে কাফেরদের প্যগান রীতিনীতির /রিচুয়ালের অনুসরন না করতে বলা হয়েছে। আরবিয় ডিকশনারি অনুযায়ী কোন ব্যক্তির কথা বিনা প্রমাণে মানার নাম তাকলিদ। এই আয়াতে তাকলিদ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
কোরানে সকল ধরনের রিচুয়াল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের পার্শি ঈমামরা ৫:২ আয়াতের বিকৃত অনুবাদের মাধ্যমে রিচুয়ালকে শুধু হালালই করেননি , এই সকল রিচুয়ালকেই ধর্মের ভিত্তি বানিয়েছে। এগুলোকেই ইবাদত নাম দিয়ে মানুষকে আল্লাহর নির্দেশ তথা কোরানে বর্নীত বিধানগুলো থেকে শুধু দুরে সরিয়েই নেয় নি , কোরান অজ্ঞ করে রেখেছে।
No comments:
Post a Comment