Sunday, September 18, 2022

কে মুসলমান?

 নবী মুহাম্মাদের অনুসারীরাই শুধু  মুসলমান নয়! বরং কোরানের বাণী অনুযায়ী কিছু জ্বীন, ইব্রাহিম, ইয়াকুব, ইসরাঈলের গোত্র, ইউসুফ, ফেরাউনের জাদুকর, ঈসা, নূহ ও লূতের শিষ্য- তারাও প্রকৃত মুসলমান।

 আর যখন ফেরাউন সাগর বিদীর্ণ হতে দেখে সেও মুসলমান হয়ে গেল। ঐতিহাসিকভাবে বলতে গেলে, তাদের কেউই মুহাম্মাদকে অনুসরণ করতে পারেনি। পরিবর্তে, তারা অন্যান্য রসূলদের অনুসরণ করেছিল: উদাহরণ স্বরূপ, শিষ্যরা ঈসাকে অনুসরণ করেছিল এবং ফেরাউনের যাদুকররা মূসাকে অনুসরণ করেছিল। যদি আমরা অনুমান করতে থাকি যে , শাহাদা হল আল-ইসলামের প্রথম স্তম্ভ এবং মুসলমান হওয়ার চূড়ান্ত মাপকাঠি, তাহলে আমাদের এদের সকলকে মুসলমান বলে অস্বীকার করতে হবে। কারন শাহাদা দাবি করে যে , একজনকে অবশ্যই মুহাম্মাদকে আল্লাহর রসূল হিসাবে সাক্ষ্য দিয়ে তাকে অনুসরণ করতে হবে। শুধু যে ফেরাউন মূসাকে অনুসরণ করে আল-ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়েছিল তা নয় , বরং ঈসার শিষ্যরা নবী ঈসাকে অনুসরণ করে আল-ইসলামকে মেনে চলেছিল। আমরা তাদের আল-ইসলামের আনুগত্যকে অস্বীকার করব এই কারণে যে তারা মুহাম্মাদকে অনুসরণ করেনি , তা তো হতে পারে না। সকল প্রাক-ইসলামী নবী, তাদের পরিবার এবং গোত্র, এদের সকলের পক্ষে  মুহাম্মদকে চিনতে পারা সম্ভব ছিল না , কারন এরা সকলেই মুহাম্মদের জন্মের পূর্বেই এই পৃথিবীতে বাস করেছিল। এদের সকলের আল-ইসলামের প্রতি দৃঢ় আনুগত্য কোরানে প্রত্যয়িত। আমরা বলতে পারি না যে  তারা মুসলমান ছিল না , কারণ তারা কখনো রমজান মাসে রোজা রাখেনি এবং কখনো মক্কায় তীর্থযাত্রা করেনি। 


৭২:১৪ আমাদের (জ্বীন) কিছুসংখ্যক মুসলমান ( الْمُسْلِمُونَ )এবং কিছুসংখ্যক অন্যায়কারী। যারা আজ্ঞাবহ হয়, তারা সৎপথ বেছে নিয়েছে।


৩:৫২ অতঃপর ঈসা যখন বণী ইসরায়ীলের কুফরী সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারলেন, তখন বললেন, কারা আছে আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্য করবে? সঙ্গী-সাথীরা বললো, আমরা রয়েছি আল্লাহর পথে সাহায্যকারী। আমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছি। আর তুমি সাক্ষী থাক যে, আমরা মুসলমান (مُسْلِمُونَ)।


৩:৬৭ ইব্রাহীম ইহুদী ছিলেন না এবং নাসারাও ছিলেন না, কিক্তু তিনি ছিলেন ‘হানীফ’  মুসলমান (مُّسْلِمًا), এবং তিনি মুশরিক ছিলেন না।


২:১৩২ এরই ওছিয়ত করেছে ইব্রাহীম তার সন্তানদের এবং ইয়াকুবও যে, হে আমার সন্তানগণ, নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এ ধর্মকে মনোনীত করেছেন। কাজেই তোমরা মুসলমান (مُّسْلِمُونَ ) না হয়ে কখনও মৃত্যুবরণ করো না।


১২:১০১ হে পালনকর্তা আপনি আমাকে (ইউসুফ) রাষ্ট্রক্ষমতাও দান করেছেন এবং আমাকে বিভিন্ন তাৎপর্য সহ ব্যাখ্যা করার বিদ্যা শিখিয়ে দিয়েছেন। হে নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টা, আপনিই আমার কার্যনির্বাহী ইহকাল ও পরকালে। আমাকে মুসলমান (مُسْلِمًا ) হিসাবে মৃত্যুদান করুন এবং আমাকে সৎকর্মীদের সাথে মিলিত করুন।


৭:১২৬ বস্তুতঃ আমাদের সাথে তোমার শত্রুতা তো এ কারণেই যে, আমরা ঈমান এনেছি আমাদের পরওয়ারদেগারের নিদর্শনসমূহের প্রতি যখন তা আমাদের নিকট পৌঁছেছে। হে আমাদের পরওয়ারদেগার আমাদের জন্য ধৈর্য্যের দ্বার খুলে দাও এবং আমাদেরকে (ফেরাউনের জাদুকররা) মুসলমান (مُسْلِمِينَ ) হিসাবে মৃত্যু দান কর।


১০:৯০ আর বনী-ইসরাঈলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী। তারপর তাদের পশ্চাদ্ধাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্দেশে। এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করল, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি যে, কোন মা’বুদ নেই তাঁকে ছাড়া যাঁর উপর ঈমান এনেছে বনী-ইসরাঈলরা। বস্তুতঃ আমিও মুসলমান (الْمُسْلِمِينَ) থেকে।


১০:৭২ তারপরও যদি বিমুখতা অবলম্বন কর, তবে আমি তোমাদের কাছে কোন রকম বিনিময় কামনা করি না। আমার বিনিময় হল আল্লাহর দায়িত্বে। আর আমার প্রতি নির্দেশ রয়েছে যেন আমি (নুহ) মুসলমান (الْمُسْلِمِينَ )হই।


৫১:৩৬ (লুতের কওম) এবং সেখানে একটি গৃহ ব্যতীত কোন মুসলমান (الْمُسْلِمِينَ )আমি পাইনি।

No comments:

Post a Comment